চকরিয়া উপজেলার হারবাংয়ের আলীপুরস্থ নিজ বাড়ি থেকে ৩৭৫ পিস্ ইয়াবা বডিসহ রওশন আরাকে আটক করে পুলিশ।
এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::
বাঁধা দেয়ার পরও মরণনেশা ইয়াবা ব্যবসা অব্যাহত রাখার কারনে অনেকটা বাধ্য হয়ে গর্ভধারিণী মা রওশন আরা বেগমকে (৪২) পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন ছেলে মোহাম্মদ সাহেব। ঘটনাটি ঘটেছে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার হারবাং ইউনিয়নে। বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশের একটিদল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ইউনিয়নের আলীপুর এলাকার নিকটস্থ পাহাড়ি এলাকা থেকে পারভেজ নামের এক ইয়াবা কারবারীকে আটক করে। পরে তার স্বীকারোক্তি নিয়ে রওশন আরাকে তার বাড়ি থেকে ৩৭৫ পিস ইয়াবা বড়িসহ আটক করে পুলিশ।
আটক রওশন আরা উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডস্থ আলীপুর এলাকার মৃত হাবিব উল্লাহর স্ত্রী। রওশন আরা দীর্ঘদিন ধরে আটক ইয়াবা কারবারী পারভেজের সহযোগি হিসেবে ব্যবসা করতো।
স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, হারবাং ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামের হাবিব উল্লাহ ও রওশন আরা দম্পত্তির সংসারে রয়েছে দুই সন্তান। বড় ছেলে মোহাম্মদ সাহেব ম্যাজিক গাড়ির চালক। বড় ছেলের আয়ে সুখেই চলছিল তাদের সংসার। কিন্তু গত ৭-৮মাস আগে রওশন আরার সঙ্গে পরিচয় হয় স্থানীয় যুবক ম্যাজিক চালক পারভেজের।
স্থানীয়দের মতে, পারভেজ গাড়ি চালানোর আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা করে আসছে। পারভেজ টাকার লোভ দেখিয়ে রওশন আরাকে দিয়ে এলাকায় খুচরা পদ্ধতিতে ইয়াবার কারবার শুরু করে। ঘটনাটি বড়ছেলে মোহাম্মদ সাহেব জানতে পেরে মাকে (রওশন আরা) বকাঝকা করে এবং বেশ ক’বার বাঁধাও দেন। কিন্তু তাতেও রওশন আরা ব্যবসা বন্ধ না করায় ছেলে ঘটনাটি অবহিত করে স্থানীয় ইউপি মেম্বারের কাছে বিচার দেয়। অভিযোগ উঠেছে, ইয়াবা কারবারী পারভেজ বিভিন্ন কৌশলে ইউপি মেম্বারের কাছে থাকা সেই বিচার বন্ধ করে রাখে। ফলে অপ্রতিরোধ্যভাবে চলতে থাকে তাদের ইয়াবা ব্যবসা।
প্রতিবেশি লোকজন জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে পারভেজের ইয়াবার কিছু চালান আসে রওশন আরা হাতে। বিষয়টি ছেলে সাহেব জানতে পেরে কৌশলে ইয়াবাগুলো সরিয়ে ফেলে। ইয়াবার সরনোর ঘটনাটি জানতে পেরে ইয়াবা কারবারী পারভেজের লোকজন ওইদিন রাত ৮টার দিকে তাকে (সাহেব) ধরে নিয়ে বাড়ির অদুরে একটি পাহাড়ে নিয়ে মারধর করে।
হারবাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মিরানুল ইসলাম বলেন, এলাকার লোকজনের কাছ থেকে ঘটনাটি জানতে পেরে স্থানীয় মেম্বার ও পরিষদের চৌকিদার নিয়ে ওই পাহাড়ে গিয়ে আহত অবস্থায় সাহেবকে উদ্ধার করি। এসময় ইয়াবা কারবারী পারভেজকেও আটক করে রাখি।
চেয়ারম্যান বলেন, পরে ঘটনাটি চকরিয়া থানার ওসি বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী ও হারবাং পুলিশ ফাঁড়ির আইসি তোফাজ্জল হোসেনকে জানালে তারা পুলিশ ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পারভেজকে আটক করে ফাঁড়িতে নিয়ে যায়।
হারবাং পুলিশ ফাঁড়ির আইসি (পুলিশ পরিদর্শক) মো.তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানের কাছ থেকে খবর পেয়ে ওসি স্যারসহ পুলিশ ফোর্স নিয়ে পাহাড়ে গিয়ে পারভেজকে আটক করি। পরে তার স্বীকারোক্তি নিয়ে রওশন আরাকে তার বাড়ি থেকে ৩৭৫ পিস ইয়াবা বড়িসহ আটক করা হয়।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ইয়াবা বডি উদ্ধারের ঘটনায় আটককৃত রওশন আরা ও পারভেজকে আসামি করে গতকাল শুক্রবার চকরিয়া থানায় মাদকদ্রব্য আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা রের্কড করা হয়েছে। এদিন দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। #
পাঠকের মতামত: