মোঃ রেজাউল করিম, ঈদগাঁও ::
পোকখালীর নাইক্ষ্যংদিয়া রাবারড্যাম সেচ প্রকল্পের আওতায় বর্গা চাষীদের কাছ থেকে যেভাবে ইচ্ছা টাকা আদায় করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন পানি হাউজের টাকা নির্ধারিত না হওয়ায় মুনাফালোভী ম্যানেজাররা এ কান্ড ঘটাচ্ছে। এতে বর্গা চাষীদের পথে বসার উপক্রম হয়েছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসকের নজরে আনা হয়েছে। ভূক্তভোগীদের পক্ষে এক ব্যক্তি এ বিষয়টি প্রশাসনের দৃষ্টিগোচর করেছেন।
প্রাপ্ত তথ্যে প্রকাশ, দীর্ঘদিন নাইক্ষ্যংদিয়া রাবারড্যাম পানি হাউজের টাকা নির্ধারণ করা হয়নি। এর সুযোগ নিচ্ছে সংশ্লিষ্ট স্কীম মালিক/ম্যানেজাররা। তারা চাষাদের কাছ থেকে নিজেদের ইচ্ছেমত টাকা আদায়ের জন্য কড়াকড়ি করছেন। জানা গেছে, উক্ত এলাকার বর্গা চাষীরা জমি মালিক থেকে এক কানি এক ফসলা জমি ৫/৬ হাজার টাকা খাজনা দিয়ে চাষাবাদ করে আসছেন। অনেক পরিবারে উক্ত চাষাবাদই জীবিকা নির্বাহের একমাত্র মাধ্যম। নাইক্ষ্যংদিয়ায় ঈদগাঁও নদীর উপর কয়েক বছর আগে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের উদ্যোগে চীনা প্রযুক্তিতে রাবারড্যাম নির্মিত হয়েছে।
চলমান মৌসুমের চাষীরা উক্ত রাবারড্যাম সেচ প্রকল্প থেকে পানি সেচ নিয়ে চাষবাস করছেন। এর আগে নদীতে বালির বাঁধ দিয়ে সংশ্লিষ্ট বিশাল এলাকার লোকজন চাষাবাদ করতেন। রাবারড্যাম সেচ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলেও এ পর্যন্ত পানি ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করা হয়নি। একজন নির্বাহী কর্মকর্তা সেচ প্রকল্পের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করছেন। প্রকল্পটি চালু হওয়ায় সংশ্লিষ্ট এলাকার শত শত কৃষক-কৃষানী স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। তাদের মতে, এ প্রকল্প থেকে ন্যায্য মূল্যে পানি সেচ নিয়ে তারা কৃষিতে লাভের মুখ দেখবেন। কিন্তু পরিতাপের বিষয় যে, সেচ প্রকল্পের নিয়ন্ত্রণাধীন অসাধু স্কীম ম্যানেজাররা এখন বর্গা চাষীদের কাছ থেকে কানি প্রতি (২০ শতক) ৩/৪ হাজার টাকা কড়াকড়ি করে আদায় করছেন।
বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ন্যায্যমূল্য নির্ধারণ করতে জেলা প্রশাসকের প্রতি লিখিত আবেদন জানানো হয়েছে। পূর্ব পোকখালী তথা ২নং ওয়ার্ডের বর্গা চাষীদের পক্ষে ভূক্তভোগী কুতুব উদ্দীন চৌধুরী উক্ত আবেদনটি করেছেন। আবেদনে তিনি বলেন, প্রকল্পভূক্ত ম্যানেজারদের ডেকে তাদের খরচ হিসেব করে পানি হাউজের টাকা নির্ধারণ করা যেতে পারে। এতে সংশ্লিষ্ট এলাকার ৫শ একর জমির আওতাভূক্ত কৃষক সমাজ উপকৃত হবে বলে মনে করেন তিনি। বিকল্প হিসেবে পাশর্^বর্তী ঈদগাঁও রাবারড্যাম পানি ব্যবস্থাপনা কমিটি যেভাবে সেচ বাবদ কানি প্রতি টাকা আদায় করেন সেভাবে আদায় করার জন্য প্রস্তাবনা পেশ করেন।
আবেদনপত্রে বর্গচাষীদের মধ্যে স্বাক্ষর করেন নুরুল আজিম, আবু বক্কর ছিদ্দিক, মোহাম্মদ উল্লাহ, জালাল আহমদ, আবু আকবর, জসিম উদ্দীন, কামাল উদ্দীন, মনির আহমদ, শাহেদ আলম, শফিউল মোস্তফা, আবদুল মালেক, জহিরুল মোস্তফা, ছৈয়দনুর, আবু তাহের, লাল মিয়া, মোহাম্মদ তৈয়ব, সাহাব উদ্দীন, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, লাল মিয়া, মিজানুর রহমান, মমতাজ, সোলেমান, ছৈয়দ হোসেন, ছাবের আহমদ, বশির আহমদ, জসিম, ছলিম সওদাগর, আবুল হোসেন, মোহাম্মদ জয়নাল, ছৈয়দ আলম, মৌলানা হেফাজত, মোহাম্মদ নওশাদ, মোজাম্মেল হক, ইলিয়াছ, মোঃ শফি সওদাগর, শাহজাহান, শফি আলম, নুরুল হুদাসহ অর্ধশতাধিক।
পাঠকের মতামত: