চকরিয়া সংবাদদাতা :
চকরিয়া উপজেলার উপকূলীয় ইউনিয়ন পূর্ব বড় ভেওলার বেতুয়া বাজারে ১০হাজার পিচ ইয়াবা নিয়ে জনগণের হাতে আটক অপরিচিতা মহিলাটিকে মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে রাতের অন্ধকারে ছেড়ে দিয়েছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনা ঘটে গত ১৯ জুন (সোমবার), অনুমান বিকাল ৫টার দিকে।
এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক ব্যক্তি জানান , মেয়েটির বাড়ী উখিয়া উপজেলার ট্যাংখালীতে । তবে বেতুয়া বাজারে ১০হাজার পিচ ইয়াবাসহ পেয়ে মেয়েটিকে নয়াচর গ্রামের মো: আলীর পুত্র হাসান মিস্ত্রির সহযোগিতায় আটক করা হয়। পরে জনগণের মাঝে হৈ-চৈ এর সৃষ্টি হয়। তবে মেয়েটিকে মুহুর্তের মধ্যে সাহাব উদ্দীনের পুত্র মুবিন নিয়ে যায় । পরে জানা যায় ইয়াবা পাঁচারকারী মেয়েটিকে ওয়ার্ডের নাছির উদ্দীন মেম্বারের বাড়ীতে নিয়ে যাওয়া হয় । ইয়াবা পাঁচারকারী মেয়েটিকে সন্ধ্যা ৫টার সময় আটক করা হলেও রাত অনুমান সাড়ে ৭টার সময় অপরিচিতা মেয়েটিকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগে করেন এলাকাবাসী ।
নাছির উদ্দীন মেম্বারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘটনার সময় আমি বেতুয়া বাজারেই ছিলাম খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে দেখি কোন ছেলেটি মেয়েটিকে লোকজনের কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে কোথাও যেন চলে গেছে। পরে আমি জনগণের সহযোগিতায় অনেক খোঁজাখুজি করে তাদের কোন সন্ধান না পেয়ে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মাতামুহুরী পুলিশফাঁড়ীর আইসিকে অবগত করে আমি নিজেই বাড়তি ঝামেলা আর না নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে আমার ব্যক্তিগত কাজে চলে যাই। পরে কি হয়েছে এ বিষয়ে আমি আর কিছ্ইু অবগত নই ।
সি.এন.জি চালক পুতুর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করিলে তিনি বলেন আমি চকরিয়া ষ্টেশনের পাইলট স্কুলের ত্রিমূখী পথে বেতুয়া বাজার গাড়ী ষ্টেশনে দাড়িয়ে আমার গাড়ীতে যাত্রী উঠাচ্ছিলাম। হঠাৎ এসময় হাসান মিস্ত্রি আমার গাড়ীতে হিসেবে উঠে। পরে মুবিনচর নামক এলাকায় আসতে আসতে সে আমার গাড়ী থেকে তার ফলোকৃত অন্য এক সি.এনজি গাড়ীতে লাফ দিয়ে ঐ গাড়ীতে পার হয়ে যায়। পরে আমিও বেতুয়া বাজারের ষ্টেশনে গিয়ে আমার গাড়ীতে বহনকারী যাত্রীদেরকে নামাইয়া দিয়ে আবারও চকরিয়া আসার সিরিয়ালের গাড়ীর নাম্বারটি উঠায়। এমতাবস্থায় হাসান, মুবিন ও ২ মহিলা হঠাৎ কোথায় থেকে এসে আমার গাড়ীতে উঠে । হাসান ও মুবিন বলেন আমাদেরকে নাছির মেম্বারের বাড়ীকে নিয়ে যায়। আমি তাদের গন্তব্য স্থলে পৌঁছে দিয়ে চলে আসি। পরেে এ বিষয় সম্পর্কে আমি আর কিছুই অবগত নয় বলে জানান এ সি.এন.জি চালক।
হাছান মিস্ত্রির সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি ইয়াবা পাচারকারী মেয়েটিকে বেতুয়া বাজারে জনগণের সামনে আটক করলেও এলাকার প্রভাবশালী মুবিন ছেলেটি এসে আমার কাছ থেকে মেয়েটিকে কেড়ে নিয়ে যায়। তবে এইটুকু জানি মেয়েটিকে নাছির উদ্দীন মেম্বারের হাতে তুলে দেওয়া হয় । পরে মেম্বার এ অপরিচিতা ইয়াবা ব্যবসায়ী মহিলাটিকে পুলিশের হাতে সোপর্দ্দ করবে বলেও জানান তিনি।
মাতামুহুরী পুলিশফাঁড়ীর আই.সি মো: ইউনুছের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, নাছির উদ্দীন মেম্বার গত ১৯ জুন বিকাল অনুমান ৫টার সময় আমাকে আধা ঘন্টার মধ্যে ৩বার ফোন করে জিজ্ঞাসা করেছে আমি কোথায়। প্রতি উত্তরে আমি তাকে জানায়, আমি অফিসের কাজে চকরিয়া থানায় এসেছি। এত তাড়াহুড়া করে ফোন করার মানে কি বিষয় জানতে চাইলে মেম্বার বলেন, এলাকায় থাকলে বলতাম বলে মুঠোফোনের লাইন কেটে দিল। এর পর আর যোগাযোগ করেনি।
এলাকার সচেতন মহল জানান , মেয়েটিকে পুলিশে দেবে বলে কেন ছেড়ে দিল এটা রহস্যজনক । মেম্বারও ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত থাকতে পারে। উপযুক্ত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে হস্তক্ষেপ কামনা করেন এলাকার সচেতন মহলে।
পাঠকের মতামত: