পেকুয়ায় সংঘর্ষের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলা
পেকুয়া প্রতিনিধি ::
পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের ফুলতলা ষ্টেশনে সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা ও পাল্টা মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। গত ৫ জুন আফজলিয়াপাড়া এলাকার আমিনুল হকের ছেলে আবদুল করিম বাদি হয়ে ১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় যুবদল নেতা খালেদ মোশারফ, তার ভাতিজা ছাত্রদল ক্যাডার আরমানকেও আসামি করে। একইভাবে ওই মামলায় আসামি হয়েছেন আ’লীগ নেতা আনোয়ারুল আজিম চৌধুরী বাবুল। গত ৩ ও ৪ জুন ফুলতলা ষ্ঠেশনে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে আফজলিয়াপাড়াসহ উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন। পৃথক ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। গত ৪ জুন আনোয়ারুল আজিম চৌধুরী বাবুল বাদি হয়ে একটি মামলা রেকর্ড করেছে। পরদিন ৫ জুন আবদুল করিম বাদি হয়ে পৃথক মামলা রেকর্ড করেছে। এ মামলায় প্রথম মামলায় বাদি আনোয়ারুল আজিম চৌধুরী বাবুলকে প্রধান আসামী করা হয়েছে।
…………………………..
পেকুয়ায় সেই ‘বেনসন বাবুল’ আ’লীগের কে?
পেকুয়া প্রতিনিধি ::
পেকুয়ায় সেই বেনসন বাবুল আ’লীগের কে? এলাকায় বাবুল চৌধুরী হিসেবে চিনে তাকে সবাই। নাম তার আনোয়ারুল আজিম চৌধুরী বাবুল। যাকে এলাকাবাসী বেনসন বাবুল হিসেবে তাকে চিনে ও জানে। কথায় কথায় মামলার হুমকি। আবার তার কথার মধ্যে শপথ থাকে বেশি। সম্প্রতি চাঞ্চল্যকর সংঘর্ষের ঘটনায় তিনি একটি মামলার বাদি। গত চারদিন আগে মগনামা ইউনিয়নের ফুলতলা ষ্টেশনে পাউবোর স্লুইচ গেইটের আধিপত্য নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষ ত্রি গ্রামবাসির মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। এতে বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন। সংঘর্ষ হয়েছে বিএনপির দুগ্রুপের মধ্যে। মামলার বাদি হয়েছেন বাবুল চৌধুরী। সংঘর্ষের ঘটনায় বাবুল ক্ষতিগ্রস্ত কোন পক্ষ নন। তাছাড়া আ’লীগ ও বিএনপির মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়নি। এরপরেও মামলার বাদি বেনসন বাবুল চৌধুরী। পেকুয়া থানায় গত ৪ জুন ওই মামলা রেকর্ড হয়। মামলায় আসামী করা হয়েছে ২৯ জনকে। এর মধ্যে ৭জন আসামী ক্ষমতাসীন দল আ’লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। এদের অধিকাংশ মূলদল আ’লীগ ও সহযোগি সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মী। চেয়ারম্যান ওয়াসিমকে ১ নং আসামী করা হয়েছে। অপর আসামীরা মগনামা ইউনিয়নের ১১টি গ্রামের বাসিন্দা। সংঘর্ষ হয়েছে উত্তরমগনামার ফুলতলা ষ্টেশনে নিকট তিনটি গ্রামের মধ্যে। কিন্তু আসামী হয়েছে দক্ষিণ মগনামার কালারপাড়া, কোদাল্লাদিয়া, বেদেরবিলপাড়া, চান্দারপাড়া, মধ্য মগনামার মহুরীপাড়া,পশ্চিমকুল, সিকদারপাড়া, নুইন্নারপাড়া, করলিয়াপাড়া, পূর্ব মগনামার বাজারপাড়ার লোকজনকে। স্থানীয়রা জানান, ঘটনার সাথে এ সব পাড়ার কোন লোকজনের সম্পৃক্ততা নেই। অথচ অহেতুক দায়েরকৃত মামলায় তাদের আসামি করা হয়েছে। মগনামা ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা হারুনমাতবরপাড়া এলাকার ওলামিয়ার ছেলে নাজেম উদ্দিন এ মামলায় জেলে গেছেন। ওইদিন ফুলতলা ষ্টেশন থেকে বাবুল চৌধুরী যুবদল নেতা খালেদ মোশারফ নাজুকে পুলিশে ধরিয়ে দেয়। মামলায় আফজলিয়াপাড়ায় সতের জন আসামী হয়েছে। এদের ৫ জন ওই পাড়ায় আ’লীগের কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। বাবুল চৌধুরীর মামলায় আসামি হয়েছে মুহুরীপাড়া এলাকার সাঁচি মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ কাসিম। ওই ব্যক্তি ইউনিয়ন আ’লীগের বর্তমান কমিটির প্রভাবশালী একজন নেতা। বাবুল চৌধুরীকে এলাকার মানুষ অনেক আগে থেকে প্রত্যাখ্যান করেছে। তিনি এক সময় মগনামা ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি ছিলেন। ক্ষমতার অপব্যবহারে লিপ্ত থেকে এলাকায় চাঁদাবাজি সহ অপতৎপরতায় লিপ্ত থাকায় তার সময়ে আ’লীগ সবচেয়ে বেশী কলুষিত হয়েছে মগনামায়। ফলে তাকে মানুষ আর নেতা হিসেবে দেখতে চাইনি। মুখে আ’লীগ কলপে বিএনপি। রাতে বিএনপি দিনে আ’লীগ এ হল তার চরিত্র। বিএনপির ক্ষমতার সময়ে আ’লীগের সাইনবোর্ড ছিল তার বাড়ির সামনে। কিন্তু রাতে আড্ডা জমাত তার বাড়িতে বিএনপির নেতারা। কথায় কথায় শপথ আর মিথ্যা ফুলঝুরি এ হল বাবুল চৌধুরী। এলাকায় জনবিচ্ছিন্ন ও গণধিকৃত একজন ব্যক্তি তিনি বাবুল চৌধুরী। এক সময় মেম্বার পদে নির্বাচন করেছেন। ভোট পেয়েছিলেন অর্ধশত। জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। যে কোন নির্বাচন আসলে আ’লীগের প্রার্থীকে পরাজিত করার নীলনকঁশার ছক তৈরী হয় ওই নেতার মাধ্যমে। ডাল নেই, তলোয়ার নেই নিধিরাম সর্দার এ চৌধুরী। ব্যাঙওয়াল ঘোনাসহ বিপুল এলাকায় লবণ পানি থেকে বিশ বছর ধরে ট্যাক্স আদায় করছেন ওই নেতা। এক তার বাড়ির সামনে চৌকি দিয়ে সড়কে লবণ ও বিভিন্ন পন্যবাহী গাড়ী থামিয়ে আদায় করা হত চাঁদা। প্রতিবছর মালেক শাহ হুজুরের ওরসের সময়ে গাড়ী থেকে টাকা আদায় করেন বাবুল চৌধুরী। এলাকায় আরেকটি নাম তার মামলাবাজ বাবুল হিসেবে সবাই চিনে। মামলা কন্টাকে নিয়ে বাদী হন ওই চৌধুরী। তবে সম্প্রতি দায়েরকৃত মামলায় ধরা খেলেন এ চৌধুরী। নিরীহ মানুষকে আসামি করায় চরম অসন্তোষ ও তুপের মুখে পড়েছেন মামলাবাজ এ চৌধুরী। এ ব্যাপারে মুহুরীপাড়া এলাকার মোহাম্মদ কাসিম প্রকাশ কালু জানায়, আসলে বাবুল চৌধুরী বিএনপি জামায়াতের একজন গুপ্তচর। তার কাজ হচ্ছে চাঁদাবাজি ও মামলাবাজি করা। এ মামলায় আ’লীগের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে।
……………………………
ঝড়ে চুরমার করল ঘেরাবেড়া ভাংচুরের অভিযোগ থানায়
পেকুয়া প্রতিনিধি ::
পেকুয়ায় প্রচন্ড বাতাসের বেগে চুরমার হল বসতবাড়ির ঘেরাবেড়া। ঘুর্নিঝড় ‘মোরা’র আঘাতে ঘেরাবেড়াসহ লন্ডভন্ড হয়ে যায় বসতবাড়ি ও গাছপালা। এদিকে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে একটি মামলাবাজ চক্র ঝড়ে বিধ্বস্থ ঘেরাবেড়া একটি ভাংচুর কওে এমন অভিযোগ এনে পেকুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পেকুয়া থানা পুলিশ ওই স্থান পরিদর্শন করেছেন। তবে পুলিশের আচরনে মর্মহত ও হতবাক হয়েছেন একটি নিরীহ পক্ষ। এনিয়ে এলাকায় অভিযোগের ছড়াছড়ি চলছে। বাদি একজন নারী। মানব পাচারের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ এনে এলাকাবাসি তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের নতুনঘোনা এলাকায় দু’পক্ষের মধ্যে বিরোধের সুত্রপাত হয়েছে। স্থানীয়রা জানায় নতুনঘোনা এলাকার আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী আয়েশা খাতুন সম্প্রতি পেকুয়া থানায় ঘেরাবেড়া ভাংচুরের একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। প্রতিবেশি মৃত সবির আহমদের ছেলে আবু বক্কর ছিদ্দিকী গংদের বিরুদ্ধে অভিযোগটি দেয়া হয়েছে। ঘেরা বেড়া চুরমার হয়েছে ঘুর্নিঝড়ে। কিন্তু প্রতিপক্ষতে ফাঁসাতে নেয়া হয়েছে মিথ্যার আশ্রয়। অভিযোগ উঠেছে আয়েশা খাতুন মানব পাচারের সাথে জড়িত। স্থানীয়রা জানায় ওই মহিলার মাধ্যমে সমুদ্র পথে শত শত মানুষ মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে পাড়ি দিয়েছে। থানায় অহরহ অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। আবু বক্কর ছিদ্দিকীর সাথে তার পুর্ব থেকে বিরোধ ছিল। এনিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে একাধিক মামলা মোকাদ্দমা চলছে। এলাকাবাসিরা জানায় আবু বক্কর ছিদ্দিকী রাজাখালী ইউনিয়ন ৯নং ওর্য়াড় আ’লীগের সাধারন সম্পাদক। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ কমিটির একই ওয়ার্ড়ের সভাপতি। কমিউিনিটি পুলিশিং একই ওয়ার্ড়ের সেক্রেটারীও তিনি। ভাংচুরের বিষয়ে পুলিশ এলাকায় পরিদর্শনে যান। পুলিশের ভুমিকা ও আচরন ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। আবু বক্কর ছিদ্দিকী জানায় বাতাসে ভেঙ্গে গেছে ঘেরা বেড়া। আয়েশা খাতুন এ ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রভাবিত করতে থানায় দিয়েছে ভাংচুরের অভিযোগ। আমিসহ আমার ছেলে পেকুয়া জিএমসি’র ৭ম শ্রেনীর ছাত্র মোশারফ রহমান ছিদ্দিকীকেও অভিযুক্ত করেছে। আয়েশা একজন মানব পাচারকারী। এ সর্ম্পকিত বিষয়ে তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ থানায় আছে। তার সাথে আমাদের পুর্ব থেকে বিরোধ আছে। পুলিশ মুঠোফোনে ও সরাসরি এসে আমার সাথে চরম অন্যায় আচরন করেছে। এক প্রকার ধমক দিয়ে বলেন শালার পুত পিঠের চামড়া তুলে ফেলব। কোন শালা হাত দেবে। বিষয়টি আমি ইউনিয়ন আ’লীগ সভাপতি-সাধারন সম্পাদককে জানিয়েছি। রাজাখালী ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারন সম্পাদক আবুল কাসেম আজাদ জানায় আবু বক্কর শান্ত স্বভাবের মানুষ। ওই মহিলা একজন মামলাবাজ ও মানব পাচারের সাথে জড়িত। তারা এ ধরনের মিথ্যা মামলা ও অভিযোগ দিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের হয়রানি করছে। পুলিশের এ ধরনের আচরন অবশ্যই দুঃখ জনক।
………………………………
পেকুয়ায় সংঘর্ষে শিক্ষার্থীসহ আহত-৯
পেকুয়া প্রতিনিধি ::
পেকুয়ায় বসতভিটার বিরোধ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের চার শিক্ষার্থীসহ অন্তত ৯জন আহত হয়েছে। খবর পেয়ে পেকুয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পুলিশ ছৈয়দ আহমদ নামে একজনকে আটক করে। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের চইরভাঙ্গা এলাকায়। আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। আহতরা হলেন চইরভাঙ্গা এলাকার মৃত.আমির হামযার ছেলে ছৈয়দ আহমদ (৬০), মৃত.আমির হামযার ছেলে জহির আহমদ (৪৫), নুরুল আবছারের স্ত্রী নুরুন্নাহার (৩০), ছৈয়দ আহমদের ছেলে কক্সবাজার পলিটেকনিক্যাল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মো.তোহা (১৯), জহিরের মেয়ে শিলখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনীর ছাত্রী জান্নাতুল মাওয়া (১৫), মৃত.আব্দুল করিমের ছেলে নুর মুহাম্মদ বাবুল (২৬), মৃত.আব্দু ছালামের ছেলে নাজেম উদ্দিন (৩০), নুরুল আলমের ছেলে শিক্ষার্থী নাহিদুল ইসলাম নয়ন (১৬), শামসুল আলমের ছেলে শিক্ষার্থী আরফাতুজ্জামান (১৭)। আহতদের মধ্যে ছৈয়দ আহমদ ও নুরুন্নাহার বেগমকে চমেক হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় বসতভিটার জায়গা নিয়ে ছৈয়দ আহমদ গংদের সাথে নাজেম উদ্দিন গংদের বিরোধ চলছিল। ওই বিরোধকে কেন্দ্র করে সকালে দু’পক্ষ দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে মারপিটে জড়ায়। এতে হামলায় তারা আহত হন। ছৈয়দ আহমদের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান জানায় আমাদের জায়গা জবর দখল করে নাজেম উদ্দিন গং পাকাঘর নির্মান চেষ্টা চালায়। জায়গা নিয়ে একাধিকবার পরিমাপ হয়েছে। বিচারের রায় আমাদের পক্ষে প্রচার আছে। স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিরা এ নিয়ে কয়েক দফা বৈঠকও করেন। ঘটনার দিন তারা বহিরাগত সন্ত্রাসী জড়ো করে জোর করে ঘর নির্মানের চেষ্টা করে। বাধা দিলে তারা আমাদের উপর হামলা চালিয়ে আহত করে। ভিকটিমদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে চিকিৎসার জন্য তারা হাসপাতালে ভর্তি হয়। এ সময় এক পক্ষের কয়েকজন ভাড়াটে সন্ত্রাসী হাসপাতালে গিয়ে আহতদের হাকাবকা করে। এমনকি হাসপাতাল ত্যাগ করতে তাদের চেষ্টা চালানো হয়েছে। বর্তমানে হাসপাতালে ওই দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীদের ভয়ে আতংকের মধ্যে আছে বলে তারা দাবি করেছে। পেকুয়া থানার অফিসার ইনর্চাজ (তদন্ত) মনজুর কাদের মজুমদার জানায় খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক পুলিশ পাঠিয়েছি। লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নাজিম উদ্দিন
পাঠকের মতামত: