ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়া-পেকুয়ায় আঞ্চলিক মহাসড়কের কাজে দুর্নীতি, নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ না হওয়ার আশংকা

জহিরুল ইসলাম : 02
চকরিয়া-পেকুয়ায় ‘আনোয়ারা-বাঁশখালী-চকরিয়া’ (এবিসি) আঞ্চলিক মহাসড়ক মেরামত কাজে ব্যাপক দূর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সড়কটির মেরামত কাজ জুন মাসের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নির্দিষ্ট সময়ে শেষ না হওয়ার আশংকা দেখা দেখা দিয়েছে। এখন পর্যন্ত সংশ্লিষ্টরা ৭৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে বলে দাবী করলেও বাস্তবে তা অনেক কম। জুন মাসের এই সময়ে এসে সড়কটির মেরামত কাজ যেনতেন ভাবে শেষ দেখানোর তোঁড়জোড় শুরু হয়েছে। চকরিয়া উপজেলার ঈদমনি লালব্রীজ থেকে পেকুয়ার টৈটং সীমান্ত ব্রীজ পর্যন্ত অংশের মেরামত কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১৩ কোটি টাকা। সড়ক বিভাগের কর্মকর্তাদের যোগসাজসে ওই সড়ক মেরামতের কার্যাদেশ প্রাপ্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স মেক কনস্ট্রাকশন লি: কাজে নিন্মমানের সামগ্রি ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে; এসড়টির চকরিয়া অংশে এখন মেরামতের কাজ চলছে। সংশ্লিষ্টরা পেকুয়া অংশের কাজ প্রায় শেষ হয়েছে বলে দাবী করলেও এখনও ওই অংশের কাজ চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে।  সড়কের অনেক স্থানে গিয়ে দেখা যায় স্কেবেটর দিয়ে পুরাতন পিচ আলগা করে দিয়ে আবার বোলডোজার দিয়ে আলগা করে দেয়া পুরাতন পাথরগুলো চাপা দেয়া হচ্ছে। কাজটির শিডিউল অনুযায়ী সিলেটি পাথর দিয়ে ৫০ মিলি মিটারের ওভারলে’র কাজ করার কথা রয়েছে। কিন্তু এখানে ওভারলে’র কাজে বড় ধরণের অনিয়ম দেখা গেছে। সিলেটি পাথর ব্যবহার তো করাই হচ্ছে না, বরং স্থানীয় পাথরের সাথে নিন্মমানের ইট মিশ্রিন করা হচ্ছে। সড়কের উপরের অংশে সিলেটি ছোট ছোট পাথর, সিলেটি সেন্ট মেশিনে প্লান্ট করে ঢালায় দেয়ার নিয়ম। কিন্তু এ কাজে ঠিকাদার তাও মানছেন না। পিচ ঢালয়ের এ কাজটি করা হচ্ছে একেবারে যেনতেন ভাবে। তা ছাড়া পেকুয়া সদর ইউনিয়ন এলাকায় দেখা গেছে সড়কের পাশ থেকে মাটি খনন করে নিয়ে আবার সড়কে দেয়া হচ্ছে। যা এ বর্ষায় বৃষ্টির পানিতে উঠে যাওয়ার আশংকা করছেন এলাকাবাসি। সড়কের চকরিয়া অংশে চলছে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ। এতে এ সড়কে প্রায় ৬ মাস ধরে যানবাহন চলাচল ব্যহত হচ্ছে।
জানা গেছে, চকরিয়া পেকুয়ায় এবিসি সড়ক নামের এই আঞ্চলিক মহাসড়কের টইটংয়ের সীমান্ত ব্রীজ থেকে চকরিয়ার ঈদমনী লাল ব্রীজ থেকে পেকুয়ার টৈটং সীমান্ত ব্রীজ পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার সড়কের বিভিন্ন অংশে ভাঙ্গন ও খানাখন্দকে ভরে গেছে। গত বর্ষা মৌসুমে স্থানীয়রা চলাচলে চরম দূর্ভোগের মুখে পড়েছিল। গত বছরের বেশ কয়েকবার বন্যায় এ আঞ্চলিক মহাসড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়। দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ ওই আঞ্চলিক মহাসড়ক উন্নয়নের জন্য গত বছর শেষের দিকে দরপত্র আহবান করলে চট্টগ্রামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স মেক কনস্ট্রাকশন লি: ওই কাজের কাজের দায়িত্ব পান। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১৩ কোটি টাকা। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, কাজ শুরুর ৬ মাস সময় অতিবাহিত হলেও কার্যাদেশ পাওয়া ঠিকাদারী প্রতিষ্টান যথাসময়ে কাজ সমাপ্ত করতে না পারার আশংকা দেখা দিয়েছে। এলাকাবাসী উন্নয়নের নামে সরকারী অর্থ লুটপাটকারী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এবং সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী তুলেন।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার সড়ক বিভাগের উপ-বিভাগীয় নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ এমদাদ হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ইতোমধ্যে এ কাজটির ৭৫ ভাগ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে বলে দাবী করেছেন। তিনি আরও বলেন, সড়ক মেরামত কাজে কোন দূর্নীতির আশ্রয় নেয়া হলে কার্যাদেশপ্রাপ্ত ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের নিয়োগ দেয়া ম্যানেজার ইমরুল ব্যাপক দূর্নীতির কথা অস্বীকার করে বলেন; আমি ঠিকাদারের কথা মতো কাজ করছি।

পাঠকের মতামত: