কক্সবাজারের পেকুয়ার সেই সাব রেজিষ্ট্রার পরিতোষ কুমার দাশ সনদ জালিয়াতি মামলা মাথায় নিয়ে অবশেষে বদলী করা হয়েছেন। জানা যায় পেকুয়া উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রার পরিতোষ কুমার দাশের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দূণীতির অভিযোগ খতিয়ে নেয় সংশ্লিস্ট বিভাগ। সে গত বছর খানেক আগে চকরিয়া উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রার হিসাবে যোগদান করেন। সেখানেও একটি সিন্ডিকেট তৈরি করেন। পেকুয়ায় সাব রেজিষ্ট্রার না থাকায় কপাল খুলে পরিতোষ কুমার দাশের। তাকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয় পেকুয়া উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রার হিসাবে। তিনি পেকুয়ায় যোগদার করার পর কিছু দিন যেতে না যেতে এমরুগান সুলতানা নামের মাস্টার রুলের এক মহিলা কর্মচারী কে নিয়ে নানা ধরণের অনিয়ম ও দূর্ণীতিতে জড়িয়ে যান। জেলায় চাহিদা অনুযায়ী সাব রেজিষ্ট্রার না থাকায় বিভিন্ন উপজেলায় অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে কোন মতে পুষিয়ে নেয় জমি বেচাকেনা। এ সুযোগে পরিতোষ কুমার দাশ অতিরিক্ত দায়িত্ব পান পেকুয়ায়। দীর্ঘ দিন পেকুয়ায় অবস্থান কালে অফিস সময়ের বাইরে গিয়ে রাতেও রেজিষ্ট্রী করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এ মহিলা কর্মচারী এমরুগান সুলতানার সিন্ডিকেটের মাধ্যমে। শুধু সাব রেজিষ্ট্রার নয় মাষ্টার রুলের এ মহিলা কর্মচারি এমরুগান সোলতানাও বহু টাকার মালিক হয়েছেন। এমরুগান সোলতানা এক জন মাষ্টার রুলের কর্মচারী হয়ে কিভাবে এত টাকা মালিক হয়েছেন তা দেখার বিষয়। দীর্ঘ দিন ধরে এ সিন্ডিকেটের হাতে উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রার অফিস কে জিম্মী করে রেখেছে। অবৈধ টাকার জানা জানি হবে বলে ওই মহিলা কর্মচারী তার শাশুর বাড়িতে জায়গাজমি না কিনে বাপের বাড়িতে জায়গা জমি কিনার মহাউৎসবে মেতে উঠেছেন।
অভিযোগ উঠেছে ওই মহিলা সাব রেজিষ্ট্রার পরিতোষ কুমার দাশকে ব্যবহার করে দিনের পর দিন লক্ষ লক্ষ টাকার মালিক বনে যাচ্ছেন।ওই কর্মচারী চকরিয়া উপজেলায় ছিল সম্প্রতি দূর্ণীতির কারণে শাস্তিমূলক পেকুয়া উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রী অফিসে বদলী করেন। এখানে এসেও সে নানা ধরণের দূর্ণীতিতে জড়িয়ে যান। তার বেপরোয়া দূর্ণীতির কারণে অতিষ্ট হয়ে যায় জমির ক্রেতা ও বিক্রেতারা। এছাড়া এসব কিছু সহ্য করতে না পারায় তার অফিসের অন্যান্য কর্মচারীরাও অতিষ্ট হয়ে যায়। পেকুয়া উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রার পরিতোষ কুমার দাশকে সম্প্রতি সনদ জালিয়াতি মামলায় পেকুয়াস্থ নিজ কার্যালয় থেকে থানা পুলিশের সহায়তায় আটক করে দূণীতি দমন কমিশনের উপ পরিচালক আহমদ ফরহাদ। এ মামলায় বেশ কিছু দিন ধরে জেল কাটেন এ সাব রেজিষ্ট্রার পরিতোষ কুমার দাশ। ওই মহিলা সিন্ডিকেট তার দূর্ণীতির খতিয়ান আড়াল করতে কিছুদিন আগে মোটাংকের টাকার বিনিময়ে জেল থেকে ছাড়া নিয়ে আসেন সাব রেজিষ্ট্রার পরিতোষ কুমার দাশকে। জেল থেকে মুক্ত হয়ে আসার পর থেকে আবারো বেপরোয়া হয়ে যায় ঘুষবাণিজ্য। ইতিমধ্যে কাজী নিয়োগের প্যানেল করার মাধ্যমেও লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ৭ নভেম্বর আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় আইন ও বিচার বিভাগের এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে চকরিয়া পেকুয়া উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রার হিসাবে দায়িত্বরত সাব রেজিস্ট্রার পরিতোষ কুমার দাশকে ঢাকার বাড্ডায় বদলী করা হয়। সংশ্লিস্ট মন্ত্রানালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মো: আনোয়ারুল হক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ আদেশ জারি করা হয়েছে। ইতিপূর্বে ওই বদলীর আদের্শ কক্সবাজার জেলা সাব রেজিষ্ট্রার আশরাফুজ্জ্মাানের কাছে প্রেরণ করছে সংশ্লিস্ট মন্ত্রণালয়। ওই আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে ১৩ নভেম্বরের মধ্যে বর্তমান কর্মস্থল হতে দায়িত্বভার অপর্ণ করে বিধি মোতাবেক বদলীকৃত কর্মস্থলে যোগদান করার আদেশ দেন। সে আলোকে গত ১০ নভেম্বর পেকুয়া উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রার অফিস থেকে পরিতোষ কুমার দাশ শেষ কর্মদিবস পালন করে বিদায় নিয়ে চলে গেছেন।
এ ব্যাপারে ওই মহিলা কর্মচারী এমরুগানের সাথে যোগাযোগ করার জন্য ওনার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে বেশ কয়েকবার কল দিলেও সংযোগ না পাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রার পরিতোষ কুমার দাশের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও ফোন রিসিভ করেননি।
এ ব্যাপারে জেলা রেজিষ্ট্রার আশরাফুজ্জ্মাানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বদলীর সত্যতা নিশ্চিত করেন।
পাঠকের মতামত: