চকরিয়া উপজেলার চিংড়িজোনের ২৫ হাজার একর জমি পুর্ব পুরুষের সম্পত্তি বলে দাবি করে অবিলম্বে এসব জমি বন্দোবস্ত মুলে ফেরত দেয়ার দাবি জানিয়েছেন রামপুর সমবায় ও কৃষি উপনিবেশ সমিতির সদস্যরা।
স্থানীয় ও বহিরাগত প্রভাবশালী মহলের চক্রান্তে অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজসে আইনী জটিলতার কারনে এসব জায়গা দখল ফেরত পাচ্ছেনা সমিতির লোকজন। এ অবস্থার প্রেক্ষিতে সমিতির সভ্য ও পোষ্যসহ প্রায় ১০ হাজার ভুমিহীন পরিবার এসব জমি বন্দোবস্তের মাধ্যমে ফেরত দেয়ার দাবি জানিয়েছেন। সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় করা হবে বলে জানান সমিতির নবীন প্রবীণ সভ্যরা।
শনিবার সকালে উপজেলার বদরখালী বাজারস্থ সমিতির কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে লিখিত বক্তব্যে এমন ঘোষণা দেন সমিতির প্রবীণ সভ্য মকবুল আহমদ। এসময় উপস্থিত ছিলেন সমিতির সভাপতি আবু জাফর, পরিচালক মোহাম্মদ শাহাজাহান, হোসেন শহীদ সওয়ারদী, আবু হেনা মোস্তফা হানিফ, বদিউল আলম, মুুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেন, নুর কালাম এবং সমিতির সভ্য আহমদ মিয়া, নুরুল আমিন, হারুন সিকদার, ছৈয়দ আহমদ ও আবদুল কাদের সহ সমিতির প্রায় তিন শতাধিক নারী পুরুষ সভ্যরা।
চকরিয়া উপজেলার ছয়টি মৌজার অধীনে চিংড়িজোনের ২৫ হাজার একর জায়গা সিএস মুলে তাদের পুর্ব পুরুষের সম্পত্তি। ১৯৬৯ সালে সমিতি প্রতিষ্ঠার পর থেকে রামপুর সমবায় ও কৃষি উপনিবেশ সমিতির ভুমিহীন কৃষকদের নিয়ে চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। পরে উপকুলীয় অঞ্চলে সুন্দরবন হলে ওই জমি অধিগ্রহণ করেন। কিন্তু প্রশাসনের উদাসীনতার কারণে কয়েক বছরের ব্যবধানে ফের সুন্দরবন বিলুপ্ত হয়ে যায়।
সমিতির সভ্যরা জানান, সুন্দরবন বিলুপ্ত হওয়ার পর পুর্ব পুরুষের এসব জায়গা ফেরত দাবি করলেও ওইসময় প্রশাসনের অসাধু কর্মকর্তারা যোগসাজস করে স্থানীয় এবং বহিরাগত শতশত প্রভাবশালীদের কাছে এসব জমি ইজারা দেওয়া হয়।
২০১২ সালে উচ্চ আদালতে একটি রিট মামলা (নম্বর ১০৯৬২/১২) দায়ের করেন রামপুর সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতি লি: প্রয়াত সভাপতি সামসুল ইসলাম চৌধুরী।
পরবর্তী সময়ে হাইকোর্টের বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি মোহাম্মদ খুরশিদ আলম সরকার সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চ ২০১২ সালের ১২আগষ্ট ২৫ হাজার একর জায়গা ওপর স্থিতাবস্থা আদেশ জারী করেন। এখনো আদালতে মামলাটি বিচারধীন রয়েছে। স্থিতাবস্থা আদেশ জারি থাকার পরও গত ১ নভেম্বর চিংড়িজোনের ছয়টি মৌজার অধীনে থাকা রামপুর মৌজায় অভিযান চালিয়ে উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা সেখান থেকে ৪৮একর জায়গায় ভোগদখলে থাকা রামপুর সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতিকে উচ্ছেদ করা হয়। এ কারণে আদালতের কাছে উপস্থাপন করার প্রস্তুতি নিয়েছি।
রামপুর সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতির বর্তমান কমিটির সভাপতি আবু জাফর বলেন, আদালতের নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকলেও মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা অভিযান চালিয়ে রামপুর মৌজার চিংড়িজোন থেকে উচ্ছেদ করেছে। যা সম্পুর্নরূপে বেআইনী। বর্তমানে চিংড়িজোন থেকে উচ্ছেদের পর মৎস্য বিভাগের কতিপয় কর্মকর্তারা উল্টো নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। এমনকি মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করার হুমকি দিচ্ছে। ##
পাঠকের মতামত: