ঢাকা,শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

টেকনাফে র‌্যাব অভিযান: শীর্ষ ডাকাত আবদুল হাকিমের দুই সহযোগী আটক : ১৭টি অস্ত্র, ৪৩৭টি গুলি উদ্ধার

TEKNAF PIC 07.08.2017 (R1)গিয়াস উদ্দিন ভুলু, টেকনাফ ॥

টেকনাফের গহীন পাহাড়ে র‌্যাব সদস্যদের সাঁড়াশি অভিযান ১৭ টি দেশীয় তৈরি অস্ত্র ও ৪৩৭ টি গোলাবারুদ উদ্ধার। শীর্ষ আলোচিত রোহিঙ্গা ডাকাত আব্দুল হাকিমের দুই সহযোগীকে আটক। ৭ আগষ্ট সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে টেকনাফ পৌরসভার পুরান পল্লান পাড়া এলাকার গহীন পাহাড়ে র‌্যাব-৭ কক্সবাজার ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার মেজর রুহুল আমিনের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। প্রায় দুই থেকে তিন ঘন্টার এ অভিযানে র‌্যাব সদস্যরা শীর্ষ ও আলোচিত রোহিঙ্গা ডাকাত আবদুল হাকিমের দুই সহযোগীকে দুইটি দেশীয় তৈরি পিস্তলসহ আটক করতে সক্ষম হয়েছে। আটককৃতরা হচ্ছে, পুরান পল্লান এলাকার মিয়ানমারের নাগরিক ধইল্যার পুত্র মোহাম্মদ ফরিদ (৩৭) ও আবুল হাসেম সর্দারের পুত্র শামসুল আলম (২২)।

ধৃতদের তথ্য অনুযায়ী র‌্যাব-৭ এর মেজর রহুল আমিন তার সদস্যদেরকে নিয়ে গহীন পাহাড় থেকে আরো ১৫ টি অস্ত্রসহ বিপুল পরিমান গুলা বারুদ উদ্ধার করে।

20170807_211108এ ব্যাপারে মেজর রুহুল আমিন জানান, গোপন তথ্যে’র ভিত্তিতে টেকনাফ উপজেলা এলাকা থেকে রোহিঙ্গা ডাকাত আবদুল হাকিমের সহযোগী শামসুল আলমকে তার সাথে থাকা একটি পিস্তলসহ আটক করা হয়। এরপর তার তথ্য অনুযায়ী পাহাড়ের ঢালুতে বসবাসরত একটি বাড়ী থেকে অপর সহযোগী ফরিদ আলমকে আটক করতে সক্ষম হয়। পরে তাদের স্বীকারোক্তিমতে গহীন পাহাড়ে অভিযান পরিচালনা করে ১৫টি দেশীয় তৈরি শুটার গান এবং ৪৩৭ টি গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। আটকৃতদের কক্সবাজার র‌্যাব-৭ দপ্তরে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে থানায় সোপর্দ করা হবে। তিনি আরো জানান, শীর্ষ রোহিঙ্গা ডাকাত আবদুল হাকিম ও তার সহযোগীদের ধরতে আমাদের র‌্যাব সদস্যদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। সম্প্রতি টেকনাফ থেকে রোহিঙ্গা ডাকাত আব্দুল হাকিমের শ্যালক ও অস্ত্রসহ কয়েকজনকে আটক করেছিল আইন-শৃংখলাবাহিনী।

উল্লেখ্য যে, মিয়ানমারের রাশিদং থানার বড় ছড়া গ্রামের জানি আলীর ছেলে আব্দুল হাকিম। দীর্ঘ ৯ বছর আগে মিয়ানমার পুলিশ তার এক ভাইকে সেখানে মেরে ফেলে। এরপর তিনি সেখান থেকে শাহপরীরদ্বীপ পালিয়ে আসে। শাহপরীরদ্বীপের বাজারপাড়ার মৃত নজির আহমদের ছেলে আব্দুল জলিলের বাসায় বসবাস করত। সেই সময় জলিলের নেতৃত্বেই গরু চুরি করত ডাকাত আবদুল হাকিম। একদিন গরু চুরির সময় তাকে জনতা আটক করে গনপিটুনি দেয়। এরপর তিনি সেখান থেকে টেকনাফ পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের পুরাণ পল্লান পাড়ায় এসে বসতি স্থাপন করে। এরপর থেকেই শুরু হয় আবদুল হাকিমের সন্ত্রাসী কার্যক্রম। খুন, ডাকাতি, নারী নির্যাতন ও মাদক পাচারসহ বিভিন্ন অপরাধ চালিয়ে শীর্ষ ডাকাত হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। তার নেতৃত্বে তৈরী হয় একটি বিশাল বাহিনী। এই বাহিনী একের পর এক বেশ কয়েকটি হত্যাকান্ড সংঘটিত করে এই এলাকায়। পরিশেষে ডাকাত আবদুল হাকিম টেকনাফ সদর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য ও সদর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি সিরাজ মেম্বারকেও নির্মম ভাবে হত্যা করে। সেই হত্যার প্রধান আসামী হচ্ছে ডাকাত আবদুল হাকিম।

পাঠকের মতামত: