ঢাকা,শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সোহেলকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া :: কক্সবাজারের চকরিয়ায় ক্রয়কৃত জায়গা দখল করে নেওয়ার খবরে বাঁধা দিতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের নির্মম পিটুনিতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারিয়েছেন পৌরসভা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ন আহবায়ক মো. সোহেল রানা (২৮)। এ ঘটনায় জড়িত একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সন্ত্রাসী হামলায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সোহেল খুনের ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

আজ (২৯ নভেম্বর) শনিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে পৌরসভার চার নম্বর ওয়ার্ডের ভরামুহুরীস্থ হাজিপাড়ায় এই হামলার ঘটনাটি ঘটে। নিহত সোহেল রানা পৌরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ডের পালাকাটা হাসেম মাষ্টার পাড়ার আবদুর রকিমের পুত্র।

পরিবার সূত্র জানায়, গত ৪ নভেম্বর সোহেলের সাথে বিয়ে হয় পেকুয়ার কৃষকলীগ নেতা মেহের আলীর কন্যা কলির সঙ্গে। সন্ত্রাসী হামলায় বিয়ের ২৪ দিনের মাথায় স্বামী সোহেলকে হারাল নববিবাহিতা কলি।

প্রত্যক্ষর্দীরা জানায়, হামলার পর ঘটনাস্থলে পড়ে থাকা সোহেলকে দ্রুত উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সোহেলকে মৃত ঘোষণা করেন। এর পর পুলিশ প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে।
ঘটনার পর পরই হামলায় জড়িত একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার নাম আবদুল মান্নান (৩৪)। সে হাজিপাড়ার কবির আহমদের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চকরিয়া পৌরসভা ৪নং ওয়ার্ডের ভরামুহুরী হাজী পাড়া এলাকার মৃত আহমদ শফির পুত্র নুর হোছাইন গং ও উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জেসমিন হক জেসি চৌধুরীৱ সাথে  দীর্ঘদিন ধরে জমির বিরোধ চলছে।ভুক্তভোগী ও বিবাদিপক্ষের লোকজন উভয়ে জমির দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠে দীর্ঘকাল যাবত।  বিরোধকৃত জমি দখল পূর্বক  নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য অব্যাহত চেষ্টায় নুর হোছাইন গংদেৱ হামলায় নিহত হন সাবেক ছাত্রনেতা সোহেল।

স্থানীয়রা আৱো জানিয়েছেন, উভয় পক্ষের মধ্যে জমি-জমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসলেও থানা সেন্টার এলাকাস্থ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট ও চাঁদা দাবীর মতো  সাজানো মিথ্যা মামলা দিয়ে  ঘায়েল করার চেষ্টা চালিয়ে আসছেন নূর হোসেন গং ।

নাম প্রকাশ করার না করার শর্তে ছন্দ নাম কৱিম বলেন, নুর হোছাইন গং সোহেল  হত্যায়  জড়িত  ভূমিদস্যু  নুরুল আলম, নুর হোছন, আইয়ুব, বশির, আলী হোছন, সোলতান গং- সর্বসাং : ভৱামহুৱী চাৱ নাম্বার ওয়ার্ড চকৱিয়া পৌরসভা তাদের হামলায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন সোহেল। এসময় স্থানীয়রা উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছালেও  জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে এই নারকীয় হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানান স্থানীয় এলাকাবাসী , শুভাকাংঙ্কী ও দলীয় নেতাকর্মীরা।

নিহত সোহেলের বাবা আবদুর রকিম জানান, ভরামুহুরী হাজি পাড়ায় তাদের ক্রয়কৃত একটি জায়গা রয়েছে। সেই জায়গা দখলে নেওয়ার চেষ্টা চালায় ভূমিদস্যু-সন্ত্রাসীরা। এই খবর পেয়ে তার ছেলেসহ আরো কয়েকজন সেখানে ছুটে যায়। সেখান থেকে ফেরার পথে একা পেয়ে হাজি পাড়ার নুরুল আলম ও তার সাঙ্গোপাঙ্গরা সোহেলকে পেছন থেকে হাতুড়ি, গাছের বাটাম দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে সন্ত্রাসীরা। এতে ঘটনাস্থলেই পড়ে থাকে সোহেলর নিথর দেহ। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ শাকের মোহাম্মদ যুবায়ের চকরিয়া নিউজকে বলেন,  জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে  উভয় পক্ষের সাংঘর্ষিক হামলায় নিহত হন সোহেল নামের এক যুবক। উক্ত ঘটনার সংবাদ পেয়ে  পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং নিহতের লাশ থানা হেফাজতে নিয়ে আসার পর ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ঘটনায় যারা জড়িত রয়েছে তাদেরকে গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে মামলা নেওয়া হবে।’  এ ঘটনার সাথে জড়িতদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না বলে জানান।
 

পাঠকের মতামত: