টেকনাফে চলতি রবি ২০১৬-১৭ ইং মৌসুমে নিবিড় রবি ফসলের জাত ভিত্তিক আবাদ অগ্রগতি হয়েছে। চলতি মৌসুমে টেকনাফ উপজেলায় ১ হাজার ৮’শত ১৯ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ফসল চাষ করা হয়েছে। তম্মধ্যে নতুন ফসল হিসেবে ৮ হেক্টর জমিতে বাদামের চাষ করে সফল হয়েছে কৃষকরা। পাশাপাশি অন্যান্য ফসলও চাষ করে লাভবান হয়েছেন। আগে বিভিন্ন উপজেলা থেকে শাক-সবজি, তরি-তরকারি টেকনাফের চাহিদা মেটানোর জন্য আনা হতো। বর্তমানে টেকনাফের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বিভিন্ন উপজেলায় বিভিন্ন তরি তরকারি বিক্রি করছে কৃষকরা।
এবছর আবহাওয়া অনুকূল, কৃষি উপকরন সহজলভ্য ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কারিগরি সহযোগীতায় কৃষকরা সাফল্যের মুখ দেখেছে বলে কৃষকদের কাছ থেকে জানা গেছে।
উপজেলায় সবচেয়ে বেশী প্রায় ৫৬০ হেক্টর জমিতে পান চাষ করেছে টেকনাফের কৃষকরা। এর পরে রয়েছে মরিচ ও ভূট্টা চাষ। ৪১০ হেক্টর জমিতে এই দূই ফসলের চাষ করা হয়। টেকনাফ উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, টেকনাফ উপজেলার ৬ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার প্রতিটি গ্রামে বিভিন্ন জাতের ফসল উৎপাদন করা হয়েছে। তম্মধ্যে সেন্টমার্টিন, সাংবারং ও টেকনাফ সদর ইউনিয়নে কয়েক চাষী নতুন ফসল হিসেবে বাদাম চাষ করে সফলতা পেয়েছে।
তাছাড়া মুলা, লাল শাক, বেগুন, টমেটো, ফুলকপি, বাধাকপি, সীম, লাউ, বরবটি, ঢেড়স, মিস্টি কুমড়া, করলা, ফ্রান্সবিন, পালংশাক, আলু, মিঃ আলু, আখ, ফেলন, পিঁয়াজ, রসুন, ধনিয়া, তরমুজ, খিরা ও ব্যাঙ্গী চাষ করে স্থানীয় চাহিদা অনেকটা পূরন করতে সক্ষম হয়েছে চাষীরা। এখনো অনেক ফসল ক্ষেতে রয়ে গেছে। টেকনাফের নতুন পল্লান পাড়ার মোঃ উসমান জানান, সে ৪০ শতক জমিতে কৃষি অফিসের দিক নির্দেশনায় বাধা কপির চাষ করেছে। এতে ১৮ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ করে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত পেয়েছে। তিনি আরো জানান, নিবীড় পরিচর্যা, ঠিকমত কৃষি উপকরন সহজভাবে পাওয়া এবং উপসহকারি কৃষি অফিসারদের সঠিক পরামর্শের কারণে ফসল চাষে লাভবান হয়েছেন। তিনি আগামী বছর আরো বেশী জমিতে বাধা কপি চাষের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
অপর এক চাষী সাবরাং ইউনিয়নের কাটাবুনিয়া এলাকার মোঃ ইসলাম জানান, সে ১২০ শতক জমিতে শুধু টমেটো চাষ করেছে। প্রচুর ক্ষেত হয়েছে। এখন সে টমেটো তুলে বাজারে বিক্রি করছেন। বাজারে টমেটোর প্রচুর চাহিদা থাকায় দামও বেশ পাওয়া যাচ্ছে। এক কেজি টমেটোর দাম ৩০ থেকে ৪০ টাকা। এই দাম অব্যাহত থাকলে প্রায় ৮ লক্ষ টাকা পর্যন্ত টমেটো বিক্রি করে পাওয়া যাবে বলেও তিনি জানান।
টেকনাফ উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি অফিসার শফিউল আলম কুতুবী জানান, টেকনাফে মাঠি যে কোন চাষের জন্য অত্যন্ত ভাল ও উপযোগী। এবছর আবহাওয়া অনুকুল থাকায় প্রতিটি ফসল ভাল ফলন হয়েছে। পাশাপাশি কৃষি উপকরণ সহজলভ্য হিসেবে পেয়েছে। এছাড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে কৃষকদেরকে কারিগরি সহযোগীতা দিয়েছে। ফলে কৃষকরা ভাল ফসল উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছে।
পাঠকের মতামত: