নীতিশ বড়ুয়া, রামু :: কক্সবাজারের রামু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মিলনায়তনে হাম-রুবেলা টিকাদান ক্যাম্পেইন সম্পর্কিত অভিহিতকরণ সভায় বক্তারা বলেছেন, হাম-রুবেলা ভাইরাসজনিত মারাত্মক সংক্রামক রোগ। এ রোগ আক্রান্ত রোগীর হাঁচি-কাশির মাধ্যমে, সংস্পর্শে আসা অন্যদের মধ্যে অতিদ্রুত ছড়ায়। শিশু ছাড়াও যেকোনো বয়সের মানুষের হাম-রুবেলা হতে পারে। শিশুদের মধ্যেই হাম-রুবেলার প্রকোপ, জটিলতা এবং মৃত্যু বেশি দেখা যায়। সঠিক সময়ে শিশুকে হাম-রুবেলার টিকা দিয়ে সুরক্ষিত করতে হবে। রামু উপজেলার ৩৩৭ স্কুলের শিশু শ্রেণী থেকে চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত ৫৬ হাজার ৪৬ জন শিক্ষার্থীকে হাম-রুবেলার টিকা দেয়া হবে। এ ছাড়াও কমিউনিটি ক্লিনিকসহ ২৪৭টি কেন্দ্রের ৩৪ হাজার ৭৪৮জন শিশুকে হাম-রুবেলার টিকা দেয়া হবে। রামু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও ১১ ইউনিয়নে মেডিকেল টিম এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নোবেল কুমার বড়ুয়া’র সার্বক্ষণিক উপস্থিতিতে একটি বিশেষ মোবাইল মেডিকেল টিম ১৮ মার্চ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত রামু উপজেলায় হাম-রুবেলা টিকাদান ক্যাম্পেইনে অংশ নিবে। গতকাল বৃহস্পতিবার (১২ মার্চ) সকাল ১১টায় রামু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত হাম-রুবেলা টিকাদান ক্যাম্পেইন সম্পর্কিত অভিহিতকরণ সভায় এ তথ্য জানান বক্তারা।
রামু উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নোবেল কুমার বড়ুয়া’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় উদ্বোধকের বক্তৃতা করেন, রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রণয় চাকমা। সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন, রামু উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সোহেল সরওয়ার কাজল। অভিহিতকরণ সভায় বিশেষ অতিথি’র বক্তৃতা করেন, রামু থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবুল খায়ের, রামু উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. সালাহ উদ্দিন, রাজারকুল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মুফিজুর রহমান, জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কামাল শামশুদ্দিন আহমেদ প্রিন্স। শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তৃতা করেন, রামু উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সাদিকুর রহমান।
রামু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কম্পিউটার অপারেটর দীপঙ্কর বড়ুয়া ধীমানের সঞ্চালনায় অভিহিতকরণ সভায় বক্তৃতা করেন, ডা. এফাজুল হক, রামু সূর্যের হাসি ক্লিনিক ব্যবস্থাপক খন্দকার দেলোয়ার হোসেন, আমাদের রামু ডটকম সম্পাদক প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু, রামু প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি খালেদ শহীদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন রামু উপজেলার সুপারভাইজার মো. সাইফুদ্দিন খালেদ, রামু কেন্দ্রীয় কালি মন্দিরের পুরোহিত সজল ব্রাহ্মণ চৌধূরী ও ইপিআই মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট মো. আলী আকবর।
রামু উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নোবেল কুমার বড়ুয়া বলেন, রামুতে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে আমরা প্রস্তুত। হাম-রুবেলা টিকা নিয়ে কোন রকম বিভ্রান্ত হওয়ার কারণ নেই। সরকার গুণগত মান নিয়ন্ত্রণ করে হাম-রুবেলা টিকাদান কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। এ টিকা সম্পূর্ণ নিরাপদ। রামুতে একটি শিশুও যদি হাম-রুবেলা টিকা থেকে বাদ পড়ে, তাহলে তার পাশাপাশি অন্য শিশুরাও হাম-রুবেলার ঝুঁকিমুক্ত থাকবে না। তাই আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব রয়েছে সচেতনভাবে সকল শিশুকে হাম-রুবেলা টিকা প্রাপ্তি নিশ্চিত করা।
সভায় ইপিআই টেকনোলজিষ্ট মো. আলী আকবর বলেন, ৯ মাস বয়স থেকে ১০ বছর বয়সী শিশুদের হাম-রুবেলা টিকা দেয়া হবে। ১৮ মার্চ থেকে ২৪ মার্চ পর্যন্ত প্রথম এক সপ্তাহ স্কুল পর্যায়ে শিশু শ্রেণী থেকে চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের এই টিকা প্রদানের আওতায় আনা হয়েছে। রামু উপজেলার ১১ ইউনিয়নের মধ্যে ফতেখাঁরকুল, রাজারকুল, চাকমারকুল ও কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ১৯ মার্চ থেকে টিকাদান ক্যাম্পেইন শুরু করা হবে। রামু উপজেলায় ইপিআই কার্যক্রমে জনবল সংকট রয়েছে, তাই সকলস্তরে সচেতন মানুষের সামাজিক দায়িত্ববোধ থেকে হাম-রুবেলা টিকাদান ক্যাম্পেইনে অংশ নিতে অনুরোধ জানান তিনি।
পাঠকের মতামত: