ঢাকা,বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪

মাঠে আগাম বার্তা নতুন লবনের

কুতুবদিয়ায় গর্তে ১০ লক্ষ মণ পুরাতন লবন,লোকসানের শংকা চাষীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক :
কুতুবদিয়ায় ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে লবন উৎপাদন মওসুমে মাঠে চাষিরা নতুন লবন তুলতে শুরু করেছে । ক্রমেই আগাম লবন উৎপাদনে চাষিরা মাঠে নামছে। নভেম্বরের মাঝামাঝিতে লবন মাঠ তৈরিতে চাষিরা মাঠে নেমে থাকে। তবে চলতি লবন উৎপাদন মওসুমে অক্টোবরে ১৫ তারিখেই নেমেছে মাঠে। ফলে ইতিমধ্যে লবন মাঠে নতুন লবন উঠতে শুরু করেছে । মাসের শুরুতেই গত ৪ তারিখে লবন তুলছে বলে উপজেলার লেমশীখালীতে নিজ মাঠের চাষি রবিউল হোসেন জানান।
উপজেলার লেমশীখালী, কৈয়ারবিল, উত্তর ধুরুং, দক্ষিণ ধুরুং ইউনিয়নে লবন চাষ বেশি হয়ে থাকে। আলী আকবর ডেইল ও বড়ঘোপ ইউনিয়নেও কিছুটা চাষ হয়। চলতি লবন মওসুমে উপজেলায়  সাড়ে ৬ হাজার একরের বেশি জমিতে লবন উৎপাদন হচ্ছে বলে স্থানীয় বিসিক সূত্র জানিয়েছে। উপজেলায় শতাধিক লবন ব্যবসায়ি রয়েছেন।  এছাড়া লবন উৎপাদন ছাড়াও শ্রমিক, পরিবহণ, কার্গো বোটে লবন লোড সবই চাষিদের খরচ থেকে কেটে নেয়া হয়। গত বছর বেশ কয়েকবার লবনের দরপতন হয়। বৈরি আবহাওয়া, বৃষ্টি নানা কারণেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চাষিরা। লবনের দাম বৃদ্ধি ও বাহির থেকে লবন আমদানি হবেনা-এমন আশ্বাসে চাষিরা পুরোদমে লবন মাঠ তৈরি ও কাজে ব্যস্ত এখন।
পশ্চিম লেমশীখালী আলী আকবর সিকদার পাড়া মাঠের লবন চাষি নেজাম উদ্দিন বলেন, কার্তিক মাসের প্রথমেই মাঠ তৈরি করছেন। মাত্র ১৭ দিনেই তিনি লবন পেয়েছেন মাঠে। ইতিমধ্যে ৬০ মণ লবন তিনি বিক্রি করেছেন প্রতিমণ ২৫০ টাকা দরে। অথচ পুরাতন লবনের দাম এখন ৩২৫ টাকা মণ। তিনি আরো বলেন, লবন মাঠের শ্রমিমের মূল্য অনেক বেশি। প্রতিদিন  ১জন শ্রমিককে দিতে হচ্ছে ১২০০ টাকা। অনেকে পুরো মওসুমের জন্য (৭ মাস) ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা। পলিথিন, জমির লাগিয়ত মূল্য,কীটনাশক প্রভৃতি মিলে খরচ অনেক বেশি এবার।  কিন্তু মাঠে লবনের দাম নেই। ভাল উৎপাদন হলে প্রতি একরে ৭০০ মণ লবন উঠতে পারে।

লবন ব্যবসায়ি আব্দুর রহিম বলেন, শতাধিক লবন ব্যবসায়ির প্রায় গড়ে ১০ লক্ষ মণ পুরাতন লবন বেশি দামে ক্রয় করে গর্তে মজুদ রাখা আছে। যার মূল্য ছিল মণপ্রতি ৪০০ টাকা। এখন পুরাতন লবনের দাম ৩২৫ টাকা। যে কারণে অনেক চাষি ও ব্যবসায়ির প্রচুর লবন মাঠেই পড়ে আছে। ইতিমধ্যে নতুন লবন উঠতে শুরু করেছে। নতুন লবন মানে হালকা থাকে। দামও কম। চলতি মওসুমে দাম নির্ধারিত না হলেও মাঠ পর্যায়ে প্রতিমণ ২৫০ টাকা চলছে।  নারায়নগঞ্জ,খুলনা, চট্টগ্রামের  লবন মিলগুলোর ওপর চাহিদা অনুযায়ি চাষিরা ন্যায্য দাম পাবেন বলে তিনি মনে করেন।

স্থানীয় লেমশীখালী বিসিক এর দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা জাকের হোছাইন বলেন, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের জন্য উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা এখনো নির্ধারিত হয়নি। নতুন করে জমির পরিমাণও জরীপ হয়নি। অন্তত ৬ হাজার ৬‘শ একর জমিতে লবন উৎপাদন হতে পারে বলে জানান তিনি।  এছাড়া বিসিকের নিজস্ব লবন মাঠ প্রান্তিক চাষিদের মাঝে একসনা লাগিয়ত বন্টন করার প্রক্রিয়া এখনো শুরু হয়নি।

পাঠকের মতামত: