ঢাকা,রোববার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

চকরিয়ার ত্রাস লম্বা ফরিদের অত্যাচারে অতিষ্ট এলাকাবাসী

মুকুল কান্তি দাশ, চকরিয়া :

কক্সবাজারের চকরিয়ার উপকূলীয় বদরখালীতে নৃসংশভাবে আওয়ামীলীগ নেতা নুরুল হুদাকে জবাই করে হত্যা মামলার রাজস্বাক্ষী মো. সোহায়েতকে (২৪) কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়েছে। গত রবিবার রাতে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের মগনামা পাড়ান নুরুল হুদা হত্যা মামলার প্রধান আসামী মো. ফরিদ ওরফে লম্বা ফরিদের নেতৃত্বে সশস্ত্র দুর্বৃত্তরা নৃসংশতা চালায় সোহায়েত এর উপর। পরে স্থানীয় লোকজন মুমূর্ষ অবস্থায় গুরুতর আহত সোহায়েতকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। এসময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। গুরুতর আহত সোহায়েত ইউনিয়নের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের মগনামা পাড়ার নুরুল আজিজের পুত্র।

এদিকে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। রবিবার রাতে ঘটনার পর পরই হত্যা মামলার প্রধান আসামী লম্বা ফরিদকে গ্রেপ্তার দাবিতে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। এমনকি হামলায় জড়িতদের বাড়িঘরে হামলার প্রস্তুতিও নেয়। এই অবস্থায় বদরখালী ফাঁড়ির বিপুল সংখ্যক পুলিশ গিয়ে ক্ষুদ্ধ লোকজনকে শান্ত করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

এলাকাবাসী জানান, মগনামা পাড়ার নুর আহমদের ছেলে মো. ফরিদ ওরফে লম্বা ফরিদ একজন দুর্ধর্ষ ডাকাত সর্দার। তার নেতৃত্বে রয়েছে একটি বিশাল বাহিনী। এই বাহিনী সদস্যদের নিয়ে এলাকায় খুন, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, অপহরণ, গণধর্ষণসহ এমন কোন অপকর্ম নেই ফরিদ করেনি। তার বিরুদ্ধে এসব অপরাধে অন্তত দুই ডজন মামলা রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার সচেতন লোকজন জানান, লম্বা ফরিদ খুবই দুর্ধর্ষ প্রকৃতির সন্ত্রাসী। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও জায়গার বিরোধ নিয়ে ২০১৬ সালের ৩০ জুন (রমজান মাস) রাতে আপন বড় ভাই আওয়ামীলীগ নেতা নুরুল হুদাকে বদরখালী বাজার থেকে সদলবলে সিএনজি অটোরিক্সায় তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গিয়ে নৃসংশভাবে জবাই করে হত্যা করে। এর পর সে পলাতক হয়ে পড়ে। এমনকি আইন-শৃক্সক্ষলা বাহিনীর চোখ এড়িয়ে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার প্রাক্কালে ঢাকার বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু উচ্চ আদালত থেকে কয়েকমাস পর জামিনে বেরিয়ে এসে ফের জড়িয়ে পড়ে অপরাধ কর্মকা-ে। এরইমধ্যে ডাকাতি, চাঁদাবাজি, অপহরণ, ধর্ষণসহ আরো অসংখ্য অপরাধের জন্ম দেয় দুর্ধর্ষ লম্বা ফরিদ। সর্বশেষ রবিবার রাতে নৃসংশভাবে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা চালানো হয় আওয়ামীলীগ নেতা নুরুল হুদা হত্যা মামলার চার নম্বর স্বাক্ষী সোহায়েতকে।

এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার ওসি মো. বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘আওয়ামীলীগ নেতা নুরুল হুদা হত্যা মামলার প্রধান আসামী ও উপকূলীয় বদরখালীর ত্রাস লম্বা ফরিদের নেতৃত্বে স্বাক্ষী সোহায়েতের ওপর হামলার ঘটনাটি শুনেছি। তবে এখনো পর্যন্ত এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা নেওয়া হবে।’ ##

পাঠকের মতামত: