শাহেদ মিজান,কক্সবাজার :
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এড. সিরাজুল মোস্তফা বলেছেন, শৈবাল হোটেল কক্সবাজারের সাধারণ মানুষের সম্পদ। যাদের পাঁচতারকা মানের হোটেলে গিয়ে বিনোদন করার সামর্থ্য তাদের একমাত্র ঠিকানা শৈবাল। শৈবালের মনোরম পরিবেশ, স্বচ্ছ জলের দিঘী, ডাহুকের সুমধুর ডাক আমরা সাধারণ কক্সবাজারবাসী আর কোথাও পাবো না। এই শৈবাল রক্ষায় প্রয়োজন হলে জীবন দেবো। তবুও আমরা শৈবালকে ওরিয়ন গ্রুপের হাতে তুলে দিতে দেবো না। মঙ্গলবার দুপুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে শৈবাল হোটেল ইস্যুতে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘মা-বাবা গরীব হলেও নিজ সন্তানকে বিক্রি বা দত্তক দেয় না। শৈবাল হচ্ছে আমাদের সন্তানের মতো। আমরা এই শৈবালকে কারো কাছে বিক্রিও করবো না, দত্তকও দেবো না। আমাদের অনুরোধ থাকবে ক্রমান্বয়ে বর্তমান অবকাঠামো ও পরিবেশ অক্ষুন্ন রেখে শৈবালকে আধুনিকায়ন ও উন্নত করা হোক। শৈবালের চারিদিক উন্মুক্ত ঘোষানা করা হউক।’
এড. সিরাজুল মোস্তফা আরো বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজারকে অনেক ভালোবাসেন। এই জন্য তিনি কক্সবাজারের অনেক উন্নয়ন করে যাচ্ছেন। এই উন্নয়নের ধারায় ৫/১০ কিলোমিটারের কক্সবাজার শহর যেন ঝঞ্জাট হয়ে না যায়। বিদেশীরা শহরের বাইরে পর্যটন সম্প্রসারণমূলক কাজ করছে। কিন্তু দেশীরাই শহরের দিকে নজর রেখে দিয়েছেন। এটা পরিবর্তন করতে হবে। না হয় এক সময় শহরটাই বসবাসের অযোগ্য যাবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘শৈবাল রক্ষা এখন কক্সবাজারবাসীর প্রাণের দাবি। আমরা রাজনীতি করি জনগণের জন্য, দেশের জন্য। শৈবালের জমি কক্সবাজারে বাণিজ্যমেলা, ইজতেমা ও গাড়ি পার্কিসহ জনউন্নয়নমুলক আরো অনেক উপকারে আসছে। এমন পরিস্থিতিতে জনগণের ক্ষতি করে সেখানে বড় হোটেল হতে যায় না। এটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের আকুল আবেদন।’
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বেসমারিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী একেএম শাহজাহান কামাল। উপস্থিত ছিলেন উক্ত আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন, কক্সবাজার সদর-রামু আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লে. কর্ণেল (অব.) ফোরকান আহমেদ, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব এস.এম গোলাম ফারুক, পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান আকতারুজ্জামান কবির, সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান মো. নাঈম হাসান, জেলা আওয়ামী লীগে সভাপতি এড. সিরাজুল মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান চেয়ারম্যান, ওরিয়ন গ্রুপের পরিচালক লে. জেনারেল শাব্বির আহমদ, জেলা জাসদের সভাপতি নঈমুল হক চৌধুরী টুটুল, কক্সবাজার সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আবু তাহের। এছাড়াও কক্সাজারের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় উপস্থিত কক্সবাজারের শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিরা বিবাদমান শৈবাল ইস্যু নিয়ে তাদের প্রতিক্রিয়া তুলে ধরেন। সবাই তীব্র বিরোধিতা করে কক্সবাজারের এই অমূল্য সম্পদকে বিতর্কিত ওরিয়ন গ্রুপের হাতে তুলে না দিতে আহ্বান জানান। আলোচনার সভার পরে মন্ত্রীসহ প্রতিনিধিদল শৈবাল হোটেলসহ পুরো এলাকা পরিদর্শন করেন।
পাঠকের মতামত: