এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::
চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে দিনদুপুরে হামলা চালিয়ে ছিনতাই ঘটনা নিয়ে তোলপাড় চলছে। গত রোববার ক্যাশ কাউন্টার থেকে লক্ষাধিক টাকা ছিনতাই হয়েছে বলে দাবী করে পার্ক ইজারাদার। তবে পার্কের দায়িত্বরত ট্যুরিস্ট পুলিশ সেইদিন টিকিট কাউন্টারে কোন ধরনের ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেছেন। এমনকি এ ধরণের ঘটনায় অধ্যবদি তাদের কাছে ইজারাদার পক্ষ অভিযোগও দেয়নি বলে নিশ্চিত করেছেন ট্যুরিস্ট পুলিশের পরিদর্শক সুনীল কুমার ঘোষ। ট্যুরিস্ট পুলিশের এ ধরণের বক্তব্যের পর এবার বেরিয়ে এসেছে আসল থলের বিড়াল। জনসম্মুখে অবশেষে ফাঁস হয়ে পড়েছে ইজারাদার পক্ষের ছিনতাই নাটক।
সরেজমিনে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, সেইদিন ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক কাউন্টারে ছিনতাইয়ের কোন ঘটনা তারা শুনেননি। ইজারাদারের লোকজনের মাঝে তর্ক-বিতর্ক হয়েছে বলে জানায় তারা। ঘটনার দিন রোববার দুপুর দু’টার দিকে কাউন্টারের লোকজন ২৪ হাজার টাকা ছিনতাইয়ের কথা স্থানীয় সংবাদ কর্মীদের জানায়। তবে ইজারাদার রামু উপজেলার বাসিন্দা মোঃ রফিক মুঠোফোনে কথা হলে তিনি ছিনতাইকৃত টাকার পরিমাণ এক লক্ষ চব্বিশ হাজার পাঁচশ টাকা বলে দাবী করে। রহস্যময় ঘটনায় বিভ্রান্তিতে রয়েছে সাধারণ লোকজন।
জানা গেছে, সরকারি নির্দেশনা মতে প্রতি মঙ্গলবার সাফারি পার্ক বন্ধ থাকার নিয়ম রয়েছে। এ নিয়ম ভঙ্গ করে ইজারাদার চলতিবছরের গত ১৯ জুন তারিখে পার্কের কাউন্টার খুলে দশর্নাথীদের কাছে টিকেট বিক্রি করছিলেন। এ নিয়ে ওইদিন সাফারি কর্তৃপক্ষ বন্ধের বিষয়টি জানিয়ে পার্কে দর্শনার্থী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিলেও অনেকটা প্রভাব বিস্তার করে সেইদিন ইজারাদারপক্ষ। এরই জেরে সংর্ঘষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে।
এ ঘটনায় সাফারি পার্কের রেঞ্জ কর্মকর্তা মোরশেদুল আলম বাদি হয়ে চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি মামলাও করেন ইজারাদার পক্ষের বিরুদ্ধে। মামলাটিতে ইজারাদার পক্ষের সাথে স্থানীয় উলুবনিয়া গ্রামের নুর হোসেনের পুত্র সজিবসহ কয়েকজনকে আসামি করা হয়।
স্থানীয় সুত্রে অভিযোগ পাওয়া গেছে, ঘটনার পর মামলাটি পরিচালনায় আসামী সজিব গংদেরকে কোনপ্রকার সহযোগিতা করছিলেন না ইজারাদারপক্ষ। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বনিবনা চলছিল। অপরদিকে সাফারি পার্ক টিকেট কাউন্টার ইজারার মেয়াদ চলতি মাসের ৩১ তারিখ শেষ হচ্ছে। এরই জেরে মামলা সংক্রান্ত কথা বলতে ঘটনারদিন রোববার ইজারাদার পক্ষের লোক সজিব গং তাদের সাথে দেখা করেন। এসময় উভয়ের কথাবার্তার একপর্যায়ে বিতর্কের রূপ নেয়।
স্থানীয়দের অভিমত ইজারাদার নিজেদের মামলার বিষয়ে সহযোগিতার পরিবর্তে উল্টো ঘায়েল করতে হামলা ও টাকা ছিনতাইয়ের অজুহাত সৃষ্টি করেছে। এ ব্যাপারে পার্কের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ট্যুরিস্ট পুলিশের পরিদর্শক সুনীল কুমার ঘোষ জানিয়েছেন, পার্কের টিকিট কাউন্টারে এ ধরনের কিছু হয়ে থাকে, তাহলে নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণেই ঘটতে পারে। এরপরও সংশ্লিষ্টদের লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি। কিন্তু তারা অভিযোগও দিচ্ছে না।
পাঠকের মতামত: