অনলাইন ডেস্ক :
সীমান্তে সামরিক শক্তি বৃদ্ধির পক্ষে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরে মিয়ানমার জানিয়েছে, বাংলাদেশ নয়, নিজেদের নিরাপত্তা সুরক্ষা নিশ্চিত করতেই তারা অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করেছে। মিয়ানমারের দাবি, জঙ্গি হামলার আশঙ্কায় বাংলাদেশ সীমান্তে নতুন করে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে । শুক্রবার মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র জ হতে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে এ কথা বলেন।
এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুই দেশের নিয়ন্ত্রণরেখায় অবস্থান নেওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানুষদের নিশানা করে চলতি সপ্তাহে মিয়ানমার সেনাসমাবেশ বাড়িয়েছে। বাংলাদেশ যত দ্রুত সম্ভব মিয়ানমারকে সেনা প্রত্যাহার করতে বলেছে। সেনা মোতায়েনের ঘটনায় দুই দেশের সীমান্তে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনা মিয়ানমারে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়টিকে বিলম্বিত করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গত বছরের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রায় ৭ লাখ মানুষ। তারা কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পালিয়ে আসা বাংলাদেশ-মিয়ানমার প্রত্যাবাসন চুক্তি সম্পন্ন হলেও তা কার্যকরের বিষয়টি এখনও প্রক্রিয়াধীন। এদিকে এখনও বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় থাকা ৬৫০০ মানুষ দু’দেশের মধ্যবর্তী নো-ম্যানস ল্যান্ড তমব্রুতে অবস্থান করছে। দেশ থেকে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিতাড়নে এ ঘটনা ঘটানো হচ্ছে বলে মিয়ানমারকে দোষারোপ করছে জাতিসংঘ। এ ধরনের অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে মিয়ানমার।
হঠাৎ করে সীমান্তে সেনা শক্তি বাড়ানোর বিষয়ে জ হতে দাবি করেন, জঙ্গিদের তৎপরতা সম্পর্কে গোয়েন্দা তথ্য পাওয়ার কারণেই এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তার দাবি, বিশেষ করে রোহিঙ্গা জঙ্গিগোষ্ঠী আরসার (আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি) নতুন তৎপরতা সম্পর্কে তথ্য পাওয়া গেছে। সেনা মোতায়েনের লক্ষ্য বাংলাদেশ নয়।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ ঘটনায় ঢাকায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে ‘দ্রুত ওই এলাকা থেকে সামরিক উপকরণসহ সেনাদের সরিয়ে নিতে’ বলা হয়েছে। গত কয়েক সপ্তাহে নিয়ন্ত্রণরেখায় আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের সেনাদের চাপের মধ্য রয়েছে। মাইকিং করে রোহিঙ্গাদের তারা নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে চলে যেতে বলেছে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও রোহিঙ্গাদের দেওয়া তথ্য অনুসারে, গতকাল নিয়ন্ত্রণরেখার আশপাশে নতুন করে মিয়ানমারের আরও ১০০ সেনা ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে টহল দেওয়া শুরু করেছে।
পাঠকের মতামত: