ঢাকা,শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

মিয়ানমারকে ‘ইয়াবা কারখানার তালিকা দিল’ পুলিশ

IGP-Shahidulঅনলাইন ডেস্ক :

মিয়ানমারের পুলিশ প্রধানের কাছে সে দেশে ইয়াবা তৈরির কারখানার তালিকা দেওয়া হয়েছে বলে একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

দক্ষিণ এশিয়া ও এর প্রতিবেশী দেশগুলোর পুলিশ প্রধানদের তিন দিনের সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার পুলিশ প্রধানের দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে এই তালিকা হস্তান্তর করা হয় বলে ওই কর্মকর্তা জানান।

বাংলাদেশসহ ১৫টি দেশের পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও ইন্টারপোলসহ কয়েকটি সংস্থার অংশগ্রহণে রোববার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে তিন দিনব্যাপী এই সম্মেলন শুরু হয়।

১৪টি সেশনে এই সাজানো এই সম্মেলনে আফগানিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, ভুটান, ব্রুনাই, চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মালদ্বীপ, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, নেপাল, দক্ষিণ কোরিয়া, শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম ছাড়াও ইন্টারপোল, ফেইসবুকসহ ছয়টি সংস্থা অংশ নেয়।

সম্মেলনের ফাঁকে মিয়ানমার, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও ব্রুনাইয়ের পুলিশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা হয় বাংলাদেশ পুলিশের।

সোমবার সকালে মিয়ানমারের পুলিশ প্রধানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা হয় বাংলাদেশ পুলিশ প্রধানের।

এ বিষয়ে মঙ্গলবার আইজিপি এ কেএম শহীদুল হক বলেন, “মিয়ানমারের সঙ্গে আমরা দ্বিপক্ষীয় আলোচনা করতেই পারছিলাম না। মিয়ানমারের পুলিশ প্রধান কখনও আসে না। তাই ‘আইস ব্রেকিংটা’ হচ্ছিল না।

“মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের ‘আইস ব্রেকিং’ হয়েছে। মাদক ও মানবপাচার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।”

মিয়ানমার পুলিশের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাইও সি উইনসহ দুজন কর্মকর্তা সম্মেলনে অংশ নেন।

তাদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে পুলিশ সদরদপ্তরের একজন কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা মিয়ানমার কর্তৃপক্ষকে তাদের দেশের ১৩টি ইয়াবা তৈরির কারখানার তালিকা দিয়েছি। এছাড়া আরও তালিকা আমাদের হাতে রয়েছে, যা পরবর্তীতে তাদের দেব।”

মিয়ানমার পুলিশ প্রধান এসব কারখানার বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

বিভিন্ন দেশের পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় দ্রুত অপরাধী হস্তান্তরের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে পুলিশ প্রধান শহীদুল হক জানান।

তিনি বলেন, “আমার দেশের কোনো সন্ত্রাসী যদি অন্য দেশে অবস্থান করে এবং তাকে চিহ্নিত করলে ওই দেশের পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করবে। আমাদের সাথে যোগাযোগ করে তাকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হস্তান্তর করার কথা হয়েছে।

“যাদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা হয়েছে তারা সবাই রাজি হয়েছে, এভাবে দ্রুত অপরাধীদের হস্তান্তরে। আমরা মনে করছি- এটাই সবচেয়ে ভালো পন্থা এবং সেটা আমরা করব।”

পুলিশ সদরদপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) মো. মনিরুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, জঙ্গিবাদ, নারী ও শিশু নির্যাতন, ধর্মীয় উগ্রপন্থা বা ধর্মীয় উসকানি সম্পর্কিত পোস্টগুলো মুছে ফেলা বা তা রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ফেইসবুক কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে।

সোমবার বিকালে ফেইসবুকের মহাসচিব ইউরগন স্টকের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় এই বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়।

এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে আইজিপি বলেন, “ফেইসবুকে যেভাবে জঙ্গিবাদের প্রোপাগান্ডা করে, জঙ্গিবাদকে ছড়িয়ে দেয় এবং সাম্প্রদায়িক উসকানি দেয়, গুজব ছড়ায়- সেসব কথা ফেইসবুক কর্তৃপক্ষকে বলেছি।

“কীভাবে তাদের সাহায্য নিয়ে এগুলো বন্ধ করা যায় বা আমাদের দেশে যাতে এগুলো না ঢুকে তা তাদের (ফেইসবুক কর্তৃপক্ষ) বলেছি।”

ফেইসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বাংলাদেশ পুলিশ একটি সমঝোতা স্মারক সই করতে চেয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ফেইসবুক কর্তৃপক্ষ কোনো দেশের সঙ্গে এমওইউ করে না বলে জানিয়েছে। এটা তাদের নীতিমালার সঙ্গে যায় না।

“তারা আমাদের একটি ‘ফোকাল পয়েন্ট’ নিয়োগ করতে বলেছেন। এ ধরনের ইস্যুগুলো যখন আসবে সরাসরি যোগাযোগ করলে সেটা তারা করবে বলে জানিয়েছে।”

ফেইসবুকে অ্যাকাউন্ট খুলতে আইডি কার্ড বা পাসপোর্ট দরকার- এমন প্রস্তাব তাদের দেওয়া হয়েছে জানিয়ে পুলিশ প্রধান বলেন, বিষয়টি তারা দেখবে বলে জানিয়েছে।

তিন দিনের আলোচনায় বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফেরত আনার বিষয়েও আলোচনা হয়।

সমাপনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বক্তব্য দেন।-বিডিনিউজ

পাঠকের মতামত: