পেকুয়া প্রতিনিধি ::
কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলায় বখাটে কর্তৃক স্কুল ছাত্রী ধর্ষণের ভিডিও ও ছবি নিয়ে পুরো উপজেলাজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ধর্ষনের ভিডিওসহ ছবি এখন পেকুয়ার সর্বত্রে ভাইরাল হয়ে পড়েছে। আর অপরদিকে ধর্ষক বখাটের পরিবারের লোকজন ধর্ষিতা স্কুল ছাত্রীর অসহায় পরিবারকে এ বিষয়ে মামলা না করতে লাগাতার হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে স্কুল ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনাটি মীমাংসা করে দেওয়ার জন্য জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে পেকুয়া জিএমসি ইনষ্টিটিউশন ম্যানেজিং কমিটির প্রভাবশালী সদস্য ও পেকুয়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. ইসমাইল মেম্বার। এ ঘটনার ধর্ষণের শিকার স্কুল ছাত্রীর পরিবার থানায় এজাহার নিয়ে ধর্ষক বখাটের বিরুদ্ধে এজাহার দিতে গেলেও মামলা নেয়নি পুলিশ।
তবে পেকুয়া থানার ওসি (প্রশাসন) জহিরুল ইসলাম দাবী করেছেন, এ ঘটনায় তার কাছে কেউ এজাহার নিয়ে আসেনি। তবে তিনি শুনেছেনে, প্রেম-ভালবাসা নিয়ে ঘটনাটি ঘটেছে। ইসমাইল মেম্বার সমাধা করে দেওয়ার জন্য চেষ্টা করছেন।
ইসমাইল মেম্বারের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, তিনি ছেলে ও মেয়ের পরিবারের মধ্যে সমঝোতা করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। তিনি এ বিষয়ে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ না করতে এ প্রতিবেদককে অনুরোধও জানান। ধর্ষণের মতো ঘটনা কিভাবে সমাধা করছেন জানতে চাইলে তিনি কোন ধরনের সদুত্তর দিতে পারেনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহ পূর্বে পেকুয়া চৌমুহুনীস্থ পুরাতন জমিদার বাড়িস্থ পেকুয়া জিএমসির শিক্ষক নুর মোহাম্মদ মাষ্টারের নিয়ন্ত্রণাধীন ছাত্রাবাস থেকে পেকুয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর এক ছাত্রীর (সংঘত কারণে নাম গোপন রাখা হলো) সাথে আপত্তিকর অবস্থায় ধরা পড়ে পেকুয়া মডেল জিএমসি ইনষ্টিটিউশনের এসএসসি পরীক্ষার্থী বখাটে আরিফ। আরিফ ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের ভিডিও নিজের মোবাইলে ধারণ করে। পরে স্থানীয়রা খবর পেয়ে ওই বাসায় গিয়ে ‘আপত্তিকর অবস্থায়’ তাদের দুইজককে ধরে অভিভাবকের হাতে তুলে দেন। বখাটে আরিফ পেকুয়া সদর ইউনিয়নের বাইম্যা খালী গ্রামের প্রবাসী সাকেরের পুত্র।
জানা গেছে, বখাটে আরিফ একটি ছাত্র সংগঠনের পেকুয়া জিএমসি ইনষ্টিটিউশন শাখার সভাপতি। ঘটনার দিন পেকুয়া জিএমসির পশ্চিম পার্শ্বে পুরাতন জমিদার বাড়িস্থ নুর মোহাম্মদ মাষ্টারের নিয়ন্ত্রণাধীন ছাত্রাবাসে ফুসলিয়ে বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ওই ছাত্রীকে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে গিয়ে বিয়ের প্রলোভনে ওই ছাত্রীকে ধর্ষন করে। আর ধর্ষণের ভিডিও নিজের মোবাইলে ধারণ করেন ছাত্রদল নেতা আরিফ। পরে খবর পেয়ে স্থানীয়রা ওই ছাত্রাবাস ঘেরাও করে ‘আপত্তিকর অবস্থায়’ তাদের দুইজনকে আটক করে পরিবারের কাছে তুলে দেয়।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, ওই ছাত্রীর পরিবার খুবই দরিদ্র। ধর্ষকের পরিবার প্রভাবশালী হওয়ায় থানা আদালতে নির্যাতনের শিকার ছাত্রীর পরিবার মামলা করতে সাহস পাচ্ছেনা। পেকুয়া জিএমসি ইনষ্টিটিউশন ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ইসমাইল মেম্বার ধর্ষণের ঘটনাটি মীমাংসার জন্য ঘটনার পর থেকে নানান ধরনের চেষ্টা তদবীর চালিয়ে যাচ্ছেন।
পেকুয়া জিএমসি ইনষ্টিটিউশন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি উম্মে কুলসুম মিনু জানান, তিনি বিষয়টি তদন্ত করে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
পাঠকের মতামত: