নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া :: কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জের ডুলাহাজারা বিটের রিজার্ভ ফরেষ্ট উজাড় হয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি সংরক্ষিত বনভূমি জবর দখল করে নির্মিত হয়েছে অসংখ্য ঘরবাড়ি, দোকানসহ বিভিন্ন স্থাপনা। ৫টি স’মিলে গিলে খাচ্ছে সংরক্ষিত বনের সেগুন, জাম, গর্জনসহ বিভিন্ন প্রজাতির কাঠ।
ডুলাহাজারা হারগাজা-বনফুর সড়ক দিয়ে প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত অর্ধশত ট্রাক, ডাম্পার ও চাঁদের গাড়ি জীপ ভর্তি হয়ে আসছে চোরাই কাঠ। ওই বিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিট কর্মকর্তা মো. ইলিয়াছ হোসেন ও তার সহকারী বন পহরী কাদের দৈনিক হাজার হাজার টাকা উৎকোচ আদায় করছে ওইসব চোরাই কাঠ ভর্তি গাড়ি থেকে। এ ভাবে তারা মাসে লাখ লাখ টাকা অবৈধ ভাবে আয় করছে বলে স্থানীয় পরিবেশ সচতেন জনগন অভিযোগ করেছেন।
বর্তমানে ডুলাহাজারা বিটের রিজার্ভ ফরেষ্ট চুরির ইতিহাস অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে অচিরেই এ বিট টি ন্যাড়া পাহাড়ে পরিনত হবে। বর্তমানে মালুমঘাট ডুমখালী চিরা মুরা, ডুমখালী রিক্সা নাম্বার, ডুমখালী ঘোনা সংলগ্ন ও হাসপাতালের পিছনে নির্মিত হচ্ছে স্থানীয় বশির আহমদ প্রকাশ গর্জন বশির ও আমিন প্রকাশ বাইট্টা আমিনের নেতৃত্বে ছোট-বড় ১০টি ফিশিং বোট। এসব বোট নির্মাণে কাঠ নেয়া হচ্ছে ডুলাহাজারা সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে। অভিযোগ উঠেছে, এ বিট কর্মকর্তা ইলিয়াছ হোসেন ওইসব বোট নির্মাণে মোটা অংকের উৎকোচ নিয়ে চোরাই কাঠ সরবরাহের দায়িত্ব নিয়েছেন।
রাত দিন লামা হারগাজা সড়ক দিয়ে অবৈধ ভাবে আসা চোরাই কাঠ ভর্তি গড়ি গুলো থেকে বিট কর্মকর্তা ও বনপ্রহরী কাদের চাঁদা আদায়ে ব্যস্থ থাকায় ডুলাহাজারা বিটের শত কোটি টাকা মূল্যর বন সম্পদ অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। চোরের দল বনে হানা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সেগুনসহ মূল্যবান কাঠ গুলো। কাঠ কর্তনের পর গাছের গুড়ালি গুলো সু-কৌশলে উপড়িয়ে ফেলছে প্রভাবশালী কাঠ চোরের দল। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তদন্তে আসলে কেটে নেয়া গাছের যেন কোন অস্থিত্ব খোঁজে না পায়।
ডুলাহাজারা বন বিটের বিভিন্ন ব্লকের গাছের পরিসংখ্যান গুলো রেজিষ্ট্রার থেকে যাছাই-বাছাই করে বর্তমান পরিসংখ্যান বের করা হলে এ বিট থেকে কি পরিমান গাছ উজাড় হয়ে গেছে তা সহজে ধরাপড়বে বলে দাবী করেছেন এলাকার জনগন। বর্তমানে এ বিটে যোগদান করা বিট কর্মকর্তা ইলিয়াছ হোসেন নিজকে বন বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আপন লোক পরিচয় দিয়ে গাছ পাচারে বেপরোয়া হয়ে উঠছে। ওই কর্মকর্তা গর্বকরে বলেন, তার বিরুদ্ধে পত্রিকায় ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশ হলেও উর্ধ্বতন কতৃপক্ষ ম্যানেজ থাকায় তার বিন্দুমাত্র কিছু যায় আসেনা।
এ ব্যাপারে ওই কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি চকরিয়া নিউজকে জানান, ইতিপূর্বেও তিনি ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জের বিভিন্ন বিটে দায়িত্ব পালন করেছেন। চোরাই কাঠ দিয়ে যেসব বোট তৈরী হচ্ছে তিনি বোট নির্মাতাদের পক্ষে সাফাই গান। এ ব্যাপারে এলাকার পরিবেশ সচেতন জনগন ওই দূর্নীতিবাজ বিট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে অন্যত্র বদলীর দাবী জানিয়েছেন। নচেৎ ডুলাহাজারা বিটের অবশিষ্ঠ গাছ গুলো সহসায় পাচার হয়ে যেতে বেশী দিন সময় লাগবেনা বলে তারা দাবী করেন।
পাঠকের মতামত: