ঢাকা,বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪

জেলায় ধান-চাল সংগ্রহে দেখা দিয়েছে সংশয়

ফাইল ছবি।
কক্সবাজার প্রতিনিধি ::

# জেলায় চৌদ্দ হাজার ২৮২ টন ধান-চাল কিনবে সরকার  # ধান ৩০, চাল ৪৩ টাকা

সারা দেশের মতো কক্সবাজারেও চলতি মৌসুমে সরকারিভাবে আমন ধান ও চাল সংগ্রহ শুরু হয়েছে। জেলার কৃষক থেকে ধান ৩০ টাকা ও মিল মালিকদের কাছ থেকে ৪৩ টাকা করে চাল কিনবে সরকার। সরকারি গুদামে সরবরাহ করা চালের মূল্য চালকল মালিকদের নিজস্ব ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে পরিশোধ করা হবে। এতে প্রতি কেজি আমন ধান ৩০ টাকা, প্রতি কেজি আমন সেদ্ধ চাল ৪৪ টাকা ও আমন আতপ চালের দাম ৪৩ টাকা কেজি নির্ধারণ করা হয়েছে। গত ৮ অক্টোবর সরকারের এক আন্তমন্ত্রণালয় সভায় চলতি বছর আমন ধানের সরকারি ক্রয়মূল্য নির্ধারণ করে খাদ্য মন্ত্রণালয়। পরে ২৩ নভেম্বর থেকে ধান ও চাল সংগ্রহের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি আমন মৌসুমে ১৪ হাজার ২৮২ মেট্রিক টন ধান ও চালের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। যারমধ্যে ধান ২ হাজার ৬২৩ মেট্রিক টন। যা ২০২২ সালে ধানের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৪ হাজার ৩০৫ মেট্রিক টন। সেদ্ধ ১৮৬৪ মেট্রিক টন ও আতপ ৯ হাজার ৭৯৫ মেট্রিক টন। সদর থেকে চাল ৭৭১ টন’ ধান ১৫৬ টন, চকরিয়া চাল ২৬৬৯ টন’ ধান ৬৭১ টন, পেকুয়া চাল ৪১৬ টন’ ধান ২৭৪ টন, মহেশখালী চাল ৭০ টন’ ধান ২৬৭ টন, রামু চাল ৩০০৬ টন’ ধান ৩১২ টন, উখিয়া চাল ১৫৯৪ টন’ ধান ৩১৫ টন, টেকনাফ চাল ৬৯০ টন’ ধান ৩৫৭ টন, ঈদগাহ চাল ৫৭৯ টন’ ধান ১৪০ টন এবং কুতুবদিয়া চালের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়নি। তবে ১৩১ মেট্রিক টন ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছেন, জেলায় চলতি মৌসুমে আমনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ ছিল ৭৮ হাজার ৯৩০ হেক্টর।জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ অফিসের উচ্চমান সহকারী নির্মল দাশ বলেন, ‘২৩ নভেম্বর থেকে ধান ও চাল সংগ্রহের কাজ চলছে। কিছু মিল মালিকদের সাথে চুক্তি হয়েছে এবং কৃষকদের সাথে যোগাযোগ হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘১৪ হাজার ২৮২ মেট্রিক চাল ও ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। তারমধ্যে ধান ২ হাজার ৬২৩ মেট্রিক টন, আতপ ৯ হাজার ৭৯৫ মেট্রিক টন এবং সেদ্ধ ১৮৬৪ মেট্রিক টন। ধান ৩০ টাকা, আতপ ৪৩ টাকা এবং সেদ্ধ ৪৪ টাকা করে কেনার জন্য সরকার দাম নির্ধারণ করে দিয়েছেন। তবে মিলাররা বলছে, এ দামে ধান সরবরাহ করা লোকসানের সামিল’।

সরকারি গুদামে চাল সরবরাহে মিলারদের এমন অনীহার বিষয়ে জেলা চালকল মালিক সমিতির সভাপতি ফজল করিম বলেন, ‘সরকার-নির্ধারিত দামের চেয়ে চালের উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় লোকসানের ভয়ে মিলাররা সরকারি গুদামে চাল সরবরাহ করতে আগ্রহী হচ্ছেন না।’

এদিকে কৃষকেরা জানান, ‘সরকারি গুদামে ধান সরবরাহ করতে গেলে দাম কম পাওয়া যায়। এছাড়া টাকা পেতেও বেশি দেরি হয়। এসব কারণেই সরকারি গুদামে চাল সরবরাহে কৃষকদের আগ্রহ নেই।’

জানা যায়, সদরে একটি সেদ্ধ চালের মিল ও ৮ উপজেলায় ৭৫ টি মিল রয়েছে। প্রতি বছর সরকারের দেওয়া দাম নিয়ে চুক্তিভিত্তিতে সরকার চাল ও ধান ক্রয় করেন। কিন্তু চলতি মৌসুমে দুই সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও এখনো সরকারি গুদামে উঠেনি চাল। অন্যদিকে কৃষকরাও ৩০ টাকা দরে ধান দিতে পারবে কি-না তা নিয়ে ও দেখা দিয়েছে সংশয়। ৭৫ টি মিল মালিকদের মধ্যে এখনো অর্ধেকও চুক্তি হয়নি। ফলে লক্ষ্যমাত্রা নিয়েও দেখা দিয়েছে ঘাটতি।

এ ব্যাপারে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা সেল নাম্বারে কয়েকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
প্রসঙ্গত, চলতি মৌসুমে সাত লাখ মেট্রিক টন আমন ধান ও চাল কিনবে সরকার। এরমধ্যে ৪ লাখ টন সিদ্ধ ও এক লাখ টন আতপ চাল এবং ২ লাখ টন আমন ধান কেনা হবে।

পাঠকের মতামত: