চকরিয়া উপজেলা সরকারি হাসপাতাল সড়কের ফার্মেসী গুলোতে গড়ে তোলা অখ্যাত চিকিৎসকদের চেম্বারকে ঘিরে এখানে দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় হয়ে উঠেছে অন্তত শতাধিক দালাল চক্র। সরকারি হাসপাতালে কিংবা বেসরকারী হাসপাতাল-ক্লিনিকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের কাছে কোন রোগী চিকিৎসা নিতে যেতে পারছেনা এসব দালালদের বাঁধা টপকিয়ে। দিব্যি তাঁরা রোগী নিয়ে টানাটানিতে রপ্ত থাকেন। এমনকি শাররীক বিভিন্ন প্রকার পরীক্ষার জন্য ভাল মানের প্যাথলজি সেন্টার খুঁজতে গেলে সেখানেও বিপাকে পড়েছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা। এ অবস্থার উত্তোলনে সচেতন মহল হাসপাতাল সড়ক থেকে দালাল মুক্ত করতে অভিযান পরিচালনার জন্য ভ্রাম্যমান আদালতের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। ভুক্তভোগী রোগী ও স্বজনদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে কয়েকদিন ধরে চকরিয়া সরকারি হাসপাতাল সড়কে সরেজমিন ঘুরে দেখে এসব তথ্যের সত্যতা মেলেছে।
জানা গেছে, ১৯৯৪ সালে চকরিয়া পৌরসভা প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে চকরিয়া জনপদের আত্মসামাজিক উন্নয়নের পট পরিবর্তন ঘটতে শুরু করে। সময়ের পরিক্রয়ায় চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে স্থানীয় জনগনের পাশাপাশি পাশের উপজেলা মখেশখালী, কুতুবদিয়া, লামা ও আলীকদম থেকে বিপুল পরিমাণ পরিবার এখানে এসে নতুন বসতি স্থাপনের মাধ্যমে জীবনযাত্রা শুরু করে। তার সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নতির কারনে প্রতিদিনই চকরিয়া শহরে বেড়ে চলছে মানুষের বসবাস। এভাবে সরকারি সকল ধরণের সুযোগ সুবিধার মাধ্যমে আত্মসামাজিক উন্নয়নে যেমনি চকরিয়া বদলে যাচ্ছে, তেমনি নতুন নতুন চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান চালুর মাধ্যমে জনগনের সুচিকিৎসা নিশ্চিতের সম্ভাবনা শুরু হয়েছে এ জনপদে।
তবে অভিযোগ উঠেছে, উপজেলা শহরে চিকিৎসাখাতে ব্যাপক অগ্রযাত্রা হলেও এখানে কিছু কিছু অখ্যাত চিকিৎসক ও নিন্মমানের প্যাথলজি সেন্টারের কারনে সফলতা ভেস্তে যেতে চলছে। বিশেষ করে সরকারি হাসপাতাল সড়কের ফার্মেসী গুলোতে দীর্ঘদিন ধরে গড়ে তোলা অখ্যাত চিকিৎসকদের চেম্বারকে ঘিরে চলছে রমরমা চিকিৎসা বাণিজ্য। অভিযোগ রয়েছে, এসব ফার্মেসীতে রোগী বাগিয়ে নিতে বর্তমানে সক্রিয় রয়েছে অন্তত শতাধিক দালাল। প্রায় প্রতিদিনই দালাল চক্রের সদস্যরা ব্যস্ত থাকেন রোগী নিয়ে টানাটানিতে।
ভুক্তভোগী অনেক রোগী ও তাদের স্বজনদের অভিযোগ, তাঁরা সরকারি হাসপাতালে কিংবা বেসরকারী চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের কাছে চিকিৎসা নিতে গিয়ে হরখামেশা দালালদের টানাটানিতে পড়ছেন। এমনকি শাররীক পরীক্ষার জন্য ভাল মানের কোন প্যাথলজি সেন্টারে যাওয়ার চেষ্ঠা করলেও দালালদের বাঁধা ও প্রলোভনের ফাঁেদ পড়ে নিন্মমানের প্যাথলজি গুলোতে যেতে হচ্ছে। ফলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হলেও বেশির ভাগ রোগী ভাল মানের চিকিৎসা পাচ্ছেনা বলে অভিযোগ করেন অনেকে।
চকরিয়া উপজেলা সরকারি হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা.মোহাম্মদ ছাবের বলেন, হাসপাতাল সড়কে রোগী নিয়ে টানাটানির ঘটনাটি অনেক পুরানো। এ ধরণের অপতৎপরতা বন্ধ হওয়া উচিত। কারন রোগী ও স্বজনদের ইচ্ছা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে তাঁরা চিকিৎসা নেবে। কিন্তু টানাটানির কারনে তাকে বাধ্য হয়ে অখ্যাত চিকিৎসকের কাছে যেতে হয়। তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে ইতোপুর্বে উপজেলা পরিষদের সভায় অভিযোগ করা হয়েছে। তবে বিষয়টি স্থায়ীভাবে সমাধান করতে হলে অবশ্যই ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করতে হবে।
পাঠকের মতামত: