বিশেষ প্রতিবেদক :: সম্প্রতি করেনাভাইরাস নিয়ে সারাদেশে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার ত্রান বিতরণে কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলার রাজারকুল ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। রাজারকুল ইউনিয়নের এই ওয়োর্ডে আগেও বেশকিছু অনিয়ম নিয়ে মুখ খুলেছেন এলাকাবাসী। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ তহবিলের নগদ একাউন্টের মাধ্যমে ২৫০০/= টাকা করে দেশের প্রান্তিক দিন-মজুর খেটে-খাওয়া মানুষদের জন্য ঘোষণা করা হলেও রাজারকুল ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের এম.ইউ.পি রিটন বড়ুয়া তার স্বজনপ্রীতি দেখিয়ে তার আত্মীয় এবং নিজস্ব সমর্থকদের নাম সে তালিকায় যুক্ত করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ এই তহবিলের টাকা যাতে সঠিক মানুষের কাছে পৌঁছায় সেদিকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গুরুত্ব দিলেও রাজারকুল ইউনিয়নে বেশিরভাগ সহায়তার এই অর্থ পেয়েছে বিত্তবানেরা।
৯নং ওয়ার্ডের এই অর্থ সহায়তার তদারককারী প্রধান শিক্ষক মো: নাছিরের সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, এলাকার মেম্বার চেয়ারম্যান যাদের নাম সাজেস্ট করেছে আমি তাদের তালিকা চূড়ান্ত করে পাঠিয়েছি, এখানে আমার কোন হাত নেই। এনিয়ে রাজারকুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুফিজুর রহমানের সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, এসব অনুদান প্রদানে সাধারণত ওয়ার্ডের প্রতিনিধিরা মানে এম.ইউ.পিরা লিস্ট প্রদান করেন সে অনুসারে ৯নং ওয়ার্ডের লিস্ট রিটন বড়ুয়া প্রদান করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ তহবিলের ২৫০০/= টাকার সহায়তার অনেকের নাম প্রদান করলেও শুধুমাত্র কয়েকজন ছাড়া তেমন কেউই এই সহায়তা পায়নি বলেন তিনি।
তাছাড়া সরকারী বিভিন্ন ত্রান সহায়তা নিয়েও রাজারকুল ইউনিয়ন পরিষদের ৯নং ওয়ার্ডের এম.ইউ.পি রিটন বড়ুয়ার ক্ষমতার আধিপত্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার কয়েকজন সচেতন নাগরিক। একই ওয়ার্ডের ভোটার ও শিক্ষানবীশ আইনজীবী শিপ্ত বড়ুয়া জানান, এলাকায় এখন রমরমা কালো কারবার চলছে, পাশের ৮নং ওয়ার্ডের এম.ইউ.পি শফিউলের বাসা থেকে কিছুদিন আগেও কক্সবাজার র্যাব প্রায় ২০,০০০/= (বিশ হাজার) পিস ইয়াবা উদ্ধার করেছে। শফিউল হক এখন ধৃত, এমন সম্ভাবনা আমাদের ওয়ার্ডেও রয়েছে। তাছাড়া এলাকায় আমি সার্বক্ষণিক থাকি, অনেকেই আমার কাছে অভিযোগ করেছেন, সরকারি এবং বেসরকারি অনুদানের সহায়তা তাদেরকেই দেওয়া হচ্ছে যারা তার অন্ধ সমর্থক। তাছাড়া এসব নিয়ে মুখ খুললেও রয়েছে বিপদের আশংকা। তাঁর অনিয়ম বলে শেষ করা যাবে না, এমন চলতে থাকলে এলাকার মানুষ জনপ্রতিনিধিদের উপর আস্থা হারাতে পারেন।
সম্প্রতি ইউনিয়ন পর্যায়ে বিশ্ব খাদ্য সংস্থা ( ডাব্লিও. এফ. পি)’র অনুদান নিয়েও ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ৯নং ওয়ার্ডের এম.ইউ.পির বিরুদ্ধে। এলাকায় স্বচ্ছল এবং মেম্বারের আত্মীয় স্বজনদেরকে কেবল এই সংস্থার অধীন ৬০কেজি চাল এবং এক কার্টুন করে বিস্কুট ত্রান তালিকায় নাম দেওয়া হয়েছে এবং তারা এই সহায়তা পেয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৯নং ওয়ার্ডের এক ভোটার বলেন, আমরা এখন রাবণের রাজ্যে বসবাস করছি। সরকারি-বেসরকারি অনুদান মিলে প্রায় সব অনুদান বারবার স্বচ্ছল এবং রিটন বড়ুয়ার আত্মীয়দের দেওয়া হচ্ছে, চেয়ারম্যানকে এনিয়ে অভিযোগ করলেও তিনি ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন। প্রতিবাদ করার শক্তিটুকুও আমরা হারাচ্ছি দিন দিন, কারণ রামুর বৌদ্ধ সুরক্ষা পরিষদের নেতা হিসেবে তিনি নিজেকে জাহির করেন সবসময়। কোন কথা বললেও হুমকিতে রাখেন সবাইকে।
সারাদেশে এম.ইউ.পিদের এমন অসদাচরণে গরীব-অসহায় মানুষরা তাদের ন্যায্য পাওনা পাচ্ছে না, করোনার এমন দুর্যোগে প্রধানমন্ত্রীর কড়া হুশিয়ারী থাকার পরও এই ধরনের অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতি কারো কাম্য নয় ।
পাঠকের মতামত: