জেলায় মাধ্যমিক ও নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা প্রায় শেষ হয়েছে। হয়ত বছর শেষের আগে পিএসসি, জেএসসি ও বিভিন্ন শ্রেণীর বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফলও প্রকাশ হবে। কিন্তু এরই মধ্যে বই প্রকাশকরা নতুন শিক্ষাবর্ষে গাইড বই বিক্রিতে উঠেপড়ে লেগেছেন। প্রকাশকদের প্রতিনিধিরা জেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে গাইড বই বিক্রিতে প্রধান শিক্ষকদের সাথে চুক্তি করতে বিভিন্ন প্রলোভন দেখাচ্ছেন। এব্যাপারে সচেতন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। জানা যায়, নতুন শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের টার্গেট করে ইতিমধ্যেই লেকচার, নবপুথিঘর, পাণ্জেরী, নবদূত, অনুপম, গুরুগৃহ, জুপিটার, হাসান বুক হাউস, পপি পাবলিকেশনসহ বেশ কয়েকটি বই প্রকাশনা প্রতিষ্টান বিষয় ভিত্তিক প্রথম থেকে নবম শ্রেণী পর্যন্ত গাইড বই প্রকাশ করেছে। শ্রেণী ভিত্তিক বাংলা ও ইংরেজী ব্যাকরণ, ইতিহাস, হিসাব াবজ্ঞান, গণিত, বাংলা, ইংরেজী, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, ধর্ম, কম্পিউটার শিক্ষা, ব্যবসায় উদ্দ্যোগ, পদার্থ বিজ্ঞানসহ বিষয় ভিত্তিক গাইড বই বাজারজাত করণে প্রকাশক প্রতিনিধিরা প্রধান শিক্ষকদের কাছে ধরণা দিচ্ছেন। অনেক প্রকাশকদের সাথে ডোনেশনের নামে অর্থনৈতিক চুক্তিও করা হচ্ছে। অসমর্তিত সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয় প্রতি প্রকাশকদের পক্ষ থেকে ৫০ হাজার থেকে এক-দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত ডোনেশন দেয়া হচ্ছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংখ্যার উপর ডোনেশনের পরিমাণ নির্ভর করে বলেও জানা যায়। অভিযোগ রয়েছে প্রধান শিক্ষক ছাড়াও বিষয় ভিত্তিক শিক্ষকদের সাথেও গাইড বই চালানোর শর্তে বিক্রয় প্রতিনিধিরা পৃথকভাবে চুক্তি করছেন। বিভিন্ন লাইব্রেরী ঘুরে জানা গেছে, সরকারী নীতিমালা অনুযায়ী পৃষ্টাভেদে ২০০ টাকা দামের একটি গাইডের দাম ৬৭৫ টাকা পর্যন্ত ধরা হয়েছে। শুধুমাত্র ডোনেশন প্রথার কারণে প্রকাশকরা দ্বিগুণ বা তিনগুণ দাম বেশী ধরছেন বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীও অভিভাবকদের। এখন গাইড প্রথা এমন পর্যায় পৌঁছেছে যে, প্রথম থেকে দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরাও গাইড বই নিয়ে বিদ্যালয়ে আসছে। আবার অনেক শিক্ষকরাও শ্রেণী কক্ষে গাইড বই পড়াচ্ছেন। অন্যদিকে বিভিন্ন পাবলিক ও ভর্তি পরীক্ষাকে পুঁজি করে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের কতিপয় শিক্ষক কোচিং বানিজ্যে মাতোয়ারা হয়ে পছন্দের গাইড কিনতে শিক্ষার্থীদের বাধ্য করছেন। কয়েক শিক্ষার্থীর অভিযোগ অনেক শিক্ষক প্রাইভেট-কোচিং বাণিজ্যে ব্যস্ত থাকায় নিজেরা প্রস্তুতির সময় পান না বলে শ্রেণীকক্ষে গাইড বই পড়ান। সচেতন অভিভাবকদের অভিযোগ, শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল পদ্ধতি প্রয়োগের প্রধান অন্তরায় শিক্ষকদের অতিরিক্ত কোচিং বাণিজ্য ও গাইড বই নির্ভরশীলতা।
পাঠকের মতামত: