নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ::
কক্সবাজারের চকরিয়ায় মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন বাঙ্গালীর বাড়িতে (মুক্তিযোদ্ধা কুঠির) ভূল তথ্যে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট চালিয়েছে চকরিয়া থানার একদল পুলিশ। এসময় পুলিশ ২০ ভরি ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ চার লাখ টাকা লুঠ করেছে বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।
আজ বৃহস্পতিবার (৫মার্চ) দুপুর দেড়টার দিকে লক্ষ্যারচর ইউনিয়নের মাঝির পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ওই বাড়িতে ঢুকে মারধর চালিয়ে মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন বাঙ্গালীর ছেলে মুরাদুল ইসলাম সিফাত (২৭) স্ত্রী নেচারা বেগম (৬০) পুত্রবধূ শাহনাজ আক্তার(৩০) ফরিদা ইয়াসমিন(৩০) ফাতেমা ইয়াসমিন(২৮) সাবাহ নুর তাবাহ(১৮) সৌদি প্রবাসী নাতি হাসান আবুল কালাম(২৩) নাতি আয়ইমুন করিম সুহা (১১) ও নাতি আনোয়ারুল মোস্তাফিজকে(১৪) গুরুতর আহত করে। এসময় হামলাকারীদের ব্যাপক পিটুনিতে শিশু ও মহিলাসহ অন্তত ৮জন আহত হয়েছে ।
মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন বাঙ্গালীর স্ত্রী ও লক্ষ্যারচর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান নেচারা বেগম বলেন, আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে আকস্মিকভাবে একদল পুলিশ আমাদের বাড়িতে ঢুকে পড়ে। বাড়ির মেইন গেইট আটকে দিয়ে তারা বাড়ির ভেতর ঘন্টাব্যাপী তান্ডব চালায়। অহেতুক তল্লাশি চালায় ঘরের প্রতিটি কোণে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিসহ ঘরের আসবাব, ফুলদানি ভাংচুর করে। লুঠ করে নিয়ে যায় ২০ ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ চার লাখ টাকা। আমার ছেলে ও লক্ষ্যারচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল করিম সেলিমের স্ত্রী শাহনাজ আক্তারকেও আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পরে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।
মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন বাঙ্গালীর ছেলে মোহাম্মদ মিরাজ বলেন, পুলিশ ঘরে ঢুকে আমার সদ্য বিবাহিত ভাই মুরাদুল করিম সিফাতকে তার স্ত্রীর সামনে বেধড়ক পিটিয়ে অজ্ঞান করে ফেলে। সে বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।
চকরিয়া থানার ওসি হাবিবুর রহমানের নির্দেশে এসআই তুষ্ট লাল বিশ্বাস, কামরুল হাসান ও এএসআই জেড রহমানের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন পুলিশ সদস্য আমার বাড়িতে ঢুকে এ নারকীয় তাণ্ডব চালায়। আমি এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
এব্যাপারে চকরিয়া থানার ওসি হাবিবুর রহমান বলেন, ওই এলাকায় একটি অভিযানে গেলে পুলিশের উপর হামলা হয়। হামলাকারীদের খুজতে গিয়ে ভুল বুঝাবুঝি থেকে প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন বাঙ্গালীর পরিবারের সাথে অসদাচরণ করেছে কয়েকজন পুলিশ সদস্য। এসব পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ন্যাক্কারজনক এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
এদিকে এ ঘটনার পর চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুউদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমান, চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ফাসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিনসহ চকরিয়া আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। মুক্তিযোদ্ধা পরিবারে হামলায় দায়ী পুলিশ কর্মকর্তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন এলাকাবাসী ।
চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী বলেন, কক্সবাজার জেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আনোয়ার হোসেন বাঙ্গালীর বাড়িতে এ ন্যাক্কারজনক ঘটনা অনভিপ্রেত। যারা এ ঘটনার সাথে জড়িত, তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হোক।
পাঠকের মতামত: