ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

ছাত্রলীগ নেতা শওকতের বেদনাবিধুর ফেসবুক স্ট্যাটাস নিয়ে তোলপাড়!

FB_IMG_1501530203540মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া ::
সদ্য ঘোষিত পেকুয়া উপজেলা ছাত্রলীগের ৭১সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে না রাখায় পেকুয়ার রাজপথের ত্যাগী ছাত্রলীগ নেতা শওকত আজ সকালে তার ফেসবুক ওয়াল একটি বেধনাবিধুর স্ট্যাটাস পোস্ট করার পর পরই তোলপাড় শুরু হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে পেকুয়ার রাজপথে সাহসের সাথে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে সরব থাবলেও সদ্য অনুমোদিত পেকুয়া উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটিতে কোন পদে দুরের কথা কমিটিতে তাকে সদস্য পর্যন্তও করা হয়নি। এনিয়ে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুক সমালোচনার ঝড় বইছে।অনেকেই এ নিয়ে ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন। আর এই অভিমানে ক্ষোভে ছাত্রলীগ নেতা শওকত আজ সকালে তার ফেসবুক ওয়ালে একটি বেধনাবিধুর স্ট্যাটাস লিখে পোস্ট করেছেন। সেটি পাঠকদের উদ্দোশ্যে হুবুহু তুলে ধরা হলো:

‘মুছে দিয়ে যাও আমার মায়ের চোখের পানি শ্রদ্ধাভাজন সভাপতি সম্পাদক কক্সবাজার জেলা শাখা!
উত্তর দিয়ে যাও আমাকে করা মায়ের প্রশ্ন, কেন আমাকে ছাত্রলীগের কমিটিতে রাখা হয়নি ?’

কেন জানি সকাল থেকে মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে আছে, মায়ের চোখে পানি দেখে মনটা কেঁদে উঠেছে। আজ থেকে এক সাপ্তাহ আগে থেকে জানতাম আমাকে পেকুয়া উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটিতে রাখা হবে না, তায় একদিন নেতাদের দরবারে তদবির করার জন্য ভোর বেলা উঠে কক্সবাজারের উদ্দ্যোশ্যে রওয়ানা দিই। কক্সবাজার যাওয়ার আগের রাতে আমার সাথে আমার এক বন্ধু ছিল, ভোরে উঠাতে সে ঘুম থেকে জাগেনি। আমি চলে যাওয়ার পরে সে ঘুম থেকে জাগলে মা সকালে খাবার দিয়ে জিঙ্গেস করে আমি কেন ভোরে ভোরে কক্সবাজার গেছি? তখন সে ভুলবসত মা’ কে বলে আমাকে পেকুয়া উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটিতে না রাখার কারণে তদবির করতে গেছি। আমি সাধারণতা কোন ধরণের টেনশন হলে মা’কে বলি না, কারণ মায়ের হাই প্রেশার আছে। সারাদিনের লবিং শেষে রাতে বাসায় ফিরে ফ্রেশ হয়ে যখন খেতে বসি তখন মা টেবিলে খাবার এনে দিয়ে বলল “তুমি যে উদ্দ্যোশ্যে কক্সবাজার গেছো তা সফল হয়েছে? আমি বললাম তুমি কিভাবে জান মা, আমি কেন কক্সবাজার গেছি? তখন মা বলল আমাকে তোমার বন্ধু বলেছে। আমি বললাম মা টেনশন করো না, আল্লাহ্ ভরসা। তখন মা বলল তুমিও চিন্তা করো না, আমি তোমার উদ্দ্যোশ্য যেন সফল হয় সেই জন্যে আল্লাহ্ এর নিকট এক খতম কোরআন শরীফ পড়ে দেওয়ার নিয়ত করেছি। আল্লাহ্ এর উপর ভরসা রাখো, আল্লাহ্ নিশ্চয় তোমার ত্যাগের প্রতিদান দিবে। আমি তখন মা’কে বলেছিলাম তুমি দোয়া করলেই হবে মা।

গতকাল কমিটি পাবলিশ হতে হতে রাত হওয়াতে মা ঘুমিয়ে পড়ে। মা’কে বলা হয়নি আর “মা আমাকে পেকুয়া উপজেলা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে রাখেনি ” তায় মন খারাপ না করে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। কাজে তাড়া থাকার কারণে সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠলে দেখি মা কোরআন পড়তেছে। তখন বেখেয়ালি মন হুট করে বলে দেয় “মা আমাকে কমিটিতে রাখেনি “। কথাটা বলার পরে মায়ের চোখের দিকে তাকাতে দেখি মায়ের চোখ বেয়ে কোরআন শরীফে পানি পড়তেছে। তখন মা’কে বললাম, মা তুমি কান্না করতেছো কেন ? এই দেখো মা তোমার ছেলের মন ভাল! একদম মন খারাপ করেনি, তুমি কেন কান্না করবা মা। তখন মা বলে উঠল, আমার ছেলেটি উপজেলা ছাত্রলীগের ৭১ জন সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে মেম্বারও হওয়ার যোগ্য রাখেনি! তখন আমি চুপ করে মা’য়ের প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে পা ছুয়ে সালাম করে মায়ের হাত খানা মাতায় রেখে বলেছি মা দোয়া করিও, তোমার ছেলে একদিন এর চেয়ে বড় নেতা হয়ে দেখিয়ে দিবে তোমার ছেলে কত যোগ্যতা সম্পূর্ণ ছিল। আর মা তুমি যে এক খতম কোরআন শরীফ পড়ে দেওয়ার নিয়ত করেছো তা পড়ে দিও, আর দোয়া করিও যারা তোমার ছেলের সাথে ষঢ়যন্ত্র করেছে আল্লাহ্ যেন তাদের হেদায়ত দান করে।

পাঠকের মতামত: