নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিএনপির ভাইসচেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন বলেছেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির ভোটারবিহীন একতরফা নির্বাচনে গণতন্ত্র হত্যার মাধ্যমে আওয়ামী রাজনীতির অপমৃত্যু ঘটেছে। আওয়ামী লীগ এখন জনবিচ্ছিন্ন একটি দল। গণতন্ত্র রক্ষা দিবসের নামে তারা বিএনপির গণতন্ত্র হত্যা দিবসের কর্মসূচীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে লেলিয়ে দিয়ে প্রমাণ করেছে আগামী দিনে তারা বাংলাদেশে নিরপেক্ষ নির্বাচন চায় না।
শুক্রবার বিকালে কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্র অডিটরিয়মে জেলা বিএনপি আয়োজিত এক কর্মী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক অধ্যাপক আকতার চৌধুরী সঞ্চালনায় উক্ত কর্মী সভা অনুষ্ঠিত হয়।
দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পর্বতসম জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী ও তার দলের সাধারণ সম্পাদকসহ আওয়ামী লীগ নেতারা রাজনৈতিক শিষ্টাচার বিবর্জিত বক্তব্য দিয়ে ও কল্পনা প্রসূত অভিযোগ আনছে বলে উল্লেখ করে মীর নাসির বলেন, ‘দেশে এখন একদিকে আওয়ামী দুর্নীতির জোয়ার চলছে। অন্যদিকে বিএনপি ও বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, সারাদেশে মানুষ জানে আওয়ামী লীগের নেতারা দেশ থেকে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা পাচার করেছে। নিজেদেও অপকর্ম ঢাকতে বেগম খালেদা ও জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে কাল্পনিক অভিযোগ আনছে।
দেশ এখন ব্যাংক ডাকাতদের দখলে বলে উল্লেখ করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ নেতাদের ব্যাংক পরিচালক বানিয়েছে। তাদের হাতে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা লুটপাট চলছে।
সম্প্রতি বেগম জিয়ার ১৪টি মামলা বকসীবাজারের মাদ্রাসা মাঠে বিশেষ আদালতে স্থানান্তরের নিন্দা জানিয়ে মীর নাছির বলেন, বেগম খালেদা জিয়া অতীতে কেন স্বৈরশাসকের সাথে আপোষ করে রাজনীতি করেননি। ভবিষ্যতেও করবেন না। ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চের ষড়যন্ত্র ও ২০০৭ সালের ১/১১ এর ষড়যন্ত্র বিএনপি নিশ্চহ্ন করতে পারেননি। অতীতে যারা বিএনপির সাথে বেঈমানী করেছে তারাই ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া রাজপথের আন্দোলনের মাধ্যমে দল এবং দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে বিএনপিকে দেশের একটি বৃহত্তম রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রতিঘাত করেছে। একমাত্র বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশেই আগামী দিনে আন্দোলন ও নির্বাচনে জীবন বাজি রেখে বিজয় ছিনিয়ে আনতে হবে।
জেলা বিএনপির বিশাল এই কর্মীসভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম। বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় মৎস্যজীবি বিষয়ক সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য লুৎফর রহমান কাজল, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হারুন অর রশিদ।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি এটিএম নূরুল বশর চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক এড. শামীম আরা স্বপ্না, সহ-সভাপতি এড. নূরুল আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোবারক হোসেন ও আকতারুল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক জামিল ইব্রাহিম চৌধুরী, উপদেষ্টা পরিষদের অধ্যাপক আবু তাহের, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা শ্রমিকদলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ মো. আলী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপাতি অধ্যাপক আজিজুর রহমান, সহ-সাংগঠনিক আতাউল্লাহ বোখারী, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জিসান উদ্দীন জিসান, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাসেদুল হক রাসেল, উখিয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সোলতান মাহমুদ চৌধুরী, চকরিয়া পৌর বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক অধ্যাপক ফখরুদ্দিন ফরাজী, রামু উপজেলা সাংগঠনিক সম্পাদক মেরাজ আহমদ চৌধুরী মাহিন, শাপলাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আমিনুল হক চৌধুরী, চকরিয়া পৌরসভার গিয়াস উদ্দীন, ডুলাহাজারা ইউনিয়ন সভাপতি অধ্যাপক ছাবের আহামদ, পূর্ববড়ভেওলা আহ্বায়ক আনোয়ারুল আরিফ দুলাল, ঝিংলজা ইউনিয়ন সভাপতি মুজিবুল হক মিয়াজী, ইসলাম পুর সভাপতি মঞ্জুর আলম, মহিলাদল নেত্রী সাবিনা ইয়াসমিন ঝিনু, খুনিয়াপালং সভাপতি ফরিদুল আলম প্রমুখ। সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলোয়াত করেন জেলা ছাত্রদলের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক আবদুল্লাহ খান। কর্মীসভাকে ঘিরে জেলা প্রতি ইউনিট থেকে বিপুল নেতাকর্মী সমবেত হন। সভাস্থলের আশেপাশে শহীদ জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও সালাহ উদ্দীন আহমদের শ্লোগন সম্বলিত ব্যানার-ফেস্টুন শোভা পায়। উৎসবমুখর পরিবেশে কর্মীসভা সম্পন্ন হয়।
এর আগে সকাল ১০টায় নবগঠিত জেলা বিএনপির নির্বাহী কমিটির প্রথম সভা সাংস্কৃতি কেন্দ্র কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় মৎস্যজীবি বিষয়ক সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য লুৎফর রহমান কাজল। দুই অনুষ্ঠানের সার্বিক দেখভাল করেন জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক ইউসুফ বদরী।
পাঠকের মতামত: