ঢাকা,রোববার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

চৌফলদন্ডী-খুরুস্কুল ব্রীজ পর্যটনের অপার সম্ভাবনা

এম.আবুহেনা সাগর, ঈদগাঁও :

ঈদগাঁও-চৌফলদন্ডী-খুরুস্কুলের দৃষ্টিনন্দন ব্রীজ হওয়ার ফলে পর্যটন ও উন্নয়নের অপার সম্ভাবনার দ্বার খুলছে। ফলে চলতি ঈদ মৌসুমে ভ্রমণ পিপাসু দর্শনার্থীদের ভিড় যেন চোখে পড়ার মত। এমনকি দিগন্তরেখায় মহেশখালী চ্যানেলের সৌম্য সুনীলস্বচ্চ জলরাশি, অদূরে বাঁকখালী ও বঙ্গোপসাগরের মিলনমুখ, উপকণ্ঠে সমুদ্র শহর, একটু তফাতে জোয়ার ভাটার অরণ্য ও বৈচিত্রময় জলজীবনের আনন্দ বেদনার দৃশ্যকাব্য। বিস্তীর্ণ লবণক্ষেতের রূপালী শস্যসহ সব মিলিয়ে সমস্ত সম্ভাবনা ও সৌন্দর্য্যর হেলেনিক নান্দনিকতায় আবর্তন করছে চৌফলদন্ডী-খুরুস্কুলের উপকূলঘেরা সাগর নদী চ্যানেলের মোহনা থেকে খোসাডাঙ্গা দিগন্তের অবারিত জলভূমি সমাহার।

তথ্য মতে, কক্সবাজার সড়ক ও জনপদ বিভাগের সার্বিক তত্ত্বাবধানে বহুলাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে দৃষ্টিনন্দন ব্রীজ,  কালের খেয়াঘাট, মালকাবানু-মনুমিয়ার প্রেমের লোকজপুরাণ ও পদচারণাধন্য পূণ্যতীর্থ ওই জনপদে লুকিয়ে রয়েছিল প্রেম-প্রমোদ-পর্যটনের অপার সম্ভাবনা। নির্মিত ব্রীজের উভয় পাশের বৈচিত্রময় জীবন ও জীবিকা, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর অস্থিত্বের লড়াই, জীববৈচিত্র,বিস্তৃত জল প্রান্তের সুপ্ত সম্ভাবনাকে জাগিয়ে দিয়েছে। নির্মিত এই ব্রীজের দু’পাশে যুক্ত হয়েছে জল নির্ভর পর্যটনের আরেক নতুন মাত্রা। চৌফলদন্ডী-খুরুস্কুল ব্রীজের ফলে সুবিধাবঞ্চিত বৃহত্তর জনসংখ্যা অধ্যুষিত এলাকা ও অন্যতম বাণিজ্যিক কেন্দ্র ঈদগাঁও থেকে জেলা শহরের দুরত্ব অনেক কমে গেছে।

এছাড়া কমে গেছে উপকূলীয় এলাকা চৌফলদন্ডী, পোকখালী, ইসলামাবাদ, ইসলামপুর ও ভারুয়াখালীসহ অপরাপর এলাকার গণমানুষের দীর্ঘপথ পরিভ্রমণ করে জেলা শহরে যাতায়াত করার ঝক্কি-ঝামেলা এবং লবণ, কাঠ, চিংড়ি, নাপ্পি ও নানা জাতের মাছের পোনাসহ পণ্য পরিবহন ব্যবস্থায় অর্জিত হবে যুগান্তকারী সাফল্য। ব্রীজের পার্শ্ববর্তী মহেশখালী চ্যানেল,বাঁকখালী ও বঙ্গোসাগরের মিলনমুখ অবধি এবং পূর্বে খুরুস্কুল থেকে চৌফলদন্ডী হয়ে ইসলামপুর পর্যন্ত উপকূলীয় খোসাভাঙ্গা দিগন্তের বিকশিত হবে পর্যটন শিল্প। পর্যটন শিল্পখাতে বৈদেশিক বিপুল বিনিয়োগ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ উপকূলীয় জনপদের জীবনযাত্রায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে এবং চৌফলদন্ডী ব্রীজটি যেন ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য একটি খোরাক বলে আজকের ককসবাজারের প্রতিনিধিকে মত প্রকাশ করেন স্থানীয়রা।

চৌফলদন্ডীর সচেতন মহলের মতে, চৌফলদন্ডী-খুরুস্কুল ব্রীজটি নির্মানের ফলে বৃহত্তর ঈদগাঁও বাসীর ভাগ্যের উন্নয়ন হওয়ার পাশাপাশি শিক্ষা ও যোগাযোগ ক্ষেত্রেসহ মানুষের জীবন যাত্রার মান বৃদ্ধি ও সর্বোপরি সুযোগ সুবিধা সহজলভ্য হয়েছে। নাপ্পি, শুটকি,লবনশিল্প আর নান্দনিক ব্রীজকে ঘিরে পর্যটন এলাকা হিসেবে রুপ নিচ্ছে।

চৌফলদন্ডীর ব্রীজ দেখতে ভ্রমণে আসা লোহাগাড়ার কয়েকজন যুবক জানান,  পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত নোনাজল খ্যাত পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সন্নিকটে সৌন্দর্য্যের আরেকটি মনোমুগ্ধকর স্পট ব্রীজটিও ভ্রমণ পিপাসুদের মাঝে আনন্দদায়ক খোরাক বটে। এটি দেখে সত্যি মন জুড়িয়ে যায়। ব্রীজের দু’পাশের চিত্র যেন অতুলনীয়। এ বহুল প্রত্যাশিত চৌফলদন্ডী-খুরুস্কুল সংযোগ ব্রীজের এক পাশে গেঁথে আছে স্বপ্নময় পর্যটন শিল্প বিকাশের সম্ভাবনা আর অন্যপাশে গ্রামীন জনপদের ও নাগরিক মান উন্নয়ন। যা বদলে দিচ্ছে এতদঅঞ্চলের সমৃদ্ধির মানচিত্রও অর্থ-বাণিজ্যের।

দর্শনার্থীরা জানান, কম খরছে চৌফলদন্ডী ব্রীজসহ আশপাশের দৃষ্টিনন্দন জায়গায় ঘুরে ঘুরে কিছুটা হলেও ভ্রমন করে তৃপ্তি মেটাচ্ছে বৃহত্তর এলাকার প্রত্যান্ত গ্রাম গন্জের লোকজনসহ দুরদুরান্ত থেকে আগত ভ্রমন পিপাসুরা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি ব্রীজের উপর রাত্রীকালীন সময়ে লাইটিং ব্যবস্থাসহ আরো ব্যাপক পরিসরে উদ্যোগ নেয় তাহলে এই ব্রীজ এলাকাটি হতে পারে মিনি পর্যটনের আরেক সৌন্দর্যময় স্পট।

পাঠকের মতামত: