নাজিম উদ্দিন,পেকুয়া ::
পেকুয়ায় জোরালো হচ্ছে রভারানী শীল (২৫) হত্যার বিচার দাবি। গত এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেছে এখনো হত্যাকান্ডের এ ঘটনা থেকে গেছে অষ্পষ্ট। সনাতন ধর্মালম্বী রভারানী শীল গত ১১জুলাই ভোর রাতে চট্টগ্রাম সম্মিলত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) মৃত্যু হয়। ওইদিন রাতে স্বামীর বাড়িতে তার অবস্থা অবনতি ঘটে। রভারানী শীলের পিতার দাবি তার মেয়েকে ঘাতক স্বামী পিটিয়ে নির্মমভাবে খুন করে। হত্যাকান্ডের এ ঘটনা চাপিয়ে দিতে শ^াশর বাড়ির লোকজন এটিকে স্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে জাহির করার চেষ্টা করছে। এদিকে রভারানী শীলের মৃত্যুকে হত্যাকান্ড দাবি করে তার পিতা মহেশখালী উপজেলার বড় মহেশখালী নতুন বাজার এলাকার বনমালী শীল বাদি হয়ে ওইদিন দুপুওে পেকুয়া থানায় একটি লিখিত এজাহার দিয়েছেন। ঘাতক স্বামী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্য পেকুয়া সদর ইউনিয়নের সুশীলপাড়ার হারাধন কুমার সুশীলের ছেলে আশিষ কুমার সুশীলকে প্রধান আসামি করে ৯জনের বিরুদ্ধে ওই অভিযোগটি রুজু করেন। লাশ পুলিশ উদ্ধার করে। এ সময় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে লাশের ময়না তদন্ত হয়। সনাতন ধর্মের প্রথা অনুযায়ী তার লাশ দাহ করা হয়নি। মৃত্যু নিয়ে রহস্য থাকায় ও রভারানী শীলের পিতার অভিযোগ পাওয়ায় পুলিশ ওই গৃহবধুর মরদেহ দাহ করতে দেয়নি। তবে লাশ পেকুয়া সুশীলপাড়ায় শ^শ্নানে সৎকার করে। এদিকে গৃহবধু রভারানী শীলের মৃত্যুকে ঘিরে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে সন্দিহান তৈরি হয়েছে। অনেকে জানিয়েছেন এ গৃহবধুকে স্বামী আশিষ কুমার সুশীল রাতে পিটিয়ে হত্যা করে। দাম্পত্য জীবনে বিয়ের পর থেকে আশিষের সাথে তার স্ত্রীর বনিবনা ছিল। প্রায় সময় স্ত্রীকে নির্যাতন করতেন স্বামী। গত ৫বছর ধরে পিতার বাড়ির সাথে রভারানী শীলের যোগাযোগ ছিল বিচ্ছিন্ন। মৃত্যুর দু’দিন আগে পিতার সাথে মুঠোফোনে রভারানীর কথা হয়। স্বামী ছুটিতে আসবেন, পিতাকে মোবাইলে ফোন না করতে তাগিদ দেন রভারানী। তিনি পিতাকে শর্তক করেছিলেন মুঠোফোন চেক করে বাপের বাড়ির সাথে কথা হয়েছে সেটি প্রমান পেলে তাকে নির্যাতন করবে স্বামী। এমন নিশ্চিত করেন তার পিতা। বনমালী শীল আরো জানায় নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে মেয়ে একবার পালিয়ে এসেছিলেন। সাত মাসের অন্ত:সত্বা গৃহবধু রভারানী শীলের হত্যার বিচার দাবিতে সোচ্চার হচ্ছে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনসহ সচেতন মহল। গত ১৩জুলাই কক্সবাজার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন হয়েছে। এ সময় হত্যাকান্ডের সুষ্ট তদন্তসহ জড়িতদের অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে তাদের গ্রেফতার দাবি করা হয়েছে। মানববন্ধনে মানবাধিকার সংগঠনগুলো সংহতি প্রকাশ করে।গত এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখানো রভারানী শীলের পিতার দায়েরকৃত এজাহারটি অমিমাংসিত থেকে গেছে। নিয়মিত মামলা হয়নি এখনো। বনমালী শীল জানায় আমি মেয়ের ন্যায় বিচার নিয়ে সন্দিহান। পুলিশ এখনো মামলা রেকর্ড় করেননি। আমি সুষ্ট তদন্তসহ হত্যাকান্ডের জড়িতদের গ্রেফতার দাবি করেছি। পেকুয়া থানার ওসি জহিরুল ইসলাম খান জানায় ময়না তদন্তের রির্পোট না আসা পর্যন্ত মামলা রেকর্ড় হবেনা। আদালতে মামলা করার জন্য পরামর্শ দিয়েছি।
পাঠকের মতামত: