পেকুয়ায় দুর্গত এলাকার জন্য ১৩ মে.টন খাদ্য শস্য বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। ঘুর্নিঝড় ‘মোরা’র আঘাতে উপজেলার উপকুলবর্তী তিন ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে। অপর চার ইউনিয়নও বাড়ি ঘর, গাছ পালা, বৈদ্যুতিক খুঁটি, শিক্ষা প্রতিষ্টান বিধ্বস্থ হয়েছে। এদিকে ঘুর্নিঝড় মোরা’র পুর্বাভাসে হাজার হাজার মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছিল। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এসব আশ্রয় কেন্দ্রে সরকারের প্রদত্ত কোন খাদ্য সামগ্রী আশ্রিত লোকজনের মাঝে বিলি করা হয়নি। সারা দেশে দুর্যোগকালীন সময়ে মোরা’র পুর্বাভাসে আশ্রয় নেয়া মানুষদের সেহেরীর জন্য রান্না ভাত বিলি করা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে সেহেরী ও শুকনো খাবার মজুদ নিশ্চিত করা হয়েছে। কিন্তু পেকুয়া উপজেলায় সাত ইউনিয়নের কোন সাইক্লোন শেল্টার ও আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে বিতরনের চিত্র দেখা যায়নি। অভিযোগ উঠেছে ঘুর্নিঝড় ‘মোরা’র পুর্বাভাস ও পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের অবহেলা ছিল সবচেয়ে বেশি। উপজেলার মগনামা, উজানটিয়া, রাজাখালী ও সদর ইউনিয়নের কোন আশ্রয় কেন্দ্রে সেহেরী ও শুকনো খাবার বিতরন করা হয়নি। উপজেলা প্রশাসন সুত্রে জানা গেছে ঘুর্নিঝড় মোরার আক্রান্ত এলাকা সমুহ পেকুয়ার জন্য জরুরী ভিত্তিতে সরকারের ত্রান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রনালয় ১৩ মে.টন খাদ্য শস্য বরাদ্দ দেয়। উজানটিয়া, মগনামা ও রাজাখালী ইউনিয়নের জন্য তিন টন করে বরাদ্ধ দেয়। অপর চারটি ইউনিয়নের জন্য এক টন করে চার টন বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। দুর্গত এলাকার জন্য সরকারের তরফ থেকে শিশু বান্ধব খাদ্য ও শুকনো খাবার সরবরাহ দেয়া হয়েছে। মোরার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর মধ্যে সরকারের বরাদ্ধের দ্রুত সরবরাহ জোরদার হচ্ছে বলে জনপ্রতিনিধিরা এ প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেছেন। এদিকে পেকুয়ায় এ পর্যন্ত তিন শতাধিক বাড়িঘর বিধ্বস্থ হয়েছে বলে জানা গেছে। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় এক হাজার বাড়িঘর। শিক্ষা প্রতিষ্টান আংশিক বিধ্বস্থ হয়েছে বিপুল। কয়েক হাজার গাছ উপড়ে গেছে। বাতাসের প্রচন্ড আঘাতে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙ্গে গেছে ৫০টিরও অধিক। গত তিন দিন ধরে পেকুয়ায় বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। নিহত হয়েছে একজন। উজানটিয়া ইউনিয়নের পেকুয়ার চর এলাকার আজিজুর রহমানের ছেলে আব্দুল হাকিম (৫৫) আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার সময় বাতাসের তোড়ে ধাক্কা খেয়ে গোদারপাড় এলাকায় ঘটনাস্থলে প্রান হারান। এদিকে গতকাল বুধবার বিকেলে নিহত আব্দুল হাকিমের বাড়িতে যান চকরিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাফর আলম। এ সময় তিনি নিহত পরিবারের সদস্যদের নগদ অর্থ সহায়তা দেন। মগনামা ইউপির চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিম বলেন আমার ইউনিয়নের জন্য তিন টন খাদ্য শস্য বরাদ্ধ দিয়েছেন। তবে এখনো পাইনি। আমি ব্যক্তিগত উদ্যেগে আশ্রিতদরে খিচুড়ি ও মিঠা পানি সরবরাহ দিয়েছি। রাজাখালী ইউপির সদস্য নেজাম উদ্দিন নেজু জানায় আমার তিনটি ওয়ার্ড়ের জন্য ৪০কেজি মুড়ি ও স্বল্প পরিমান গুঁড় পেয়েছি। উজানটিয়া ইউপির চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম চৌধুরী জানায় আমার ইউনিয়নে খাদ্য শস্য বরাদ্ধ পেয়েছি। শিশুদের জন্য খাদ্য সরবরাহ দিয়েছি। ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে। তালিকা প্রস্তুত করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। পেকুয়া সদর ইউপির চেয়ারম্যান বাহাদুর শাহ জানায় শুকনো খাবারের বরাদ্ধ দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু দেয়নি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব উল আলম জানায় সেহেরীর জন্য চাল বরাদ্ধ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু খাদ্য গুদাম চকরিয়া হওয়াতে সরবরাহ দিতে দেরি হয়েছে। যার কারনে আমরা রান্না খাবার দিতে পারিনি। স্ব-স্ব ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল।
……………………………………
পেকুয়ায় ‘মোরা’র ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে চকরিয়া উপজেলা পরিষষদ চেয়ারম্যান
পেকুয়া প্রতিনিধি :::
পেকুয়ায় ‘মোরা’র ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন চকরিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আ’লীগ নেতা জাফর আলম এমএ। গতকাল বুধবার বিকেলে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এ সময় ঘুর্নিঝড় মোরার প্রচন্ড বাতাসের ধাক্কায় নিহত উজানটিয়া ইউনিয়নের পেকুয়ার চর এলাকার আব্দুল হাকিমের বাড়িতে যান তিনি। শোকার্ত পরিবারকে তিনি নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করেছেন। নিহতের পরিবারের খোঁজ খবর নিতে ওইদিন তিনি তার বাড়িতে যান। এ সময় তাকে দেখতে পেয়ে নিহতের স্বজনরা আবেগ আপ্লুত হন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আ’লীগ সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) শাহনেওয়াজ চৌং বিটু, সাধারন সম্পাদক আবুল কাসেম, উজানটিয়া ইউপির চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম চৌধুরী, প্যানেল চেয়ারম্যান শাহ-জামাল, ইউপি সদস্য ওসমান গনি, যুবলীগ নেতা সাংবাদিক নাজিম উদ্দিন, সাংবাদিক জালাল উদ্দিন, সাংবাদিক মুহাম্মদ হাসেম, ছাত্রলীগ নেতা আমিনুর রশিদ, শওকত, ফয়সাল, সাংবাদিক শাহ-জামাল প্রমুখ।
পাঠকের মতামত: