ঢাকা,বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

জেলায় জমির উচ্চ মূল্যে বিপাকে লবণ প্রান্তিক চাষীরা

সৈয়দুল কাদের, কক্সবাজার :: লবণ চাষের অধিকাংশ খাস জমি ভূমি দস্যুদের দখলে। এছাড়া জমির উচ্চ মূল্যের কারণে প্রান্তিক চাষীরা লবণ চাষ করতে পারছেন না। মধ্যস্বত্বভোগী ও ফড়িয়ারা উচ্চ মূল্যে জমি লাগিয়ত নিয়ে চাষিদের জিম্মি করে লাভবান হচ্ছেন। যার ফলে চাষীরা পেশা পরিবর্তন করলে তাদের চাষে ফেরানো কঠিন হবে বলে মনে করছেন লবণ সংশ্লিষ্টরা। সরকারি খাস জমি প্রান্তিক চাষীদের ইজরা দিলে উপকৃত হবেন বলে জানালেন চাষীরা।

বিসিক এর লবণ সেলের প্রধান সরওয়ার আলম জানিয়েছেন, মধ্যস্বত্বভোগীরা চাষীদের জিম্মি করে জমির মূল্য বাড়িয়ে দিয়েছেন এই বিষয়টি বিসিক অবগত হয়েছে। আমরা চাই প্রান্তিক চাষীরা লবন চাষ করে লাভবান হউক। জমির মালিকদের কাছ থেকে উচ্চ মূল্যে জমি লাগিয়ত নিয়ে চাষীদের জিম্মি করা কোন ভাবেই সমর্থন যোগ্য নয়। লবন চাষ যোগ্য সরকারি জমি প্রান্তিক চাষীদের ইজরা দেওয়ার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।

বিসিক এর ডিজিএম জানান, জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে একটি কমিটি রয়েছে। মধ্যসত্বভোগী ও ফাঁড়িয়াদের বিষয়টি আমরা ওই কমিটির সভায় উত্থাপন করব। সভায় যে সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হবে তা বাস্তবায়নে কাজ করবে বিসিক। সরকারি খাস জমি ইজারার বিষয়টি জেলা প্রশাসনের বিষয়।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিভীষণ কান্তি দাশ জানিয়েছেন, প্রান্তিক চাষীদের দাবী জেলা কমিটির সভায় উত্থাপন করা হবে। এর বাইরে এখন বলার কিছু নেই। আমরা চাই চাষীরা নির্বিঘ্নে লবন চাষে নেমে পড়ুক। এদিকে জমির উচ্চ মূল্যের কারণে অনেক চাষীই লবণ চাষের নামতে পারেনি। মূলত জমির মালিকদের কাছ থেকে ফঁড়িয়ারা উচ্চ মূল্যে জমি নিয়ে তা চাষীদের লাগিয়ত করে। যার ফলে জমির মূল্য দ্বিগুণ হয়েছে। ভূমিদস্যুরা যা সরকারি খাস জমি অবৈধ দখল করেছে তা ও ফঁড়িয়ারা নিয়ে উচ্চ মূল্যে চাষিদের দেওয়ার চেষ্টা করে। এতে চাষে অনিহার সৃষ্টি হয়েছে চাষিদের মাঝে।

প্রান্তিক চাষি মহেশখালীর হোয়ানকের বাসিন্দা মহিউদ্দিন জানিয়েছেন, ফঁড়িয়াদের কাছ থেকে জমি নিয়ে চাষ করলে আমাদের মোটা অংকের টাকা লোকসান যাবে। এর চাইতে চাষ না করাই উত্তম। আমরা কানি প্রতি ৬৫-৭০ হাজার টাকায় জমি নিয়ে চাষ করতে পারব না। এই সিন্ডিকেটের অবসান হলে চাষীরা দ্রুত চাষে নেমে পড়বে।

বড় মহেশখালীর লবণ চাষী নুরুল ইসলাম জানিয়েছেন, লবনের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত হওয়ায় মধ্যসত্বভোগীরা আরো সক্রিয় হয়ে উঠেছে। যা লবণ শিল্পের জন্য ক্ষতিকর। কোন চাষী লোকসান দিয়ে চাষ করবে না। এছাড়া সরকারি খাস জমিও দখল করে রেখেছে ভূমিদস্যুরা। হোয়ানকে হেতালিয়া মৌজায় অনেক খাস জমি রয়েছে। এতে এক একরও প্রান্তিক চাষিদের হাতে নেই। সব জমিই ভূমিদস্যুরা ফঁড়িয়াদের কাছে উচ্চমূল্যে লগিয়ত করেছে। যার ফলে আমরা অসহায়।

লবণ পরিবহনে জড়িত একজন ট্রলার মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, সব জমি ফঁড়িয়াদের হাতে থাকায় আমরাও তাদের কাছে জিম্মি। যার ফলে আমরা সরাসরি প্রান্তিক চাষীদের কাছে লবন ক্রয় করতে যেতে পারি না। আমরাও অসহায়। লবণ শিল্প ফঁড়িয়া মুক্ত হলে চাষে গতি সঞ্চার হবে।

পাঠকের মতামত: