ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় ডুলহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্কে বন্ধের দিনে গেইট খোলা নিয়ে বন্দুক যুদ্ধে আহত ১০

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ::
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্কে বন্ধের দিন পার্কের গেইট খোলা নিয়ে পার্ক কর্তৃপক্ষ ও ইজারাদারদের মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ১০জন কম বেশি আহত হয়েছে। পার্ক কতৃপক্ষ ¯ী^কার করেছে, তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনার জন্য ৪ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষন করেছে। অপর দিকে সন্ত্রাসীরা ৭/৮ রাউন্ড গুলি বর্ষনের কথা জানান পার্ক কর্তৃপক্ষ। পরে ঘটনাস্থলে চকরিয়া থানা পুলিশ ও পার্কে নিয়োজিত ট্যুরিষ্ট পুলিশ উপস্থিত হলে ঘটনা নিয়ন্ত্রনে আসে।
সপ্তাহের প্রতি মঙ্গলবার পার্কে অবস্থানরত পশুপাখিদের পরিবেশ প্রতিবেশ রক্ষার জন্য সরকারী ভাবে মঙ্গলবার পার্ক বন্ধের দিন ধার্য্য রয়েছে। কিন্তু দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কয়েক হাজার দর্শনার্থী ঈদ পরবর্তী পার্কে ভ্রমনের জন্য বেড়াতে আসে। তারা মঙ্গলবার বন্ধের দিন সম্পর্কে অবহিত নন। ইজারাদার কতৃপক্ষ জানান, ঈদ পরবর্তী বিশেষ দিনের জন্য দেশের দু’টি বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্কের মধ্যে গাজীপুর বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্ক খোলা থাকলেও ডুলহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্কটি বিভাগীয় বন কর্মকর্তার মৌখিক নির্দেশ থাকা স্বত্বেও রেইঞ্জ কর্মকর্তা গেইট খোলে না দেয়ায় দু’পক্ষের মধ্যে বাকবিতন্ডা ও গুলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পার্ক এলাকায় আতংক বিরাজ করছে। এ দিকে সচেতন মহলের দাবী, পার্ক কতৃপক্ষ সরকারী প্রতিষ্টানের নিরাপত্তার স্বার্থে ৪ রাউন্ড ফাকাগুলি বর্ষণ করলেও প্রতিপক্ষের গুলিবর্ষণ কাজে ব্যবহার করা অস্ত্র গুলো কোথা থেকে আসল । ওইসব অবৈধ অস্ত্রের উৎস খোজে বের করার দাবী জানিয়েছেন পার্ক কতৃপক্ষ।
পার্কের দায়িত্বে নিয়োজিত ফরেস্টার মাজহারুল ইসলাম জানান, প্রতি সপ্তাহের ছুটির দিন মঙ্গলবার যথারীতি পার্ক বন্ধ ছিল। কিন্তু ইজারাদাররা প্রভাবখাটিয়ে পার্কের গেইট খোলা রাখার চেষ্টা চালায় এবং দর্শনার্থীদের কাছে বেশ কিছু পার্কে প্রবেশ টিকেটও বিক্রি করেছে। তারা অবৈধ ভাবে অস্ত্রের মুখে পার্কের কর্মচারীদেরকে জিম্মি করে রাখে এবং জোর পূর্বক গেইটের ২টি তালা ভেঙ্গে দর্শনার্তীদেরকে পার্কে প্রবেশের চেষ্টা চালায়। এসময় পার্কের কর্মকর্তারা অবৈধ কর্মকান্ড রোখে দিয়েছে।
আজ ১৯ জুন বিকেলে চকরিয়া পৌর বাস টার্মিনালস্থ মালিক সমিতির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পার্কের ইজারাদার মেসার্স শিমুল এন্টারপ্রাইজের মালিক মোহাম্মদ রফিক উদ্দিন একটি লিখিত অভিযোগে দাবী করে বলেন, মঙ্গলবার পার্ক সরকারি বন্ধ থাকায় ইজারাদারপক্ষ সাফারি পার্কের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা গোলাম মওলার কাছ থেকে ঈদ উপলক্ষে পার্ক খোলা রাখার অনুমতি নেন। ইজারাদার অনুমতি পাওয়ার পর প্রায় এক হাজার দর্শনার্থীর মাঝে টিকেট বিক্রি করেন। কিন্তু ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের রেঞ্জার মোর্শেদ আলম ও বিট কর্মকর্তা মাজাহারুল ইসলাম পার্কের গেইট খুলে দিতে দেড় লক্ষ টাকা ঘুষ দাবি করেন।
তিনি আরো জানান, পরে ইজারাদাররা  পার্ক কতৃপক্ষকে ৭৫ হাজার টাকা দিতে চাইলে রেঞ্জার ও বিট কর্মকর্তা দেড় লক্ষ টাকায় দাবিতে অনড় থাকেন। দর্শনার্থীরা দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে পার্কে ডুকতে না পারলে হট্টগোল শুরু হয়। এতে পার্ক কর্তৃপক্ষ দর্শনার্থীদের উপর ফাঁকা ৫রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে ভিতি সঞ্চার করে। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হলে এঘটনায় ১০জন দর্শনার্থী আহত হন। এদিকে রেঞ্জ কর্মকর্তা ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়েররের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ ও দর্শনার্থীদের মধ্যে হট্টগোলের ঘটনা জানার পরপরই থানার এসআই আব্দুল খালেদের নেতৃত্বে একদল পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিন্ত্রয়ণে আনে।

 

 

পাঠকের মতামত: