ঢাকা,রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪

বদরখালী সেতুতে টোল আদায়ের নামে টোকেন বিহীন অতিরিক্ত টাকা নেয়ার অভিযোগ

এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::

চকরিয়া-বদরখালী-মহেশখালী সড়কে রাহাত কনস্ট্রাকসন নামের একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বদরখালী সেতুতে যানবাহন পারাপারে টোকেন বিহীন অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠানটি ইজারা মেয়াদ শেষ হলেও কক্সবাজার সড়ক বিভাগের নির্দেশে অলিখিতভাবে চলছে টোল আদায়ের নামে চাঁদাবাজির উৎসব। বুধবার ইট বোঝাই একপি পিকআপ মহেশখালী থেকে ফেরার পথে অতিরিক্ত টোল আদায়ের ঘটনায় প্রতিবাদ করতে গিয়ে সেতুতে দায়িত্বরত কর্মী ও বহিরাগত সন্ত্রাসীদের হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন ওই পিকআপ চালক। হামলার ও মারধরের শিকার পরিবহন শ্রমিকের নাম মোহাম্মদ ওসমান। তিনি চকরিয়া উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের জাকের হোছাইনের ছেলে।

আহত পিকআপ চালক মোহাম্মদ ওসমান জানান, বদরখালী সেতু হয়ে আগে পন্যবাহি তাঁর দুইটন ওজনের গাড়িটি পারাপারে টোকেনের মাধ্যমে টোল দিতে হতো যেতে ৭৫ টাকা ও আসতে ৭৫ হাজার। কিন্তু বুধবার (৯ মে) তিনি ইট বোঝাই করে পিকআপ গাড়ি নিয়ে মহেশখালী যান। ইট আনলোড শেষে ফেরার পথে টোল দিতে গিয়ে সংশ্লিষ্টরা তাঁর কাছে দাবি করেন যেতে ১৫০ টাকা ও আসতে ১৫০ টাকা। তাও কোন ধরণের টোকেন দিতে রাজি নন সেতুতে দায়িত্বরতরা। ওইসময় তিনি প্রতিবাদ করলে তাঁর সঙ্গে তর্কাতর্কি শুরু করেন সংশ্লিষ্টরা। এক পর্যায়ে সেতুর কর্মরত কর্মী ও তাদের অনুগত বহিরাগত সন্ত্রাসীরা এসে তার উপর হামলা চালায়। ঘটনার সময় তাকে বেধম মারধর করা হয়।

আক্রান্ত পিকআপ গাড়িটির মালিক চকরিয়া উপজেলার পুর্ববড় ভেওলা ইউনিয়নের বাসিন্দা সৈয়দ মঈন উদ্দিন হাসান জানান, বদরখালী সেতুতে যানবাহন পারাপারে সরকারিভাবে টোল আদায়ের তালিকা রয়েছে। কিন্তু টোল আদায়ে বর্তমানে নিয়োজিতরা তা অমান্য করে অনেকটা চাঁদাবাজি স্টাইলে অতিরিক্ত টোল আদায় করছে। তাদের এসব অপকর্মে প্রতিবাদ করতে গেলে হামলা করা হচ্ছে শ্রমিকদের উপর। তিনি জানান, অতিরিক্ত টাকা না দেয়ায় তাঁর পিকআপ চালককে মারধরের ঘটনায় তিনি মামলার প্রস্ততি নিচ্ছেন।

স্থানীয় পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা অভিযোগ করেছেন, বদরখালী সেতুর ইজারা আদায়ে ইতোমধ্যে রাহাত কনস্ট্রাকসন নামের ওই প্রতিষ্ঠানের মেয়াদ শেষ হয়েছে। তাঁরা কক্সবাজার সড়ক বিভাগের মাধ্যমে বর্তমানে টোল আদায়ের অনুমতি নিয়ে যানবাহন পারাপারে টোকেন বিহীন বেপরোয়া চাঁদাবাজি শুরু করেছে। অতিরিক্ত টাকা নেয়া হলেও গাড়ি চালককে টোকেন দিচ্ছেনা। কিন্তু সরকারি বিভিন্ন সংস্থার তদন্ত থেকে বাঁচতে তাঁরা নিজেদের অনুকুলে নেয়া টাকার অর্ধেক হারে টোকেন কেটে তা গচ্ছিত রাখছেন।

পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা দাবি করেছেন, বর্তমানে সেতুর টোল আদায়ে জড়িতরা যানবাহন মালিক ও শ্রমিকদেরকে জিন্মি করে প্রতিদিন ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা টোল আদায়ের নামে অতিরিক্ত চাঁদা তুলছেন। তাদের অব্যাহত চাঁদাবাজিতে শ্রমিকরা অতিষ্ট হয়ে পড়েছেন।

জানতে চাইলে কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রানাপ্রিয় বড়–য়া গতকাল রাতে মুঠোফোনে বলেন, বদরখালী সেতুর টোল আদায়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান রাহাত কনস্ট্রাকসনের ইজারা মেয়াদ শেষ হয়েছে। তবে তাদেরকে পুন: ইজারা চুড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত আগের নিয়মে টোল আদায়ের জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, কোন পরিবহন থেকে কত পরিমাণ টোল আদায় করবে এই ধরণের তালিকা দেয়া আছে। তালিকার বাইরে অতিরিক্ত টাকা দেয়ার ও নেয়ার কোন সুযোগ নেই। যদি তাঁরা সরকারি নিয়মের বাইরে অতিরিক্ত টাকা আদায় করে থাকে এ সংক্রান্ত লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাঠকের মতামত: