ঢাকা,সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪

জেলায় সিএনজি অটোরিক্সা খাতে সরকার বছরে প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে

ওমর ফারুক হিরু, কক্সবাজার :: বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) হিসাব অনুযায়ী, কক্সবাজারে লাইসেন্সধারী তিন চাকার সিএনজি অটোরিক্সার সংখ্যা ৬ হাজার ৪৭। আর লাইসেন্স বিহীন সিএনজি গাড়ি আছে সাড়ে ৯ হাজার। এই সাড়ে ৯ হাজার গাড়ি অবৈধভাবে চলায় প্রতিবছর ১৮ কোটি ৩৭ লাখ ৪৯ হাজার টাকা রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। অভিযোগ রয়েছে, ট্রাফিক বিভাগ, বিআরটিএ সহ বিভিন্ন মাধ্যমকে ম্যানেজ করে রাস্তায় চলাচলের সুযোগ পাচ্ছে গাড়িগুলো।
বিআরটিএ সহ বিভিন্ন মাধ্যম থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, একটি সিএনজি লাইসেন্স করতে ব্যাংকে জমা দিতে হয় ১২ হাজার ১০১ টাকা। নাম্বার পাওয়ার পরে রুট পারমিটের (সড়কে চলাচলের অনুমতি) জন্য জমা দিতে হয় ১১ শত ৪ টাকা। এছাড়া বছরে নবায়নের ক্ষেত্রে ফিটনেস সার্টিফিকেট বাবদ জমা দিতে হয় ২ হাজার ৬৬৭, টেক্স টোকেন বাবদ দিতে হয় ৩ হাজার, ইন্সুরেন্স বাবদ ৪৭০ টাকা। সবমিলিয়ে পুন:নবায়ন সহ প্রতিটি গাড়িতে রাজস্ব দাঁড়ায় ১৯ হাজার ৩৪১ টাকা। এসব টাকা জমা দেওয়া হয় ইসলামী ব্যাংক, সোস্যাল ব্যাংক ও আল-আরাফা ব্যাংক। সেইক্ষেত্রে হিসাব অনুযায়ী রিনিউ খরচ সহ সাড়ে ৯ হাজার গাড়ির রেজিষ্ট্রেশনে খরচ দাঁড়ায় ১৮ কোটি ৩৭ লাখ ৪৯ হাজার টাকা।
স্থানীয় একাধিক সূত্রমতে, বিআরটিএর হিসাবের বাইরে কক্সবাজার সদর, টেকনাফ, উখিয়া, রামু, চকরিয়া, পেকুয়া, কুতুবদিয়ায় ও মহেশখালীতে প্রায় ৮০ টির অধিক সিএনজি স্ট্যান্ড রয়েছে। প্রতিটি স্ট্যান্ডে ১৫০ করে হলেও ১২ হাজার সিএনজি রয়েছে। সেই ক্ষেত্রে রাজস্ব ফাঁকির অংক দাঁড়ায় আরো অনেক বেশি।
এ বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কক্সবাজার জেলা শাখার সভাপতি প্রফেসর এমএ বারী বলেন, উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশে এত টাকা রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ কোন ভাবেই মেনে নেওয়া যায়না। এটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা ছাড়া কিছুই নয়। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে এই সমস্যা সমাধান করে পর্যটন নগরীকে এত বড় ক্ষতি থেকে রক্ষা করা জরুরী হয়ে পড়েছে।
জেলা আইনজীবি সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আওয়ামীলীগের নেতা এডভোকেট আব্বাস উদ্দিন চৌধুরী জানান, রাস্তায় ঠিকই সাড়ে ৯ হাজার সিএনজি চলছে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে। আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী সহ বিভিন্ন মাধ্যমকে ম্যানেজ করেই এই অপকর্ম চালছে। এই অন্যায় মেনে নেওয়া যায়না। গাড়িগুলো বৈধতার আওতায় আনলে রাজস্ব রক্ষার পাশাপাশি রক্ষা পাবে সড়কের শৃংখলা।
এ ব্যাপারে বিআরটিএ কক্সবাজার সার্কেল সহকারী পরিচালক (ইঞ্জি:) উথোয়াইনু চৌধুরী জানান, বর্তমানে রেজিষ্ট্রেশন সম্পন্ন গাড়ির সংখ্যা ৬ হাজার ৪৭ টি। রেজিস্ট্রেশন ছাড়া রয়েছে সাড়ে ৯ হাজার। তার মধ্যে নষ্ট রয়েছে ১২০০।
নতুন লাইসেন্স বন্ধের ব্যাপারে তিনি বলেন, ২০১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর থেকে বন্ধ রয়েছে নতুন লাইসেন্স প্রদান। তবে নতুন লাইসেন্স করার জন্য উধ্বতন কর্তৃপক্ষের বরাবরে একাধিকবার আবেদন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে এ নিয়ে বেশ কয়েকটি মিটিংও হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, নতুন লাইসেন্স প্রদান প্রক্রিয়া শুরু হবে।

পাঠকের মতামত: