ঢাকা,শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আ:লীগের প্রার্থী বাছাই সেপ্টেম্বরে : একনজরে সম্ভাব্য প্রার্থীরা

ডেস্ক রিপোর্ট :: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া সেপ্টেম্বরে শুরু করতে চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ৩০০ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের বিষয়ে তৃণমূল নেতাদের মতামত সংগ্রহ করবে কেন্দ্র। মূলত নির্বাচনী আমেজ সৃষ্টি ও সরকারবিরোধী আন্দোলন থেকে দৃষ্টি ফেরাতে তফসিল ঘোষণার আগেই প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে জানিয়েছেন দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা।

আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন বোর্ডের একাধিক সদস্য আলাপকালে জানান, কয়েক দিনের মধ্যে আওয়ামী লীগের কেন্দ্র থেকে দলটির সব সাংগঠনিক জেলায় এমপি মনোনয়নপ্রত্যাশীদের তালিকা আহ্বান করে চিঠি দেওয়া হবে। জেলা কমিটির নেতারা আবার সংশ্লিষ্ট উপজেলা ও ইউনিয়নের সঙ্গে বৈঠক করে প্রতিটি আসনে সর্বোচ্চ তিনজন করে প্রার্থীর তালিকা কেন্দ্রে পাঠাবে। তৃণমূলের এই তালিকা যাচাই-বাছাই শেষে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করবেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় জড়িত নেতারা জানিয়েছেন, প্রার্থীর জনপ্রিয়তা, তৃণমূলের দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক এবং প্রার্থীর সামাজিক সক্ষমতা মোটা দাগে এই তিন যোগ্যতা থাকলে একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকা মার্কা নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা যাবে। প্রতি চার মাস অন্তর অন্তর জরিপের ফল আসছে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার কাছে। সকল জরিপের ফল ও তৃণমূলের নেতাদের মতামতের সমন্বয়ে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হবে।

এদিকে আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো জানায়, আওয়ামী লীগের ব্যর্থ, বিতর্কিত, জনবিচ্ছিন্ন, দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্কহীন সংসদ সদস্যদের আগামী নির্বাচনে আবার মনোনয়ন দেওয়া নাও হতে পারে। ওই আসনগুলোয় যাঁরা ভোট টানতে পারবেন, সাধারণ মানুষের কাছে যাঁদের গ্রহণযোগ্যতা ও পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি আছে এমন প্রার্থীদের মনোনয়ন দেওয়া হবে। বেশ কিছু আসনে অধিকতর যোগ্য প্রার্থীদের সুযোগ দিয়ে দলের বিজয়ের সম্ভাবনা বাড়াতেও প্রার্থী পরিবর্তন করবে আওয়ামী লীগ। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একটি নির্বাচনে জয় নিশ্চিত করতেই এ পরিবর্তন আনবে ক্ষমতাসীন দলটি।

কক্সবাজারের ৪টি সংসদীয় আসনে আ.লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী যারা

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে এরই মধ্যে জেলার ৪টি সংসদীয় আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী সম্ভাব্য প্রার্থীদের পক্ষে জোর তৎপরতা চালাচ্ছেন আওয়ামী লীগের মাঠ পর্যায়ের কর্মী সমর্থকরা। কক্সবাজারের সংসদীয় ৪টি আসনের ৩টিই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও ১টি জাতীয় পার্টির দখলে।

আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা, একাধিক সূত্র এবং একাধিক সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবার জেলায় কয়েকজন সংসদ সদস্য মনোনয়ন-ঝুঁকিতে পড়ে গেছেন।কারন সরকারি সংস্থাগুলোর প্রতিবেদনে জেলার এসব এমপির বিরুদ্ধে অপকর্ম, জন-অসন্তোষ, দলীয় নেতাকর্মীদের ক্ষোভসহ নানা নেতিবাচক তথ্য উঠে এসেছে।

কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া):

জেলার চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলা নিয়ে কক্সবাজার-১ আসন গঠিত।এ আসনের ভোটার সংখ্যা তিন লাখ ৬০ হাজার ৬২২ জন।এর মধ্যে চকরিয়ায় দুই লাখ ৬২ হাজার ২৬৮ জন এবং পেকুয়ায় ৯৭ হাজার ৩৫৪ জন।

এদের মধ্যে চকরিয়ায় পূরুষ ভোটারের সংখ্যা এক লাখ ৩৬ হাজার ২৪০ জন এবং মহিলা ভোটারের সংখ্যা এক লাখ ২৭ হাজার ২৮ জন।আর পেকুয়ায় পূরুষ ভোটারের সংখ্যা ৫০ হাজার ৩২৩ জন এবং মহিলা ভোটারের সংখ্যা ৪৭ হাজার ৩১ জন।

এ আসন থেকে সম্ভাব্য প্রার্থী আলোচনায় রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন আহমদ সিআইপি, বর্তমান চকরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলম,  সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রেজাউল করিম, জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য রাশেদুল ইসলাম ও জেলা আওয়ামী লীগের মানব সম্পদবিষয়ক সম্পাদক ও সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চট্টগ্রাম বিভাগীয় আহ্বায়ক ড. আশরাফুল ইসলাম সজিব ও কক্সবাজার জেলা আ.লীগের পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক, জেলা পরিষদ সদস্য লায়ন কমর উদ্দিন।

এদের মধ্যে সালাউদ্দিন আহমদ সিআইপি অতীতে একাধিকবার দলীয় মনোনয়ন পেয়েও নির্বাচিত হতে পারেননি। দলীয় নেতা হিসেবে গুরুত্ব থাকলেও তার জনসম্পৃক্ততা তেমন নেই। জাফর আলম অতীতে একাধিকার দলীয় টিকেট দাবি করলেও মনোনয়ন বঞ্চিত হন। তাই কখনো সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়া সম্ভব হয়নি।আর গত চকরিয়া উপজেলা নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন জাফর আলম। তবে মনোনয়ন পেলে তার জয়ের সম্ভাবনা উজ্জল। তাছাড়া রেজাউল করিম বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান তাই প্রত্যেক ইউনিয়নে গণসংযোগ করছেন। পাশাপাশি ইউনিয়ন- ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের সাথে নিজের লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন। এরই মধ্যে জন সমর্থন বাড়াতে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।আর তরুণ নেতা হিসেবে ড. আশরাফুল ইসলাম সজিব তরুণ এর জনপ্রিয়তা রয়েছে।

এছাড়াও আগামী নির্বাচনে এ আসন নিয়ে দলীয় প্রধানের দূরদর্শী চিন্তাধারাও রয়েছে বলে ধারণা করছেন শীর্ষ নেতারা। দক্ষ সংগঠক ও ক্লিন ইমেজের জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাশেদুল ইসলাম। দুঃসময়ে দলের পাশে দাঁড়ানোর জন্য তৃণমূল থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছেও গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে তার। দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা তাকে একবার মহাজোট থেকে মনোনয়নও দেন।

কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া):

সাগর বেস্টিত দুই দ্বীপ মহেশখালী ও কুতুবদিয়া উপজেলা নিয়ে কক্সবাজার-২ আসনের ভোটার সংখ্যা দুই লাখ ৭৬ হাজার ৪৩৬জন।এর মধ্যে মহেশখালীতে এক লাখ ৯৫ হাজার ৯৩২জন এবং কুতুবদিয়ায় ৮০ হাজার ৫০৪ জন।

এদের মধ্যে মহেশখালীতে পূরুষ ভোটারের সংখ্যা এক লাখ এক হাজার ২৭১ জন এবং মহিলা ভোটারের সংখ্যা ৯৪ হাজার ৬৬১ জন।আর কুতুবদিয়ায় পূরুষ ভোটারের সংখ্যা ৪১ হাজার ৭৯৭ জন এবং মহিলা ভোটারের সংখ্যা ৩৮ হাজার ৭০৭ জন।

এ আসনে দলীয় প্রার্থীকে বিজয় করতে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে আওয়ামী লীগ। কারণ দেশের মধ্যে মহেশখালীতে সব চেয়ে বেশি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ যাচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকার।

এ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায় রয়েছেন বর্তমান সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. সিরাজুল মোস্তফা,জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ড. আনছারুল করিম ও সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা ওসমান গণি,আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রাণবিষয়ক উপ কমিটির সহ সম্পাদিকা ইঞ্জি. ইসমত আরা ইসমো।

এর মধ্যে অ্যাড. সিরাজুল মোস্তফা ও ড. আনছারুল করিম অতীতে দলীয় টিকেট পেয়েও সংসদে যেতে ব্যর্থ হয়েছেন। আর ওসমান গণি নিজেকে জনগণের কাছে তুলে ধরার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আর ভোটবিহীন নির্বাচিত হলেও তরুণ সাংসদ হিসেবে আশেক উল্লাহ রফিক পুনরায় মনোনয়ন পাওয়ার জন্য জোর তৎবির চালিয়ে যাচ্ছেন।

কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু):

জেলার গুরুত্বপূর্ণ কক্সবাজার সদর ও রামু উপজেলা নিয়ে কক্সবাজার-৩ আসনের ভোটার সংখ্যা তিন লাখ ৮১ হাজার ৭৬৫ জন।এর মধ্যে সদরে ২লাখ ৩৪হাজার ৭৫৯ জন এবং রামুতে ১লাখ ৪৭ হাজার ছয় জন।

এদের মধ্যে সদরে পূরুষ ভোটারের সংখ্যা এক লাখ ২২ হাজার ৫০৮ জন এবং মহিলা ভোটারের সংখ্যা এক লাখ ১২ হাজার ২৫১ জন।আর রামুতে পূরুষ ভোটারের সংখ্যা ৭৫ হাজার ১৮১ জন এবং মহিলা ভোটারের সংখ্যা ৭১ হাজার ৮২৫ জন।

এ আসন থেকে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে আলোচনায় রয়েছে বর্তমান সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী কানিজ ফাতেমা আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সদ্য নির্বাচিত কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনিন সরওয়ার কাবেরী,রামু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোহেল সরওয়ার কাজল ও কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক) চেয়ারম্যান লে. কর্ণেল (অব.) ফোরকান আহমদ।

এর মধ্যে বর্তমান সাংসদ কমলের পরিবারে তিন জন মনোনয়ন প্রত্যাশী। তাই ঘরোয়া বিরোধের জেরে রাজনীতিতে সম্পূর্ণ দুইভাবে বিভক্ত রামুতে বর্তমান সাংসদ কমল নিজেকে তুলে ধরতে এবার সফল নাও হতে পারেন। কারণ ঘরের মধ্যেই ঘোর বিরোধী রয়েছে সাংসদ কমলের বড় ভাই উপজেলা সভাপতি কাজল। আর এ সুযোগ কাজে লাগাতে ভুল করবেন না সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীরা। তাছাড়া ২০০৮ সালের নির্বাচনে দলীয় টিকেট পেয়েও সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল বিএনপির প্রার্থীর কাছে চরম পরাজিত হওয়ার বিষয়টিও আগামী নির্বাচনের মনোনয়নে বিবেচ্য হতে পারে।

এছাড়া সফল নারী নেত্রী হিসেবে কানিজ ফাতেমা আহমেদের দিকে সবুজ সংকেত রয়েছে। তবে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান সদ্য শেষ হওয়া পৌর নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হওয়ায় প্রার্থীর তালিকায় সামনের সারিতে চলে এসেছে।তাছাড়া জনপ্রতিনিধি হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে।

আর বর্তমান কউক চেয়ারম্যান ও সাবেক দক্ষ সেনা কর্মকর্তা লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমদকে দিয়ে আওয়ামী লীগ সেই অভাবটি পূরণ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ ফোরকান আহমদের সম্পর্কে দলীয় প্রধানের বাস্তব ধারণা রয়েছেন। তাই আগামী নির্বাচনে সাবেক সেনা কর্মকর্তা ফোরকান আহমদকেও দলীয় টিকেট দিতে পারেন বলে ধারণা করছেন অনেকে।

এছাড়া বর্তমানে এ আসনে নতুন কিছু প্রার্থীর নাম মনোনয়ন দৌড়ে চলে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।

কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) :

সর্বশেষ রোহিঙ্গা অধ্যূষিত এলাকা উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলা নিয়ে কক্সবাজার-৪ আসনের ভোটার সংখ্যা দুই লাখ ৪৩ হাজার ৮৯৩ জন।এর মধ্যে উখিয়ায় এক লাখ ১০ হাজার ৫৭৯ জন এবং টেকনাফে এক লাখ ৩৩ হাজার ২৯৬ জন।

এদের মধ্যে টেকনাফে পূরুষ ভোটারের সংখ্যা ৬৬ হাজার ৩৯৯ জন এবং মহিলা ভোটারের সংখ্যা ৬৬ হাজার ৮৯৭ জন।আর উখিয়ায় পূরুষ ভোটারের সংখ্যা ৫৫ হাজার ৭৮৮ জন এবং মহিলা ভোটারের সংখ্যা ৫৪ হাজার ৮০৯ জন।

এ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন বর্তমান সাংসদ আব্দুর রহমান বদি, সাবেক সাংসদ ও টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী,জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহ্ আলম ওরফে রাজা শাহ আলম,উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হামিদুল হক চৌধুরী, উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাংগীর কবির চৌধুরী, সরকারের বর্তমান মন্ত্রী পরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের ছোট ভাই এবং উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ শাহ আলম, বাংলাদেশ তাঁতীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যকরি সভাপতি সাধনা দাশ গুপ্তা, কক্সবাজার জেলা যুবলীগের সভাপতি সোহেল আহাম্মদ বাহাদুর ।

দেশের শেষ সীমান্তের উখিয়া-টেকনাফ আসনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর এই অঞ্চলের ইয়াবা ও মানবপাচারের বদনাম মুছতে আওয়ামী লীগ নতুন প্রার্থী দিতে পারে। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিশ্বাস সবদিক বিবেচনা করে এই আসনে প্রার্থী দিতে ভুল করবেন না দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা। অনেকেই বর্তমান সাংসদ বদিকে সরকারের ভাবমুর্তি নষ্টের জন্য দায়ী করেন। আওয়ামী লীগ সরকার দুই মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় ইয়াবা, মানবপাচার ও রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে সবচেয়ে আলোচিত উখিয়া-টেকনাফেন এ আসনটি। ইয়াবা ও মানব পাচারের স্বর্গরাজ্য হিসেবে সারাদেশে আলোচিত এই অঞ্চলটি। সেই বদনাম ঘুচাতে আওয়ামী দলীয় সভানেত্রী সম্প্রতি কক্সবাজারে একটি জনসভায় ইয়াবার বিরুদ্ধে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। সভানেত্রীর এই হুঁশিয়ারি থেকেই অনেকে ধারণা করছেন উখিয়া-টেকনাফ আসনে আওয়ামী লীগে পরিবর্তন আসতে পারে। সেই হিসাবে দলীয় মনোনয়ন পেতে অনেক প্রার্থী নতুন করে তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছেন।

তবে এবারে এ আসনে আওয়ামীলীগ থেকে যাকেই মনোনয়ন দেয়া হোক না কেন, নুতুন মুখ দেখতে চাচ্ছে সাধারন ভোটাররা ।

জানা যায়,২০১৪ সালে বিএনপি জোট নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির জোটসহ অন্যান্য দল নির্বাচনে অংশ নিতে তাদের দলীয় নেতা থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায়ে আলাপ-আলোচনা চলছে।যা কক্সবাজার পৌর নির্বাচন থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগকে সংসদ নির্বাচনে বড়ধরনের প্রতিদ্বন্দিতার মুখোমুখি হতে হবে।আর তাই নির্বাচনকে ঘিরে আওয়ামী লীগ নেতারা সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় নিজেদের সম্পৃক্ত রেখে মনোনয়ন প্রাপ্তির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এসব প্রার্থী ইতিমধ্যে এলাকায় প্রচার-প্রচারণা শুরু করে দিয়েছেন। এলাকায় দলীয় নেতার ছবিসহ নিজের ছবি দিয়ে পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন লাগিয়ে গণসংযোগসহ নানা কর্মকাণ্ড চালাতে যোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা।

১৯৯০ এরশাদ সরকারের পতনের পর ১৯৯১ সালের নির্বাচনে জেলার চারটি আসনের মধ্যে দুইটি বিএনপির, একটি আওয়ামী লীগের ও একটি জামায়াতের ঘরে উঠে।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে মূলত বিএনপি জেলার চারটি আসনের মধ্যে তিনটি আসন লাভ করে।২০০১ সালের নির্বাচনে জেলার চারটি আসনেই বিএনপি জয়ী হয়। ২০০৮ সালের নির্বাচনে দুইটি আসনে বিএনপি, একটিতে আওয়ামী লীগ ও একটিতে জামায়াত জয় লাভ করে।আর সর্বশেষ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারীর একতরফা নির্বাচনে জেলার তিনটি আসন আওয়ামী লীগের ও একটি আসন জাতীয় পার্টির অনুকূলে যায়।

আর আসন্ন একাদশ সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজারের ৪টি আসনই আওয়ামী লীগ ও তাদের জোট দখলে নিতে চায়।তবে সংশ্লিষ্ঠদের মতে আসন্ন একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি জোট নির্বাচনে আসলে এখানকার ৪টি আসনেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে আওয়ামী লীগ জোটের প্রার্থীর সঙ্গে।

পাঠকের মতামত: