সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ::
যৌন হয়রানি নির্মূলকরণে সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৫ এপ্রিল সকালে জেলা নির্বাচন অফিস সম্মেলন কক্ষে সভাটির আয়োজন করে ব্র্যাকের জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটি কর্মসূচির মেয়েদের জন্য নিরাপদ নাগরিকত্ব (মেজনিন)। সভার মূল উদ্দেশ্য ছিল যৌন হয়রানি বিষয়ে সাংবাদিকদের সংবেদনশীলতা জোরদার করা এবং যৌন হয়রানি নির্মূলকরণে সাংবাদিকদের কার্যকর ভূমিকা চিহ্নিত করা।
মত বিনিময় সভায় আলোচকবৃন্দ দৃঢ়তার সাথে বলেন, ইভটিজিং স্পষ্টতই যৌন হয়রানি। এর মাধ্যমে নারীর মৌলিক মানবাধিকার যেমন-চলাফেরার অধিকার, শিক্ষার অধিকার সর্বোপরি বেঁচে থাকার অধিকার ক্ষুণœ হয় যা সংবিধানের ২৮(২) অনুচ্ছেদের পরিপন্থী।
যৌন হয়রানি নিমর্ূূলকরণ জেলা নেটওর্য়াকের আহবায়ক প্রবীন সাংবাদিক ফজলুল কাদের চৌধুরী সভাপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন জেলা ব্র্যাক প্রতিনিধি অজিত নন্দী। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রবীণ সাংবাদিক প্রিয়তোষ পাল পিন্টু ও মমতাজ উদ্দিন বাহারী।
মতবিনিময় সভায় মেজনিন কর্মসূচির সার্বিক কার্যক্রম ও সফলতা তুলে ধরেন কর্মসূচির সিনিয়র সেক্টর স্পেশালিস্ট ঝর্না দাস । তিনি উল্লেখ করেন, গণমাধ্যমের ইতিবাচক ভূমিকার ফলে গণজাগরণ তৈরি হচ্ছে এবং যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে ক্যাম্পেইন/প্রচারাভিযান জোরদার হচ্ছে। কিন্তু অনেক সময় অসংবেদনশীল সংবাদের মাধ্যমে নারী সম্পর্কিত প্রথাগত ধারণাকে উপস্থাপন করা হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে প্রতিবেদনে নির্যাতনের শিকার নারীর নাম ও ছবি না থাকলেও ঘটনা বর্ণনায় বিস্তারিত ঠিকানা দেয়া হয় এবং নেতিবাচকভাবে ঘটনা উপস্থাপনের ফলে ভিকটিমের ব্যক্তিগত ও সামাজিক সম্মান ক্ষুণœ হয়। সাংবাদিকদের প্রতিবেদনে নারী অধিকার ও সম্মান সমুন্নত থাকে এমন শব্দ ব্যবহার করা, নারী নির্যাতন সংক্রান্ত ফলোআপ রিপোর্টিং করা, নাগরিক সাংবাদিকতার মাধ্যমে নির্যাতনের ঘটনা ও যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে সামাজিক ও ব্যক্তিগত উদ্যোগসমূহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় তুলে ধরার আহ্বান জানান।
যৌন হয়রানি নির্মূলকরণে সম্মিলিত সামাজিক আন্দেলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে মিডিয়ার ভূমিকা ও করনীয় শীর্ষক আলোচনা পরিচালনা করেন সিনিয়র সেক্টর স্পেশালিস্ট রুবেল দাশ।
সভায় উপস্থিত সকলে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। আলোচনায় যে বিষয়গুলো উঠে আসে, পরিবার থেকেই ছেলে মেয়েদের নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে। যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও প্রতিকারে যার যার অবস্থান থেকে উদ্যোগ নিয়ে সকলে মিলে সম্মিলিত উদ্যোগ গড়ে তুলবেন। তারা অরো অঙ্গীকার করেন যে, তারা নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে যে সব এলাকায় যৌন হয়রানি সংঘটিত হয় সে এলাকা গুলো চিহ্নিত করে যৌন হয়রানি মুক্ত করতে কাজ করবেন।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাকের মেজনিন কর্মসূচির সেক্টর স্পেশালিষ্ট মোহাম্মদ সিরাজুম মুনীর এবং মানব সম্পদ কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন এবং বিভাগীয় আইনজীবি মোহাম্মদ সালাউদ্দিন।
পাঠকের মতামত: