ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়ার পালাকাটা রাবার ড্যাম ছিঁড়ে গেছে

চকরিয়া অফিস :
মাতামুহুরী নদীর চকরিয়ার পালাকাটা অংশের রাবার ড্যামের রাবার ব্যাগ ছিঁড়ে গেছে। গতকাল ৮ মে দুপুর ১১টার দিকে এ রাবার ড্যামটির একটি রাবার ব্যাগ ছিঁড়ে গেছে। এতে সমুদ্র থেকে ড্যামের ভেতরের অংশে লোনা পানি ঢুকে পড়েছে। প্রায় ২ কোটি ৫০লাখ টাকা ব্যয়ে গত বছর এ রাবার ড্যামটি মেরামত করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে ওই ড্যামটির মেরামত কাজে বরাদ্দ দেয়া সিংহভাগ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করা হয়েছে। কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের চিরিঙ্গার শাখা কর্মকর্তা তারেক বিন ছগির ড্যামটি ছিঁড়ে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ ড্যামের মেরামত কাজে দুর্নীতির ব্যাপারে গত ৮ মে ‘দৈনিক কক্সবাজার’ এ সবিস্তারে একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে।
কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্রে জানা যায়; ২০১৩ সালে মাতামুহুরী নদীর সেচ প্রকল্পের ২য় পর্যায়ের আওতায় প্রায় ২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে পালাকাটা রাবার ড্যামের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হয়। গত বছর এ রাবার ড্যাম দিয়ে পানি সরে যেতে শুরু করে। কক্সবাজার পানি উন্নয়ন সুত্র জানায়; ওই বছরই পালাকাটা রাবার ড্যাম কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড বিনা টেন্ডারে দু’টি ঠিকাদারি প্রতিষ্টানকে মেরামতের দায়ীত্ব দেন। কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকোশলী জানান; ওই সময় পালাকাটা রাবার ড্যামের মেরামতের জন্য আড়াই কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। বরাদ্দের ওই টাকার বেশীরভাগই ইতোমধ্যে উত্তোলন করে নেয়া হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে; জোড়াতালি দিয়ে দায়সারাভাবে কাজ করে সংশ্লিষ্টরা যোগসাজস করে বরাদ্দে সিংহভাগ টাকা আত্মসাত করে নিয়েছেন। এতে বছর না যেতেই এ বছরই পালাকাটা রাবার ড্যামের ৩নং অংশ(স্পাইন) দিয়ে আবারও পানি সরে যাচ্ছে। গতকাল ৮ মে দুপুর ১১টার দিকে এ ড্যামটির ২নং অংশের( স্প্যাইন) রাবার ব্যাগটি ছিঁড়ে যায়। ড্যামটি ছিঁড়ে যাওয়ায় এখন মাতামুহুরী নদীর ওই অংশ দিয়ে নদীর ভেতরের অংশে লোনা পানি ঢুকে পড়ছে। কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের চিরিঙ্গার শাখা কর্মকর্তা তারেক বিন ছগির জানান; তিনি রাবার ড্যামটি ছিঁড়ে যাওয়ার পর তাৎক্ষনিক ড্যামটি পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন এ ড্যামটি আবারও মেরামত করতে হবে। এলাকাবাসি জানান; মাতামুহুরী নদীর রাবার ড্যামগুলোকে একটি প্রভাবশালী মহল লুটপাটের প্রকল্প হিসাবে নিয়েছেন। চকরিয়া ও পেকুয়ায় এ নদীর শাখা প্রশাখায় ৪টি মাটির বাঁধ দিতে এক সময় ৫০ থকে ৬০ লাখ টাকা খরচ হতো। এ নদীর পালাকাটা ও বাঘগুজারায় প্রায় ৫৩ কোটি টাকা ব্যয়ে রাবার ড্যাম নির্মাণ করে দেয়ার পর প্রতি বছর এ ড্যামগুলো মেরামতের নামে লুটপাট হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। এ বছর এ নদীর বাঘগুজারা রাবার ড্যামটিও মেরামত কাজে দুর্নীতির আশ্রয় নেয়া হয়েছে। কিছুদিন আগে ওই ড্যামে মেরামত কাজ সম্পন্ন ঘোষণা করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে যেনতেন ভাবে সামান্য কাজ দেখিয়ে একটি প্রভাবশালী মহল পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের যোগসাজস করে সিংহভাগ টাকা আত্মসাতে পায়তারা করছে। কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্র জানায়; বাঘগুজারা রাবার ড্যাম মেরামতের জন্য প্রায় ৩ কোটি টাকার চাহিদা পত্র পাঠানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট একটি সুত্র দাবী করেছে; বাঘগুজারায় মাটির বাঁধ দু’টি নির্মাণে ১৮ থেকে ২০লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। রাবার ড্যাম মেরামতের জন্য মেস্ত্রি খরচ ও মালামাল ক্রয়ে ৬৫ লাখ থেকে ৭০ লাখ টাকা ব্যয় হতে পারে। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা যোগসাজস করে প্রায় ৩ কোটি চাহিদা পত্র পাঠিয়ে কোটি টাকা আত্মসাতের পায়তারা করছে।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকোশলী মোঃ সাবিবুর রহমান জানান, পালাকাটা ও বাঘগুজারা রাবার ড্যামের মেরামতের কাজগুলো স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যান নিজের পছন্দের লোক দিয়েই করেছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাও তদারকি করেছেন। তা ছাড়া সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন তদন্ত ঠিম ইতোমধ্যে তিনবার তদন্ত করে গেছেন। দুর্নীতি হওয়ার কোন আশংকা নেই বলে তিনি দাবী করেছেন।

পাঠকের মতামত: