ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় শিক্ষার্থী এমশাদ ও মেহেরাবের বাড়িতে জেলা প্রশাসক: মা-বাবাকে শান্তনা প্রতিটি স্কুলে শিক্ষার্থীদেরকে সাঁতার শেখানোর নির্দেশ

চকরিয়ায় শিক্ষার্থী এমশাদ ও মেহেরাবের বাড়িতে তাঁদের বাবা আনোয়ার হোসেনকে শান্তনা দেন জেলা প্রশাসক

এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::

শনিবার মাতামুহুরী নদীর চরে ফুটবল খেলা শেষে গোসল করতে নেমে সলিল সমাধি ঘটে প্রাণ প্রদীপ নিভে যাওয়া চকরিয়া গ্রামার স্কুলের পাঁচ শিক্ষার্থীদের পরিবারকে শান্তনা জানাতে গতকাল সোমবার চকরিয়া এসেছেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো.কামাল হোসেন। তিনি এদিন রাত আটটার দিকে চকরিয়া পৌরসভার ৮নম্বর ওয়ার্ডের স্টেশনপাড়াস্থ নিহত শিক্ষার্থী আমিনুল হোসেন এমশাদ (১৬) ও আফতাব হোসেন মেহরাব (১৪) এর বাড়িতে উপস্থিত হন। জেলা প্রশাসক মো.কামাল হোসেন ওইসময় এমশাদ ও মেহরাবের বাকরুদ্ধ বাবা আলহাজ আনোয়ার হোসেনকে বুকে জড়িয়ে ধরেন। পরে দুই মেধাবী শিক্ষার্থীর অকাল মুত্যুতে মানষিকভাবে ভেঙ্গে পড়া পরিবার সদস্যদেরকে তিনি সমবেদনা ও শান্তনা দেন। একই সাথে তিনি নিহত অপর তিন শিক্ষার্থী সায়ীদ জাওয়াদ অরবি, তূর্য ভট্টাচার্য ও ফারহান বিন শওকতের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেন।

শনিবার মাতামুহুরীর নদীর চোরাবালিতে আটকে চকরিয়া গ্রামার স্কুলের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সাঈদ জাওয়াদ অরভি, দুই ভাই দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী আমিরুল হোসেন এমশাদ ও অস্টম শ্রেণীতে পড়ুয়া আফতাব হোসেন মেহরাব, দশম শ্রেণীতে পড়ুয়া তূর্ণ ভট্টাচার্য্য ও একই শ্রেণীর শিক্ষার্থী ফারহান বিন শওকত পাঁচ ছাত্র নিখোঁজ হয়। ওইদিন উপজেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস, ডুবুরীদল ও স্থানীয় লোকজন বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে মাতামুহুরী নদী থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে।

গতকাল শিক্ষার্থী এমশাদ ও মেহরাবের বাড়িতে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক পৌঁছালে তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরউদ্দিন মুহাম্মদ শিবলী নোমান, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) খোন্দকার ইফতেখার উদ্দিন মোহাম্মদ আরাফাত, চকরিয়া পৌরসভার কাউন্সিলর মুজিবুল হক মুজিব, কাউন্সিলর রেজাউল করিম, পৌরসভার ৮নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আমির হোসেন আমুসহ পরিবার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সমবেদনা প্রকাশ শেষে জেলা প্রশাসক মো.কামাল হোসেন চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন আগামীতে উপজেলার প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদেরকে সাতাঁর শেখাতে হবে। এইজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বিষয়টি প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাধ্যতামুলক ভাবে চালু করতে নির্দেশ দেন।

অপরদিকে মাতামুহুরী নদীর চরে যাতে আর কোনদিন খেলতে না হয় সেইজন্য অতিসহসা চকরিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠটি সংস্কার করার মাধ্যমে খেলা উপযুগী করে তোলার নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসক।

ওইসময় জেলা প্রশাসক ইউএনওকে নির্দেশ দিয়ে আরও বলেন, এখন থেকে উপজেলার প্রতিটি অঞ্চলে পুকুর জলাশয় ভরাট বন্ধ করতে হবে। একই সাথে তিনি চকরিয়া ফায়ার সার্ভিসকে প্রশিক্ষিত ডুবুরীদল প্রস্তুত রাখতে সব ধরণের ব্যবস্থা গ্রহনের আশ^াস দেন। প্রয়োজনে তিনি সংশ্লিষ্ট বিভাগের সিনিয়র কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলবেন বলে নিশ্চিত করেন।

পাঠকের মতামত: