ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়া ভূমি অফিসে সেবা গ্রহীতাদের জন্য ‘ছায়াবিথী’

চকরিয়া প্রতিনিধি ::

চকরিয়া উপজেলা ভূমি অফিসে নানা সমস্যা নিয়ে প্রতিদিন আগত শত শত সেবাগ্রহীতার বসার জন্য স্থাপন করা হয়েছে একটি শেড। এটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘ছায়াবিথী’। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনা মোতাবেক সপ্তাহের প্রতি বুধবার ‘ছায়াবিথী’তে চলবে গণশুনানি। ভূমি সংক্রান্ত যেকোনো পরামর্শ, অভিযোগ ও সেবা বিষয়ক গণশুনানির কার্যক্রম পরিচালনা করবেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) খোন্দকার মো. ইখতিয়ার উদ্দীন আরাফাত। এছাড়া সপ্তাহের বাকি দিনগুলোতে সেবা গ্রহীতাদের বসার জন্য উন্মুক্ত থাকবে এই ‘ছায়াবিথী’। যা চকরিয়া উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার প্রায় ৫ লাখ জনগণ তথা সেবা গ্রহীতাদের জন্য নিঃসন্দেহে একটি সুখবর।

বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ছায়াবিথী’ উদ্বোধন করেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নূরুদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমান, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) খোন্দকার মো. ইখতিয়ার উদ্দীন আরাফাত, ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মো. শাখাওয়াত হোসাইন, কর্মকর্তা তপন কান্তি পাল, মিলন বড়ুয়া, ছৈয়দ উল্যাহসহ ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

এ সময় কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, ‘ভূমি অফিসকে নিয়ে সাধারণ জনগণের মধ্যে যে ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে তা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। এজন্য সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দুর্নীতি এবং হয়রানিমুক্ত সেবা উপহার দিতে হবে। তা না হলে জনগণের মধ্যে সেই ভ্রান্ত ধারণাই থেকে যাবে।’

পরে জেলা প্রশাসক উপজেলা ভূমি অফিসের নানা কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করেন এবং কর্মকর্তাদের কক্ষ পরিদর্শন করেন।

‘ছায়াবিথী’ উদ্বোধনের সময় উপস্থিত ছিলেন বেশকিছু সেবাগ্রহীতাও। তাঁরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন উপজেলা সহকারী কমিশনারের নেওয়া এই উদ্যোগে।

নুরুল আলম নামের একজন সেবাগ্রহীতা বলেন, ‘গত দুই বছর ধরে উপজেলা এবং ইউনিয়ন ভূমি অফিসগুলোতে অনেক পরিবর্তন এসেছে। বিশেষ করে সাধারণ মানুষ এসে সরাসরি এসি ল্যান্ডের কাছে গিয়ে নানা অভিযোগ-অনুযোগ জানাতে পারছেন। আর তিনি তাত্ক্ষণিক সমস্যা সমাধানের চেষ্টা বা পরামর্শ দিচ্ছেন। আগে একটি নামজারি খতিয়ান সৃজনের জন্য আবেদন করে মাসের পর মাস এখানে-ওখানে ঘুরতে হতো। বর্তমানে সেই অবস্থা নেই। এখন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই এসব সেবা পাওয়ায় সাধারণ মানুষ বেশ সন্তুষ্ট।’

এ প্রসঙ্গে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) খোন্দকার মো. ইখতিয়ার উদ্দীন আরাফাত বলেন, ‘প্রথমেই বলে নিই আমি এবং আমার অফিস দুর্নীতিমুক্ত। সেই ধারণাকে বাস্তবে রূপ দিতে যা যা করতে হয় তা-ই করে যাচ্ছি। এর পরেও আমার অগোচরে যদি কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী ঘুষ-দুর্নীতিতে জড়ায় তাদের বিরুদ্ধে প্রমাণসাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে এ ব্যাপারে যথেষ্ট সজাগ থাকতে হবে সেবাগ্রহীতাদের।’

তিনি জানান, এই অফিসকে দালালমুক্ত করা হয়েছে। এর পরও যদি কেউ দালালি করতে আসে কেউ রেহাই পাবে না। এই অফিসে ইতোমধ্যে চালু হয়ে গেছে ই-মিউটেশন তথা অনলাইনে নামজারি। এ ছাড়া দৈনন্দিন কার্যক্রমে স্বাভাবিক গতিশীলতা আনয়ন এবং কাজকর্মে শৃঙ্খলা রক্ষায় নামজারি এবং রিভিউ মামলার শুনানির জন্য সাপ্তাহিক কর্ম বিভাজন করে দেওয়া হয়েছে। আর এসব কার্যক্রম হাতে নেওয়ার পেছনে সার্বিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূরুদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমান চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘জনগণের আস্থা অর্জন করতেই এসি ল্যান্ডকে সাথে নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। বিশেষ করে ভূমি অফিসকে পুরোপুরি দুর্নীতি ও হয়রানিমুক্ত করতেই আমাদের এসব উদ্যোগ। যতদিন এখানে দায়িত্বে থাকবো চেষ্টা করে যাব এই ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে।’

পাঠকের মতামত: