পেকুয়া অফিস:
পেকুয়ায় এক মাসের ব্যবধানে ২৩ বাড়িতে চুরি সংঘটিত হয়েছে। উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের বারাইয়াকাটা ও সবজীবনপাড়া এলাকায় বেড়েছে চুরিসহ নানান অপরাধ তৎপরতা। এতে করে এ ইউনিয়নের জননিরাপত্তা মারাত্মকভাবে হ্রাস পেয়েছে। চোর সিন্ডিকেট রাতে বারাইয়াকাটা ও সবজীবনপাড়ায় বসতবাড়িতে হানা দেয়। এ সময় এ সব বসতবাড়ির বিপুল মালামাল ও নগদ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। গত ১ মাসের ব্যবধানে ওই দু’গ্রামে অন্তত ২৩ টি বসত বাড়িতে চুরি সংঘটিত হয়েছে। এর মধ্যে স্থানীয়রা ৩ দফা চোর সদস্যদের আটক করতে সক্ষম হয়েছে। চুরিকৃত মালামাল, নগট টাকা ও স্বর্নালংকার উদ্ধার করা হয়েছে। চোরের দল স্থানীয় হিসেবে চিহ্নিত হওয়ায় কয়েকটি চুরির ঘটনায় স্থানীয়ভাবে সালিশ বিচার হয়েছে। মুচলেকা দিয়ে অব্যাহতি পেয়েছে চোর সদস্যরা। চিহ্নিত চোর সদস্যকে পুলিশ ২ বার আটক করে। চুরির ঘটনায় জেলে যায় চোর সদস্য। তবে জেল থেকে এসে ফের চুরিতে জড়িয়ে যায়। সম্প্রতি উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নে বারাইয়াকাটাসহ আশপাশের বেশ কিছু গ্রামে চুরি চামারি বেড়েছে। স্থানীয় সুত্রে জানায়, গত ১ মাসের ব্যবধানে বারবাকিয়া ইউনিয়নের বারাইয়াকাটা ও সবজীবনপাড়া এলাকায় ২৩ টি বসতবাড়িতে চুরি সংঘটিত হয়েছে। এ সময় এ সব বাড়ির বিপুল পরিমান মূল্যবান দ্রব্যাদি ও নগদ টাকা লুট হয়েছে। এ সব গ্রামে চুরির আতংকে মানুষ নির্ঘুমে রাত যাপন করছে। ভীতি ও চুরির ভয়ে মানুষ রাত জেগে গ্রাম পাহারা দিচ্ছে। লাগাতার চুরি সংঘটিত হওয়ায় সমাজ কমিটি জরুরী বৈঠক আহবান করে। চুরি ঠেকাতে তারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয়। চেয়ারম্যান এ,এইচ,এম বদিউল আলম জিহাদী ও ইউপি সদস্য নাছির উদ্দিন মিয়া বারাইয়াকাটা ও সবজীবনপাড়া পরিদর্শন করেছেন। এ সময় এ সব অপতৎপরতা রোধ করতে ফাঁসিয়াখালী ইসলামীয়া ফাজিল মাদ্রাসায় বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে চোর সিন্ডিকেটের সদস্যদের চিহ্নিত করা হয়। এ সময় চোর সদস্যের এক পিতাকে এ সম্পর্কে তার ছেলেদের দমানোর তাগিদ দেয়া হয়। এ সময় পিতা তার ছেলে এ সব চুরির সাথে জড়িত থাকার দায় স্বীকার করে। তবে প্রকাশ্যে চেয়ারম্যানকে জানানো হয়েছিল। তারা গরীব মানুষ। ছেলেরা এ সব না করলে চলবে কিভাবে। চেয়ারম্যান পিতার এমন উক্তিতে হতভম্ব হন। সুত্র জানায়, গত ১ মাসের ব্যবধানে বারাইয়াকাটা ২৩ টি বাড়িতে চুরি সংঘটিত হয়েছে। গত ১০ দিন আগে ওই এলাকার হাফেজ আহমদের ছেলে আবদু রহিমের বাড়িতে চুরি সংঘটিত হয়। এ সময় ওই বাড়ির মালামাল স্বর্নালংকার ও নগদ টাকা চুরি হয়। এর কিছুদিন আগে জহির আহমদের ছেলে জোনাইদের সবজীবনপাড়া বাড়িতে চুরি হয়। এ সময় চোরের পরিচয় মিলে। এমনকি চুরির মালামাল উদ্ধার করা হয়। জানা গেছে, বারাইয়াকাটা এলাকার মৌলভী আবু বক্কর আনসারীর ছেলে মোবারক এ সব চুরি করে। তাকে ৭ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একইভাবে গত কিছুদিন আগে সবজীবনপাড়া জামে মসজিদের সৌর প্যানেল চুরি হয়। একই এলাকার আজিমের মুদির দোকানে চুরি সংঘটিত হয়। সিধ কেটে দোকানে প্রবেশ করে সবকিছু নিয়ে যায়। গত ৩ দিন আগে প্রবাসী সরফরাজ খান সবুজের বসতবাড়িতে চুরি হয়। নগদ টাকা ও বিপুল পরিমান মালামাল নিয়ে যায়। রাতে কৌশলে চোর বাড়িতে প্রবেশ করে। প্রবাসী সরফরাজ জানায়, মৌলভীর ছেলে মোবারক এ সব চুরি করে। এ ছাড়া নাপিতপাড়ায় গত ২০ দিন আগে গভীর নলকুপ চুরি করে নিয়ে যায়। সবজীবনপাড়ায় শোয়াইবের বাড়ি, হেলালের বসতবাড়ি, শহিদুল্লাহর বাড়ি, নুরুল আমিনের বাড়ি, মনির উদ্দিন শাকিলের বাড়ি, ফোরকানের গ্যারেজ, ছরওয়ারের বাড়ি, এহেছানের বাড়ি, মুজিবুর রহমানের বাড়ি, রেজাউল করিমের ফার্মে চুরি সংঘটিত হয়েছে। এ সব চুরি সিরিজ আকারে চলমান রয়েছে। রেজাউল করিম জানায়, আবু বক্করের ছেলে মোবারক একাধিকবার ধরা পড়েছে। সে দুর্ধষ চোর। চেয়ারম্যান তার পিতাকে ছেলেদের দমনের জন্য বলছিলেন। তবে পিতা ছেলেদের চুরিতে উৎসাহ যোগায়। মনির উদ্দিন শাকিল জানায়, তারা আমার নিকটাত্মীয়। মা থানায় থাকে। ছেলে এ সব করলেও তারা কোন ধরনের তোয়াক্কা করে না। এ সবের জন্য মা ও পিতা দায়ী। আবদু রহিম জানায়, মাঝে মধ্যে জেলে যায় মোবারক। টহল পুলিশ রাতে তার বাড়িত যায়। আমরা বললে পুলিশ আপার ছেলে বলে গ্রামবাসীর কথা উড়িয়ে দেয়। আসলে পুলিশ ও চোরের মধ্যে সম্পর্ক আছে। তিনবার জেলে গেছে। সমাজ পতি জালাল আহমদ, মসজিদের ইমাম হাফেজ তৈয়ব, হাজী আক্তার আহমদ, সমাজপতি মোস্তাক আহমদ সহ সমাজ পরিচালনা কমিটির লোকজন আবু বক্কর একজন মাদ্রাসা শিক্ষক। তিনি মসজিদে ইমামতিও করে। তার ছেলে মোবারক একজন দুর্ধর্ষ চোর। চুরিতে ধরা পড়ে জেলে গেছে একাধিকবার। ইয়াবাও সেবন করে। আমরা অতিষ্ট হয়ে গেছি। সহ্যের বাধঁ ভেঙ্গে গেছে। এ ভাবে মানুষ চলতে পারে না। ইউপি সদস্য নাছির উদ্দিন মিয়া জানায়, চেয়ারম্যান ও মৌলভী আবু বক্কর একই মাদ্রাসার শিক্ষক। ছেলের এ সব বন্ধ করতে চেয়ারম্যান নিজেই আবু বক্করকে চাপ প্রয়োগ করে। তবে তার কথায় আমরা হতাশ হয়েছি। অন্তত প্রতিদিন রাতে চুরি হচ্ছে এলাকায়। একজন শিক্ষক পাশাপাশি মৌলভী সাহেবও। চোর ছেলের এ সব কিভাবে মেনে নেয় সেটি বোধগম্য নয়। মসজিদের সৌর বিদ্যুত চুরি করে ওই চোর। চেয়ারম্যান এ,এইচ,এম বদিউল আলম জিহাদী জানায়, আবু বক্করকে সাবধান করা হয়েছে। ছেলে অবাধ্য হলে বলুক আমরা সহ তাকে শায়েস্তা করব। এলাকায় বেশ কিছু বসতবাড়ি চুরির আক্রান্ত হয়েছে। এলাকার লোকজনকে বলেছি আমাকে লিখিত অভিযোগ দিতে। পেকুয়া থানার ওসি জহিরুল ইসলাম খান জানায়, চেয়ারম্যানকে জানালে হবে কি? পুলিশ আইন শৃংখলা রক্ষা করে। আমাদের জানাতে হবে। এখনও লিখিত কেউ জানায়নি। জানালে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
####
পেকুয়ায় যুবককে অপহৃত
পেকুয়া অফিস:
পেকুয়ায় অপহৃত যুবককে মুমূর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। চোখ ও মুখমন্ডল কাপড় দিয়ে বেঁেধ দেয়। এ সময় বাড়ি থেকে লবণ মাঠে নির্জন বিলে তাকে নিষ্টুর পিটিয়ে জখম করে। উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের শরৎঘোনা দীঘিরপাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। অপহৃত ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ ইউনুছ(২৮)। তিনি ওই এলাকার নুরুল হকের ছেলে। ইউনুছের স্ত্রী সেলিনা ইয়াসমিন এ সংক্রান্ত বিষয়ে পেকুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। পেকুয়া থানা পুলিশ অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে। অভিযোগ ও স্থানীয় সুত্র জানায়, জমি বিক্রি নিয়ে পিতা ও ইউনুছের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এর সুত্র ধরে ১০ মে গভীর রাতে ইউনুছের বাড়িতে হানা দেয় উত্তেজিত লোকজন। ৫/৬ জনের দুবৃর্ত্তরা ইউনুছের বাড়িতে ব্যাপক তান্ডবসহ লুটপাট চালায়। এক পর্যায়ে মৃত জাবের আহমদের ছেলে জহিরুল ইসলাম, শাহ আলমের পুত্র বাদশা মিয়া, মৃত আবদুল হকের ছেলে নুরুল হকসহ দুবৃর্ত্তরা টানা হেচড়া করে সেলিনার স্বামী ইউনুছকে বাড়ি থেকে তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। এ সময় স্ত্রী স্বামীকে বাচাতে এগিয়ে আসছিলেন। তাকেও মারধরসহ নির্যাতন চালায়। এ সময় লবণ মাঠ থেকে মুমুর্ষ অবস্থায় স্বামীকে উদ্ধার করে। ইউনুছের স্ত্রী সেলিনা বেগম জানায়, আমার স্বামীকে মেরে ফেলানোর উদ্দেশ্যে অপহরন করা হয়েছিল। টাকা, স্বর্নালংকার লুট করে তারা।
###################
পেকুয়ায় রাতে সরকারী পুকুর থেকে মাছ লুট
পেকুয়া অফিস:
পেকুয়ায় রাতের আঁধারে সরকারী পুকুর থেকে মাছ লুট করা হয়েছে। ১৬ মে গভীর রাতে উপজেলার বারাবাকিয়া ইউনিয়নের সওদাগরহাট ইউনিয়ন ভূমি অফিস সংলগ্ন সরকারী পুকুর থেকে মাছ লুটের এ ঘটনা ঘটে। এর সুত্র ধরে বারবাকিয়া ইউপির সদস্য এনামুল হক ও ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা পূর্ণেন্দু বিকাশ তালুকদার বচসা হয়েছে। দুইজনের মধ্যে বাকবিতন্ডাসহ তুমুল হট্রগোল হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে ইউপির চেয়ারম্যান পুকুর পাড়ে যায় সকালে। এ সময় ভূমি কর্মকর্তা ও ইউপি সদস্যের মধ্যে বনিবনার অবসান হয়েছে। চেয়ারম্যান এ সম্পর্কিত বিরোধ নিস্পত্তি করেন বলে নির্ভরযোগ্য সুত্র নিশ্চিত করে। বারবাকিয়ার লোকজন জানায়, সওদাগর হাটের ভূমি অফিস সংলগ্ন পুকুরটির মালিক সরকারের ডেপুটি কমিশন ভূমি। গভীর ও সুপ্রশস্ত বিশাল আয়তনের এ পুকুরটিতে বিপুল পরিমান মাছ আছে। তবে মৎস্য উৎপাদন ও চাষ নিয়ে পরষ্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। একটি সুত্র জানায়, ওই পুকুরে মাছ চাষ করছে ইউনিয়ন ভূমি অফিস। তারা পুকুরটি রক্ষাবেক্ষন করছিলেন। ইউনিয়ন ভূমি অফিসার পূর্নেন্দু বিকাশ তালুকদার সেখানে মৎস্য চাষ করেছেন। পোনা অবমুক্ত করে তারা। অপর সুত্র জানায়, সরকারী ওই পুকুরে বারবাকিয়ার ইউপির সদস্য এনামুল হক মৎস্য চাষ করে। তবে সরকারী ওই বিভাগ থেকে পুকুরটি ইজারা দেয়া হয়নি। তিনি মাছ চাষ করে পুকুর নিয়ন্ত্রন করছিলেন। মাছগুলো বিক্রি উপযুক্ত হয়েছে। আহরন নিয়ে বাঁধা তৈরী হয়। এ সময় রাতেই মাছ ওই ইউপি সদস্য ধরে ফেলে। প্রায় ৩০ মণের অধিক মাছ শিকার করে। পিকআপ যোগে রাতে এ সব মাছ পাচার হয়েছে। স্থানীয়রা জানায়, পুকুরটি ওয়ারেচী ছৈয়দুর রহমান খনন করছিলেন। অনেক পুরানো মৎস্য এ পুকুরে আছে। বিভিন্ন প্রজাতির বড় সাইজের মাছ আহরন হয়েছে। ওই দিন প্রায় ২/৩ লক্ষ টাকার মাছ লুট হয়েছে সরকারী এ পুকুর থেকে। ইউপি সদস্য এনামুল হক জানায়, এ পুকুরে আমি মাছ চাষ করেছি। প্রতিদিন মাছের পরিচর্যা করছিলাম। আসলে মাছ ধরেছি। তবে রাতে ধরেনি। সকালে ধরেছি মাছ গুলি। ১৪ মণ মত হবে। ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা পূর্ণেন্দু বিকাশ তালুকদার জানায়, ভূল বুঝাবুঝি হয়েছিল। এ সম্পর্কিত বিষয়ে আপনারা সাংবাদিকরা পত্রিকায় রিপোর্ট না তৈরী করলে আমি খুশী হব। আর কিছু বলতে আমি চাই না।
পাঠকের মতামত: