এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::
চকরিয়ায় বনবিভাগের লোকজনের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধার মেয়েকে প্রায় ৮০বছরের ভোগদখলী জায়গার বসতি থেকে উচ্ছেদে হুমকি দেয়া হচ্ছে। দুইদফায় তেরহাজার টাকা দেয়ার পরও বনকর্মীরা ফের আরো ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করছেন বলে অভিযোগ করছেন ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধার পরিবার। উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর নুনাছড়ি এলাকায় ঘটেছে বসতি থেকে উচ্ছেদে হুমকি দেয়ার এ ঘটনা।
উচ্ছেদ হুমকির এ ঘটনায় আতঙ্কিত মুক্তিযোদ্ধা ও কক্সবাজার জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের অন্যতম সদস্য চকরিয়া হারবাং ইউনিয়নের বাসিন্দা মোহাম্মদ ইউছুফ বাদি হয়ে সরকারের বন ও পরিবেশ মন্ত্রীর কাছে লিখিত আবেদন পাঠিয়েছেন। অনুলিপির কপি পাঠানো হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রানালয়, বনবিভাগের প্রধান বনসংরক্ষক, দক্ষিন বনবিভাগের ডিএফও ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের কাছে। অভিযোগটিতে বিবাদি করা হয়েছে চট্টগ্রাম দক্ষিন বনবিভাগের চকরিয়া উপজেলার হারবাং বনবিট কর্মকর্তা রউফ উদ্দিন খাঁন তুহিন, চুনতী রেঞ্জ কর্মকর্তা নুর রহমান ও হারবাং বনবিটের ফরেস্ট গার্ড নাছির উদ্দিনকে।
লিখিত আবেদনে মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউছুফ জানান, হারবাং ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকায় বনবিভাগের জায়গায় হাজার হাজার বসতি রয়েছে। সেখানে বসবাস করছেন অন্তত ২০ থেকে ৪০ হাজার জনসাধারণ। একইভাবে স্থানীয় জনগনের সাথে ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর নুনাছড়ি কবরস্থানের পাশে বসতি নির্মাণ করে পরিবার নিয়ে ৮০বছর ধরে ভোগদখলে থেকে শান্তিপুর্ণভাবে বসবাস করে আসছেন তাঁর মেয়ে ইয়াছমিন আক্তার।
মুক্তিযোদ্ধা ইউছুফ অভিযোগে লিখেছেন, হারবাং বনবিট কর্মকর্তা রউফ খানের গ্রামের বাড়ি চকরিয়া উপজেলার হারবাংয়ে। এলাকায় কর্মস্থল হওয়ায় ওই কর্মকর্তা এখন ক্ষমতার অপব্যবহার শুরু করেছেন। কিছুদিন আগে তিনি বসতি থেকে উচ্ছেদের হুমকি দিয়ে তাঁর মেয়ে ইয়াছমিন আক্তারের কাছ থেকে প্রথমদফায় তিন হাজার টাকা ও দ্বিতীয় দফায় গত ১৩ এপ্রিল ১০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু টাকা দেয়ার পরও সর্বশেষ ১৪ এপ্রিল বিকাল আনুমানিক দুইটার দিকে অভিযুক্ত বনবিট কর্মকর্তা রউফ খাঁন তাঁর মেয়ের বাড়িতে মাতাল অবস্থায় ঢুকে আরো ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন।
মুক্তিযোদ্ধা ইউছুফ অভিযোগ তুলেছেন, মাতাল অবস্থায় বাড়িতে ঢুকে টাকা দাবি করে ক্রান্ত হয়নি ওই কর্মকর্তা। ওইসময় বাড়িতে একাপেয়ে তাঁর মেয়ের উপর শ্লীলতাহানির চেষ্টাও করেছে। তবে ওইসময় স্থানীয় লোকজন আসতে দেখে ওই কর্মকর্তা কৌশলে চলে গেলেও যাবার সময় টাকা না দিলে বসতঘর ভেঙ্গে উচ্ছেদ করে দেবে বলে হুমকি দিয়েছেন। মেয়ের মেয়ের উপর শ্লীলতাহানির চেষ্টার ঘটনায় আদালতে মামলা করবেন বলে জানান মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউছুফ।
অভিযোগের ব্যাপারে বক্তব্য জানতে রোববার সন্ধ্যার দিকে হারবাং বনবিট কর্মকর্তা রউফ উদ্দিন খাঁন তুহিনের ব্যক্তিগত মুঠোফোনে বেশ কবার চেষ্ঠা করা হয়। কিন্তু সংযোগ লাইন বন্ধ থাকায় তাঁর বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
পাঠকের মতামত: