মহান বিজয় দিবস আমাদের বাঙ্গালী জাতিসত্তার এক অনন্যদিন। কেননা দিনটি মনে করিয়ে দিয়েছে ৪৫ বছর আগের এক গৌরবোজ্জ্বল দিনের বীরত্বগাথা। ফলে এই দিনটি আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ তাৎপর্য বহন করে।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র সংগ্রামের পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আসে চূড়ান্ত বিজয়। সেদিন শীতের বিকেলে রমনার রেসকোর্স ময়দানে (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) দাম্ভিক পাকিস্তানি সেনারা যে অস্ত্র দিয়ে নির্বিচারে গুলি চালিয়েছিল বাঙালির বুকে, হত্যা করেছিল ৩০ লাখ বাঙালিকে, সেই অস্ত্র পায়ের কাছে নামিয়ে রেখে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে ছিল মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর নেতাদের সামনে। বর্বর পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে সেদিন রচিত হয়েছিল বাঙালি জাতির এই গৌরবের ইতিহাস। আর ওই মুহূর্তের মধ্য দিয়েই বিশ্ব মানচিত্রে লাল-সবুজের পতাকা নিয়ে স্বাধীন ভূখণ্ড হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিল বাংলাদেশ।
শুক্রবার ১৬ ডিসেম্বর বিকেলে শহরের একটি হোটেলে সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন মহান বিজয় দিবসের তাৎপর্য শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
কক্সবাজার সাংবাদিক কোষ প্রণেতা ও কক্সবাজার সাংবাদিক সংসদ (সিএসএস) এর সভাপতি আজাদ মনসুর’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন, জয়বাংলা বাহিনীর কক্সবাজার জেলা প্রচার সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা এম. খোরশেদুল ইসলাম চৌধুরী। আজিুজুল হক রুবেল’র কুরআন তেলাওয়াতের মধ্যদিয়ে শুরু হওয়া আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর, কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইকবালুর রশিদ আমিন (সোহেল)।
সাংবাদিক মাহবুবুর রহমান’র স্বাগত বক্তব্যের মধ্যদিয়ে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে বক্তারা আরও বলেন, স্বাধীনতার রূপকার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী নেতাদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ, কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করা দরকার আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ও সমভ্রম হারানো মা-বোনদের। কিন্তু আজকে বিজয়ের ৪৫ বছর পরও এই দেশকে স্বাধীন করতে যারা অকাতরে নিজের জীবনকে উৎসর্গ করছিলেন সেসব মুক্তিযোদ্ধাদের এখনও আমরা পরিপূর্ণ মর্যাদা দিতে পারিনি। সর্বোপরি বক্তারা সাম্প্রতিক সময়ে মায়ানমারে মুসলিম শরনার্থীদের নির্বিচারে অত্যাচার ও হত্যার নিন্দা জানান এবং মানবাধিকার কর্মীদের ব্যানার ও প্রেসরিলিজ নির্ভর না হয়ে স্ব স্ব অবস্থান থেকে সমাজের নির্যাতিত ও অধিকার বঞ্চিতদের একজন করে দায়িত্ব নেয়ার আহবান জানানো হয়।
বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগি, সমাজসেবক মহি উদ্দিন চৌধুরী, সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজারের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক হিমছড়ির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হাসানুর রশিদ, বাঁকখালী বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি ও সিটিএন সম্পাদক ও প্রকাশক সরওয়ার সাঈদ, বাংলাদেশ নদী পরিব্রাজক কক্সবাজার জেলা শাখার সভাপতি এড. আবুহেনা মোস্তফা কামাল। সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, লেখক সোসাইটির সভাপতি নুরুল আমিন হেলালী, শিক্ষক আতাহার বিন ইব্রাহিম, সমাজ সেবক শওকত আলম, ব্যবসায়ী মুজিবুর রহমান কায়েস, সাংবাদিক মোহাম্মদ হোছাইন, শিক্ষক শামশুল আলম শ্রাবণ প্রমূখ। পরে সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে শীতার্থদের মাঝে শীত বস্ত্র বিতরণের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, কক্সবাজার ভিশন’র সম্পাদক সাংবাদিক আনছার হোসেন, নাদেরুজ্জামান হাই স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিন, মোঃ ইলিয়াছ মিয়া, রেজাউল আলম চৌধুরী, রফিক উল্লাহ বাবুল, রহমতুল্লাহ বাহাদুর, মোঃ শওকত মিয়া, আইন কলেজের শিক্ষার্থী যথাক্রমে, রিফাত জাহান, উম্মে ইসলাম রুমায়েন, নূর-ই-জাহান, শিক্ষানবিশ এড. তাজমিন হুদা চৌধুরী, সাজ্জাদ হোসেন, মোহাম্মদ ইসলাম, মাহামুদুল হক, নুর মোহাম্মদ, আজিজুল হক রুবেল, মোঃ জয়নাল আবেদীন, তারিক বিন রশীদ, মোঃ নাজমুল হাসান, মোঃ রাসেদ, সিএসবি. কমের সম্পাদক পলাশ বড়–য়া, জাহাঙ্গীর আলমসহ জেলার বিভিন্ন পেশাজীবী শ্রেণীর নের্তৃবৃন্দ।
পাঠকের মতামত: