ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪

যানজটে নাকাল কক্সবাজার

কক্সবাজার প্রতিনিধি :: টমটম জটে কাবু হয়ে পড়েছে পর্যটন নগরী কক্সবাজার। পৌর এলাকার মুল সড়ক দিয়ে চলাফেরা কঠিন হয়ে পড়েছে। একদিকে ভাঙ্গা-চোরা সড়ক, অপরদিকে তীব্র যানজটে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। শহরে হঠাৎ এত টমটমের উপস্থিতিতে বিষ্ময় প্রকাশ করেছেন শহরবাসী। পর্যটন নগরী হিসেবে পরিকল্পিতভাবে সবকিছু হওয়ার কথা থাকলেও শহরে বের হলে মনে হয় একেবারে অপরিকল্পিত কক্সবাজার। যার মধ্যে অন্যতম শহর জুড়ে তীব্র যানজট। তবে ইতোমধ্যে এত টমটম কিভাবে শহরে প্রবেশ করল তা নিয়েও হতবাক সাধারণ মানুষ।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, শহরে লাইসেন্সধারী টমটমের শুরুতে ১ হাজার, তা পর্যায়ক্রমে ২৫০০ হাজার পর্যন্ত গড়ায়। লাইসেন্সধারী রিক্সার সংখ্যা ৩৫০০ হলেও পর্যায়ক্রমে আরো বেড়েছে। এছাড়াও রয়েছে মাহিন্দ্র, সিএনজি ও বিভিন্ন মালবাহী গাড়ী। তবে বর্তমানে প্রায় ৫ হাজারের অধিক টমটম ও প্রায় ৭ হাজার রিক্সা কক্সবাজার শহরে চলাচল করছে।

কক্স লাইন পরিবহনে কর্মরত বাবুল বড়ুয়া জানান, স¤প্রতি ট্রাফিক পুলিশে ব্যাপক রদবদল হয়েছে। নতুন আগতরা সবকিছু বুঝে উঠতে পারেনি। এ সুযোগে পৌর এলাকার বাইরের অসংখ্য টমটম শহরে প্রবেশ করেছে। ইতোমধ্যে কক্সবাজারে পর্যটকের সংখ্যাও বেড়েছে। তাই পুরো শহরই এখন টমটমের দখলে চলে গেছে। শহরে টমটম বেড়ে যাওয়ায় মহাসড়কে টমটম অনেক কমেছে।

কক্সবাজার সিটি কলেজের ছাত্রী উম্মে নওরিন সীমা জানান, কলেজে গিয়ে নতুন বাহারছড়া বাসায় ফিরতে দুই ঘন্টা সময় লেগেছে। এমন যানজট কখনো দেখেননি জানিয়ে বলেন, প্রধান সড়কে এক স্থানে অন্তত ১ ঘন্টা টমটমের উপর বসে থাকতে হয়েছে। টমটম চালক যানজট এড়িয়ে বিভিন্ন গলি দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও পারেনি। সবখানেই জট লেগেই আছে।

গতকাল ১৫ অক্টোবর সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকে দুপুর আবার বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত শহরের বাজারঘাটা, লালদিঘীর পাড়, ভোলা বাবুর পেট্রোল পাম্প, বার্মিজ মার্কেট, বৌদ্ধ মন্দির সড়ক, হাসপাতাল সড়ক ও বড় বাজার এলাকায় যানজট লেগেই থাকে। মাঝে মধ্যে কালুর দোকান ও পিটি স্কুল এলাকায়ও যানজটের কবলে পড়ে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয় সাধারণ মানুষকে। এতে করে যেমন করে মানুষ কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে, ঠিক তেমনি ব্যঘাত ঘটছে মানুষের নিত্য নৈমত্তিক কর্মকান্ডে। শহরের কলাতলীতেও তীব্র যানজটে অতিষ্ট পর্যটকরা।

শহরের গাড়ির মাঠ এলাকার বৃদ্ধ রফিক উদ্দিন যানজট প্রসঙ্গে চকরিয়া নিউজকে বলেন, ছোট্ট এই শহরে চাহিদার চেয়ে অতিরিক্ত টমটম আর রিকশা সংখ্যা বেড়ে গেছে। তার সাথে যোগ হয়েছে সিএনজি, মাহিন্দ্রাসহ বিভিন্ন প্রকার যানবাহনের চলাচলের সংখ্যা। ফলে যানজটের মাত্রা তীব্র আকার ধারণ করেছে।

তিনি বলেন, রিকশা আর টমটমের শহরে পা ফেলা অনেকটা দুষ্কর হয়ে পড়েছে। শহরের লালদিঘীর পাড় থেকে বার্মিজ মার্কেট পর্যন্ত এক কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে ২/৩ ঘণ্টা সময় লেগে যায়। যানজটের মূল কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে-লাইসেন্সধারী ও লাইসেন্স বিহীন রিকশা ও টমটমের ছড়াছড়ি।

কক্সবাজার ট্রাফিক পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী শাহবুদ্দিন আহমেদ বলেন, যানজট নিরসনে কাজ করছেন নবাগতরা। ট্রাফিক পুলিশ পর্যটন শহরকে যানজটমুক্ত রাখতে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহন করবে। ট্রাফিক বিভাগের সকল সদস্য সজাগ রয়েছে। অচিরেই সব সমস্যার সমাধান হবে।

পাঠকের মতামত: