প্রতিনিয়ত প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করে বেচে থাকতে হয় কক্সবাজার সদর উপজেলার উপকূলীয় পোকখালী ইউনিয়নের গোমাতলীতে বসবাসরত এই অসহায় পরিবার গুলোর। পানির অপর নাম জীবন হলেও ১০ গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষের জন্যে সমুদ্রের পানি এখন মরন বললেই চলে। সমুদ্রের ঢেউয়ে বেড়িবাঁধ ভেঙে সাবাড় হয়ে দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে তাদের বাপদাদার বসতবিটা। ফলে অসহায় জীবন যাপন হয়েছে তাদের নিত্যসঙ্গী। বর্ষা মৌসূমসহ অতিরিক্ত জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিজড়ের তাণ্ডবে ভেঙে যায় বেড়িবাঁধ, ডুবে যায় বসতবাড়ি, উড়ে যায় বাড়ি-ঘর । ক্ষতি হচ্ছে ফসলি জমি, বিলীন হচ্ছে চিংড়ি ঘের। ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর আঘাতে আবারো ক্ষতবিক্ষত হয়ে পড়ে উপকূলীয় পোকখালী ইউনিয়নের গোমাতলীর বেড়িবাঁধ।
পাউবো সূত্র জানায়, পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) এর সেবা কার্যক্রমের (ঙ) অনুচ্ছেদে উপকুলীয় বাঁধ নির্মাণ ও সংরক্ষণ করার কথা সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা থাকলেও সে সেবা থেকে বঞ্চিত পোকখালী ইউনিয়নের গোমাতলীর ১০ গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ।
গত শনিবার ১৬ জুলাই সকালে সরজমিনে গোমাতলী রাজঘাট পাড়া এলাকার প্রায় এক কিলোমিটারের বেশি এলাকা ঘুরে দেখা যায় বেড়িবাঁধ ভেঙে একাকার হয়ে গেছে, আকার ধারণ করেছে সরু রাস্তার মতো, দেখে মনে হয় কোন সীমারেখা বাধ। আর এই বাধ এতই দূর্বল হয়েছে সমুদ্রের ঢেউকে বাধা প্রদান করাতো দূরের কথা যার উপর দিয়ে চলাফেরা করাও অসম্ভব হয়ে পড়েছে। দেখা গেছে কোন কোন স্থানে আবার পুরোটাই ভেঙে সাবাড় ।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, অতিরিক্ত জলোচ্ছ্বাস আর ঘূর্ণিঝড়ের সতর্ক বার্তা যখন তারা শুনে তখন বেচে থাকার আশা প্রায় ছেড়ে দেয়। অনেকে আবার জীবন রক্ষার্থে পাড়ি জমায় অন্যত্রে। তবে এখন সে ভয় তাদের মধ্যে আর আগের মতো কাজ করেনা এ যেন তাদের অভ্যাসে পরিনত হয়েছে।
জানাযায়, ১৯৯১ সালের জলোচ্ছ্বাসের পর সৌদি আরব সরকারের অর্থায়নে নির্মিতি এই বেড়িবাঁধের এ পর্যন্ত আর কোন বড় ধনের সংস্কার করা হয়নি। বন্যা বা জলোচ্ছ্বাসের পর ভাঙনকৃত বাধ কোন রকম মেরামত করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। কিন্তু তা স্থায়ী না হওয়ায় বারবার এ অবস্থার সম্মুখীন হতে হয় তাদের। তারা স্থায়ী ও টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে গোমাতলীবাসির বসবাস নিচ্ছিত করার দাবী জানান।
পাঠকের মতামত: