ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

প্রধানমন্ত্রীর কাছে করোনায় খাদ্য বিতরণে নৈরাজ্য ঠেকাতে আওয়ামীলীগ নেতার আবেদন

এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া :: করোনা ভাইরাস সংক্রমণ সময়ে প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে জীবিকা হারানো শ্রমজীবি মানুষের জন্য সরকারিভাবে খাদ্য সহায়তা কর্মসুচি চালু করা হয়েছে। দেশের প্রতিটি অঞ্চলে বর্তমানে খাদ্য সংকটে থাকা মানুষের মাঝে জেলা, উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে এসব খাদ্য সহায়তা বিতরণ করা হচ্ছে। আশার কথা হলো বিতরণ কার্যক্রমে বেশিরভাগ অঞ্চলে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হলেও কিছু কিছু এলাকায় বিতরণের ক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্যের ঘটনা ঘটছে। এতে প্রকৃত কর্মহীন সাধারণ মানুষ সরকারি প্রণোদনা কর্মসুচির সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এই অবস্থায় খাদ্য সহায়তা বিতরণে নৈরাজ্য প্রতিরোধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে একটি আবেদন তুলে ধরেছেন চকরিয়া উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের বাসিন্দা মাতামুহুরী সাংগঠনিক উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা নুরে হাবিব তছলিম।

বদরখালীর বরণ্য ব্যক্তিত্ব প্রয়াত আওয়ামীলীগ নেতা চেয়ারম্যান আবদুল হান্নান বিএ’র বড়ছেলে আওয়ামীলীগ নেতা নুরে হাবিব তছলিম বলেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ সময়ে নানা প্রতিকুল পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশের প্রতিটি সেক্টরে অর্থনৈতিক মন্দাভাব দেখা দেবে, জীবিকা হারানোর কারণে শ্রমজীবি সর্বসাধারণের মাঝে খাদ্য সংকট তৈরী হবে, এসব বিষয় আগে থেকে উপলব্দি করেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কন্যা বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের অভিভাবক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেইজন্য তিনি ইতোমধ্যে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষন দিয়ে করোনা সংক্রমণ সময়ে দেশবাসির দুর্যোগ দুর্দিনে পাশে থাকার অঙ্গিকার করেছেন।

প্রণোদনা হিসেবে তাঁর সরকারের তরফ থেকে প্রতিটি সেক্টরের জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থবরাদ্দ নিশ্চিতের ঘোষনা দিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি করোনা সংক্রমণে দেশের সর্বসাধারণের সুরক্ষা নিশ্চিতে সকল সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল, চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারী সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে জনগনের কল্যাণে কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। দুর্যোগমুর্হুতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অসাধারণ নির্দেশনা ও এই উদ্যোগ দেশের ক্রান্তিলগ্নে উত্তোরণের পথপ্রদর্শক হিসেবে ১৮ কোটি মানুষ সাধুবাদ জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আবেদন জানিয়ে আওয়ামীলীগ নেতা নুরে হাবিব তছলিম বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি করোনা সংক্রমণের এই দুর্যোগ মুর্হুতে দেশবাসির সুরক্ষা নিশ্চিতে যেমন বদ্ধপরিকর, তেমনি প্রতিটি কর্মহীন পরিবারের খাদ্য সংকট নিরশনে খাদ্য সহায়তা কর্মসুচি চালু করেছেন। কিন্তু কতিপয় কিছু ব্যক্তির অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে বিভিন্ন স্থানে খাদ্য সহায়তা বিতরণে একধরণের বিশৃঙ্খলা তৈরী হয়েছে। যার কারণে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে।

সরকারের ভাবমূর্তি যাতে অদুর ভবিষ্যতে ক্ষুন্ন না হয় সেইজন্য আওয়ামীলীগ নেতা নুরে হাবিব তছলিম প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি আবেদন আকারে প্রস্তাব পেশ করেছেন। তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশে ১৮ কোটি জনসাধারণ থাকলেও ভোটার আছে ১০ কোটির কাছাকাছি। তারমধ্যে ২ কোটির বেশি মানুষ আছেন সরকারি চাকুরীজীবি। অবশিষ্ট থাকেন ৮ কোটি মানুষ। খাদ্য সংকটের এই মুর্হুতে আগামীতে এই ধরণের খাদ্য সহায়তা বিতরণ না করে অনিয়ম অব্যবস্থাপনা প্রতিরোধকল্পে ৮ কোটি ভোটার বা জনগনের মাঝে (প্রতিজনকে ১০ হাজার টাকা করে) নগদ অর্থ সহায়তা দেয়া যেতে। প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের বাংলাদেশের পাশবর্তী দেশ পাকিস্তানে ইতোমধ্যে সেদেশের সরকার প্রতিটি নাগরিককে দুর্যোগমুর্হুতে সহায়তা হিসেবে ১২ হাজার রুপি করে দিয়েছেন। আপনার সফল ও সুদক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নতশীল দেশের কাতারে।

আপনি চাইলে যততত্র খাদ্য সহায়তা বিতরণ না করে বাংলাদেশের ৮ কোটি ভোটার বা নাগরিকের হাতে নগদ সহায়তা হিসেবে ১০ হাজার টাকা করে দিতে পারেন। বলা বাহুল্য একটি পরিবারে তিনজন বা চারজন ভোটার আছে, ওই পরিবারের চারজন ১০ হাজার টাকা করে সহায়তা পেলে ৪০ হাজার টাকা হবে, আবার তিন ভোটারের পরিবার পাবে ৩০ হাজার টাকা। এভাবে একটি পরিবার ৪০ হাজার অথবা ৩০ হাজার টাকা অর্থসহায়তা পেলে তাদের পরিবার অনায়সে দুই থেকে তিনমাস চলতে পারবে। আর তাতে দেশের একটি পরিবারও এই দুর্দিনে অনাহারে থাকবেনা।

আওয়ামীলীগ নেতা নুরে হাবিব তছলিম বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০২০ সালকে আপনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ তথা মুজিববর্ষ ঘোষনা করেছেন। আপনি চাইলে জাতির এই দুর্দিনে প্রতিটি ভোটার পরিবারের হাতে নগদ অর্থসহায়তা দিয়ে একটি নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করতে পারবেন। ইতিবাচক এই কার্যক্রমটি বাস্তবায়নে আপনার সরকারের জন্য মাত্র দুইদিনের সময় প্রয়োজন হবে। কারণ প্রতিটি ভোটার বা জনগনের নিবন্ধন নির্বাচন কমিশনে সংরক্ষিত আছে। সর্বোপুরি বলবো, খাদ্য সহায়তা বিতরণে আপনার সরকারের ভাবমূর্তি যাতে কেউ ভুলন্ডিত করতে না পারে সেইজন্য প্রনোদণা কর্মসুচির আওতায় প্রতি ভোটার পরিবারের মাঝে নগদ অর্থ সহায়তা বিতরণের উদ্যোগ নেবেন। এতে দেশবাসি এই দুর্যোগমুর্হুতে উপকৃত হবে। সরকারের প্রতিটি ভালো কাজের সুফল জনগনের সন্নিকটে পৌঁছবে। পরিশেষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পরম করুনাময় আল্লাহ পাকের দরবারে আমার পরিবারের পক্ষথেকে আপনার সুস্বাস্থ্য কামনা ও আপনার সরকারের সফলতা করছি। #

পাঠকের মতামত: