ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

পাষন্ড স্বামী আব্দুল গণির ফাঁসি দেখতে চান স্ত্রী ফাতেমা বেগম

ইমাম খাইর :::
৩ সন্তান বেলি, শিউলি ও চম্পার গলা কেটে হত্যাকারী পাষন্ড স্বামী আব্দুল গণির ফাঁসি দেখে যেতে চান স্ত্রী ফাতেমা বেগম।
তিনি বলেন, পাষান আব্দুল গণির বিরুদ্ধে মৃত্যুদন্ড রায় ঘোষণার মাধ্যমে আদালত উপযুক্ত বিচার করেছে। রায়ে আমি সন্তুষ্ট। তবে, রায় কাগজে সীমাবদ্ধ থাকলে হবেনা। ফাঁসি কার্যকর হওয়াটা স্বচক্ষে দেখতে চাই। এরপর মরলেও আমার আত্না শান্তি পাবে।
সোমবার দুপুরে বেলি, শিউলি ও চম্পার হন্তারক পিতা আব্দুল গণির ফাঁসির আদেশ দেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মীর শফিকুল আলম।
ঘাতক আব্দুল গণি রায় শুনে অবিচল ছিলেন। তার মধ্যে কোন ধরণের ভয় বা অনুভূতির ছাপ লক্ষ করা যায়নি। রায় ঘোষণার পর কোর্ট সেল থেকে আব্দুল গণিকে কারা সেলে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর যথা নিয়মে জেলা কারাগারে তাকে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
রায়ের বিষয়ে অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন নিহত বেলি, শিউলি ও চম্পার গর্ভধারিনি মা ফাতেমা বেগম।
মুঠোফোনে তিনি বলেন, ভাইয়ের বউ রাসেদার সাথে আবদুল গণির পরকিয়া প্রেম ছিল। তাতে বাঁধা দেয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে আমাকে অনেকবার মারধর করেছে। আমাদের বাড়ী থেকে বের করে দেয়। সন্তানদের উপর অনেকবার রাগ ঝেড়েছে। অবশেষ নিজ সন্তানদের হত্যা করে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটাল।
তিনি আবেগ আপ্লুত ভাষায় বলেন, অপরাধ করলে আমি করেছি। সন্তানদের কি দোষ? তাদের কেন জবাই করলো? কেনইবার আমার বুক খালি করে দিল?
এ সময় ফাতেমা কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন। বারবার মূর্ছা যাওয়ার অবস্থা।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) দীলিপ কুমার ধর জানান, এ রায়ের মাধ্যমে ন্যায় বিচারের দৃষ্টান্ত স্থাপন হলো। আমি আশা রাখছি রায় মহামান্য হাইকোর্টেও বলবৎ থাকবে। রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ প্রকাশ করেন। আসামীর পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এডভোকেট আবুল কালাম আজাদ।
সুত্র জানায়, ২০১৫ সালে ১৪ মে দিবাগত রাত ২ টার দিকে পাষন্ড পিতা আবদুল গণি তার তিন শিশু কন্যা আয়েশা ছিদ্দিকা চম্পা (১০), শিউলি জান্নাত শিউলি (৮) ও দেড় বছরের তহুরা জান্নাত বেলীকে জবাই করে হত্যা করে পালিয়ে যায়। ঘটনার ৩ দিন পর চট্টগ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ঘটনার দুইদিন পর ১৬ মে নিহত শিশুদের মা ফাতেমা বেগম বাদি হয়ে চকরিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং এসটি ২৪৬৪/১৫। মামলায় এক নম্বর আসামি করা হয় শিশুদের বাবা আবদুল গনিকে।
এছাড়া মামলায় দুই ও তিন নম্বর আসামি করা হয় আবদুল গনির মা মনোয়ারা বেগম ও ভাই আবদুল হামিদকে। গ্রেফতারের পর আবদুল গণি উপজেলা সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেয়ায় পুলিশ অপর দুই আসামি মনোয়ারা বেগম ও আবদুল হামিদকে অব্যহতি দিয়ে আদালতে অভিযোগপত্র (চাজসিট) দাখিল করেন। চাঞ্চল্যকর ঘটনার দুই বছরের মাথায় রায় ঘোষিত হয়।

পাঠকের মতামত: