ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়া- পেকুয়ায় বন্যা:: সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিহ্ন: অথৈ পানিতে নিমজ্জিত শতাধীক গ্রাম: চরম ঝুঁকিতে চকরিয়া পৌর ওয়াপদা রোড

মনির আহমদ, চকরিয়া ::
গত ৫ দিনের ভারি বর্ষন সহ পাহাড়ী ঢলে সৃষ্ট বন্যা ও জলাবদ্ধতার ফলে চকরিয়া শহরের সাথে পেকুয়া-মহেশখালীর  সমস্ত সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। মাত্র ২০দিনের ব্যবধানে ২য় দফা বন্যার কবলে পানি বন্দি হয়েছে ৩ লক্ষাধীক মানুষ। অথৈ পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে শতাধীক গ্রামের অধিকাংশ ঘরবাড়ী। মাতামুহুরী নদীর পানির তোড়ে ভেসে গেছে ১০টির অধিক কাঁচা বসতঘর ও দোকান। চরম ঝুঁকিতে রয়েছে মানিক পুরের দেড়শ বছরের পুরনো ঐতিহাসিক কিউক রাজার মসজিদ সহ কিয়াং এবং চকরিয়া পৌর ০৯ নং ওয়ার্ডের ভাঙ্গারমুখ ওয়াপদা রোড। স্বেচ্ছায় বাঁধ রক্ষার কাজ করছে এলাকার শত শত মানুষ। অসহায় হয়ে পড়েছে দুর্বিসহ যন্ত্রনা কাতর মানুষ।
পেকুয়ায় পাউবোর নিয়ন্ত্রনাধীন বেড়িবাঁধ বিলীন হয়ে উজানটিয়া ইউনিয়নের পূর্ব উজানটিয়ার বিপুল এলাকা পানিতে প্লাবিত হয়েছে। ২৪ জুলাই দুপুরে গোদারপাড় কমিউনিটি ক্লিনিক সংলগ্ন স্থানে মাতামুহুরী নদী পয়েন্টে পৃথক বেড়িবাঁধের দুটি পয়েন্ট বিলীন হয়। বেড়িবাঁধের ভাঙ্গন অংশ দিয়ে মাতামুহুরী নদীর পানি সরাসরি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। এতে এ ইউনিয়নের পূর্ব উজানটিয়ার সুতাচোরা, গোদারপাড়া, দক্ষিন সুন্দরীপাড়া, নুরীর পাড়া, রুপালীবাজার পাড়া, দক্ষিন সুতাচুরা, মালেকপাড়া, ঠান্ডার পাড়া, আতরআলী পাড়াসহ বিপুল এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। উজানটিয়া ইউপির চেয়ারম্যান এম, শহিদুল ইসলাম বেড়িবাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ পরিদর্শন করেছেন। এ ব্যাপারে তিনি জানান, গোদারপাড় সংশ্লিস্ট পাউবোর বেড়িবাঁধ পূর্ব থেকে ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। জানমালের ক্ষতি লাঘব করতে বেড়িবাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত এ অংশটি সংস্কার করতে আমি পাউবোকে পূর্ব থেকেই অবহিত করেছি। পাউবোর এসও গিয়াস উদ্দিন গতকাল উজানটিয়ায় এসেছিলেন। তার উপস্থিতিতে বেড়িবাঁধের দুটি অংশ বিলীন হয়েছে। এ দিকে প্রবল বর্ষনে পেকুয়ার নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার ৭ টি ইউনিয়নে ব্যাপক জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। অব্যাহত বৃস্টি ও পাহাড়ী ঢলের পানিতে উপজেলার শিলখালী, বারবাকিয়া ও টইটং ইউনিয়নের বিপুল এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। পাহাড়ী ঢলের পানি উজানের দিকে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে মাতামুহুরী নদীসহ শাখা নদীগুলিতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে উপজেলার প্রধান সড়ক চকরিয়া-মগনামা সড়কের প্রায় ২ কিলোমিটার পানিতে তলিয়ে গেছে। চকরিয়া-পহরচান্দা সীমান্ত ব্রীজ থেকে শিলখালী ইউনিয়নের হাজিরঘোনা সালাহ উদ্দিন ব্রীজ পর্যন্ত সড়কটি পানিতে তলিয়ে যায়। যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়েছে গত দুই দিন ধরে। উজানটিয়া ইউনিয়নের বিপুল এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। বেড়িবাঁধ বিলীন হওয়ায় এ ইউনিয়নের শত শত বাড়িঘরে পানি ঢুকেছে। গ্রামীণ অবকাঠামো পানিতে তলিয়ে গেছে। গোদারপাড়ার সাথে সোনালী বাজারের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন রয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট, মসজিদ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। চিংড়ি ঘের ও মৎস্যখামার পানির তোড়ে ভেসে গেছে। ফসল ও বীজতলা পানিতে তলিয়ে গেছে। গতকাল সোমবার দুপুরে বেড়িবাঁধের ভাঙ্গন অংশ পরিদর্শন করতে গিয়ে দেখা গেছে কক্সবাজারের পানি উন্নয়ন বোর্ড নিয়ন্ত্রিত পূর্ব উজানটিয়ার গোদারপাড় এলাকায় পৃথক দুটি স্থানে প্রায় তিন চেইন বেড়িবাঁধ বিলীন হয়েছে। মাতামুহুরীর নদীর প্রচন্ড স্রোতের আঘাতে বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত হয়।

পাঠকের মতামত: