ঢাকা,রোববার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

পানির দরে লবণ!

নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার ::

কক্সবাজার সদরের উপকূলীয় অঞ্চল এলাকায় অপরিশোধিত লবণের ব্যাপক উৎপাদন হচ্ছে। ইতোমধ্যে লবণ চাষ আড়াই মাস অতিবাহিত হয়েছে। প্রথম ১মাস লবণের দাম কিছুটা সন্তোশ জনক পেলেও চলতি মাসে লবণের দাম অনেকাংশে কমে যাওয়ায় হতাশ হচ্ছেন চাষিরা। বর্তমান স্থীতি লবণের দাম থেকে আরো কমে গেলে বড় ধরণের ক্ষতির সম্মুখীন হবে বলে প্রান্তিক চাষীরা অভিযোগ করেছেন।
খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, বিগত বছর লবণ চাষীরা সাড়ে ৪শ থেকে ৪শ টাকা পর্যন্ত লবণের দাম পেয়েছিল। লাভবান হয়েছিল জমির মালিক, প্রান্তিক চাষী, খুচরা ও পাইকারী লবণ ব্যবসায়ীরা। বতর্মান সরকারের কঠোর হস্তক্ষেপ ছিল দাম সন্তোষজনক অবস্থায় রাখার। সরকারের কঠোর নজরদারীর জন্য অসাধু ব্যবসায়ীরা বিদেশ থেকেও লবণ আমদানী করতে পারেনি। যার কারণে চাষীরা সুখ শান্তিতে ছিল।
এদিকে চলতি বছরের লবণ মৌসুম শুরুতেই লবণের দাম ৩শ টাকা ছিল। যা ১মাস স্থীতি ছিল। বর্তমানে লবণের দাম মণ প্রতি ২০০ টাকা থেকে সর্বোচ্ছ ২২০ টাকা। প্রান্তিক চাষীরা প্রতিকানি মাঠ বর্গা নিয়েছেন সর্বনিম্ন ১৮ হাজার টাকা এবং সর্বোচ্ছ ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত।
এর পাশাপাশি রয়েছে শ্রমিক, পলিথিন ক্রয়সহ আনুসাঙ্গিক খরচ। প্রতি কানিতে লবণ উত্তোলণ হয় ৬মাসে ২শ মণ থেকে শুরু করে ২৫০ মণ পর্যন্ত। যার কারণে বর্তমান লবণের দাম আর খরচ প্রায় সমান পর্যায়ে। দাম আরো কিছু কমলে ক্ষতির সম্মুক্ষীন হবে চাষীরা।
বর্তমান দাম স্থীতিবস্থায় থাকলেও আারো কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছে লবণ চাষী-ব্যবসায়ীরা।
স্থানীয় ইসলামপুরের লবণ ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, গত বছর প্রতি মণ লবণ বিক্রি হয়েছিল সর্বোচ্চ ৪৮০ টাকায়। এ মৌসুমে শুরুর দিকে মণপ্রতি লবণের দাম ছিল ৩০০ টাকা, এখন তা ২২০ টাকায় নেমেছে। তাঁদের অভিযোগ, বিদেশ থেকে আমদানির করা ও আমদানীর গুজব ছড়িয়ে চাষি পর্যায়ে লবণের দাম কমিয়ে দিয়েছে একটি মহল।
সদরের গোমাতলীর লবণ ব্যবসায়ী ও চাষী সাইফুদ্দীন বলেন, বিগত বছরের তুলনায় চলতি বছরে পানির ধরে বিক্রি হচ্ছে লবণ। মৌসুমের প্রথম পর্যায়ে ৩০০ টাকা আর বর্তমান আড়াইমাস শেষ হতে চললেও ২০০ টাকা লবণ বিক্রি হচ্ছে। যার কারণে চাষীরা ক্ষতির সম্মোখিন হচ্ছে। উচিৎ মূল্যে না পেলে চাষীদের বড় ধরণের ক্ষতি হবে।
ইসলামপুরের লবণ ব্যবসায়ী জসিম উদ্দীন বলেন, বর্তমান দাম ২০০ থেকে ২২০ টাকা পর্যন্ত। বর্তমান দাম চাষী ও ব্যবসায়ীদের জন্য মোটামুটি পর্যায়ে রয়েছে। তবে আরো কমলে চাষীরা ক্ষতির সম্মোখিন হবে।
পোকখালীর ইউপি সদস্য আলা উদ্দীন বলেন, লবণ চাষীরা এমনিতেই বর্গা নিয়ে লবণ চাষ করে। তার মাঝে দাম কমে যাওয়ায় চাষীরা হতাশ হচ্ছেন। বর্তমান স্থিতি অবস্থা থেকে দাম আরো কমে গেলে চাষীরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হবে।
কক্সবাজার বিসিক সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজারের চকরিয়া, পেকুয়া, সদর, টেকনাফ, মহেশখালী, কুতুবদিয়া ও চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে উৎপাদিত লবণই পুরো দেশের চাহিদা মেটায়। এ আট উপজেলায় কয়েক বছর পূর্বেও শুধুমাত্র প্রাকৃতিক (সনাতন) উপায়ে লবণ উৎপাদন হতো। বর্তমানে সদর, চকরিয়া, পেকুয়া, টেকনাফ, বাঁশখালীর বিভিন্ন স্থানে পলিথিন পদ্ধতিতে লবণ উৎপাদন হচ্ছে। এতে কম জমিতে উৎপাদন হচ্ছে অধিক পরিমাণ লবণ। যা সারাদেশের লবণের চাহিদা পুরন করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

602

পাঠকের মতামত: