ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় গরিবের কুঁড়েঘরে প্রতিপক্ষের অগ্নি সংযোগ!

মোঃ নিজাম উদ্দিন, চকরিয়া :: ভিটেমাটির বিরোধে গরিবের কুঁড়েঘরে অগ্নি সংযোগ করেছে প্রভাবশালী প্রতিপক্ষ। খতিয়ান ও দলিলপত্র মূলে ৩৩ কড়া বিরোধীয় জায়গা ছেড়ে না দিতে সপরিবারে পুড়িয়ে মারতে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
এমনই অভিযোগ উঠেছে চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের (৮ নং ওয়ার্ড) পাগলীরবিল এলাকায়। ভুক্তভোগী জসিম উদ্দিনের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম অভিযোগে জানায়, বিগত বার বছর পূর্বে পাগলীবিল এলাকার আলী আহমদ গং থেকে ৬৬ কড়া জায়গা কিনে কুঁড়েঘর নির্মাণ করে মনোয়ারা বেগম। এনিয়ে স্ব-পরিবারে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছিল তারা।
পরে বসতভিটা সংলগ্ন একই মালিক থেকে ৩৭ কড়া জায়গা ক্রয় করে স্থানীয় আবদুল জব্বারের পুত্র আবদুল হাকিম। তার ক্রয়কৃত জায়গায় ভবন নির্মাণ করার প্রস্তুতি নিলে মনোয়ারা বেগমের ভিটেমাটির উপর লোলুপ পড়ে। একপর্যায়ে দাপটের সাথে প্রভাববিস্তার করে মনোয়ারা বেগমের ৬৬ কড়া জায়গা থেকে ৩৩ কড়া জায়গা আবদুল হাকিম জবরদখল করে। এসময় নিরুপায় হয়ে মনোয়ারা বেগম চকরিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
এ মামলার তদন্তভার ছিল থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) মোঃ জাহাঙ্গীরের হাতে। তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দেন। পরবর্তীতে এ বিরোধীয় জায়গা নিয়ে থানা-কোর্টে মামলা মোকদ্দমা পর্যন্ত গড়ায়। একপর্যায়ে আপোষ মিমাংস করতে বিভিন্ন সময় সালিস বিচার বসে। প্রতিটি সালিশে দলিল ও খতিয়ানপত্র যাচাই করে আবদুল হাকিমকে ৩৩ কড়া জায়গা ছেড়ে দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু মনোয়ারা বেগমের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে প্রভাবশালীদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ইন্ধনে এসব নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখায় অভিযুক্ত আবদুল হাকিম।
শেষমেশ, গত ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২০ ইং তারিখে বিরোধীয় এ জায়গা নিয়ে উভয় পক্ষের সালিশ বৈঠক বসে। দুপক্ষের সালিশকারের সিদ্ধান্তে গণ্যমান্য লোকজনদের উপস্থিতিতে সার্ভেয়ার দ্বারা এ জায়গা পরিমাপ করা হয়। এসময় খতিয়ান ও দলিল মূলে যার যার জায়গা নির্ধারণ পূর্বক খুঁটি স্থাপন করে দেয়। এসময় সংঘর্ষ এড়াতে ঘটনাস্থলে থানা পুলিশ উপস্থিত ছিলেন। এদিন সালিশকার চলে যাওয়ার পরপর সন্ধ্যা নাগাদ আবদুল হাকিম পক্ষ ওই খুঁটিগুলো উপড়ে ফেলে। এসময় বিরোধীয় পক্ষ মনোয়ারা পরিবারকে অশ্লিল ভাষায় গালি-গালাজ ও হত্যার হুমকি প্রদর্শন করে।
একইদিন দিবাগত-রাত আনুমানিক ৩ টার দিকে মনোয়ারা বেগমের পরিবার ঘুমন্ত অবস্থায় তাদের টিনের বেড়া যুক্ত বসত ঘরের বাঁশগাছ ও পলেথিনের ছাউনিতে দাউদাউ করে আগুন জ্বলে উঠে। এসময় স্বামী, ছেলেমেয়েরা ঘুম থেকে উঠে তাদের আর্তচিৎকারে প্রতিবেশী লোকজনের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় আসবাবপত্র, ছাউনি, ঘেরা বেড়াসহ সব মিলিয়ে লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতির কথা জানায় ভুক্তভোগী পরিবার। এ ঘটনায় মনোয়ারা বেগমের অভিযোগ- কাগজপত্রে, আইন আদালতে, সালিশ বৈঠকে এ বিরোধীয় ৩৩ কড়া জায়গা ফেরত দিতে হচ্ছে দেখে উপায়ান্তর না পেয়ে প্রতিপক্ষকে সপরিবারে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হচ্ছে বলেও তিনি জানায়।
এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) মোঃ হাবিবুর রহমান জানান, ডুলাহাজারায় বসতবাড়িতে অগ্নি সংযোগ বিষয়ে লিখিত কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাঠকের মতামত: