কক্সবাজার প্রতিনিধি ::
মেয়ের বাপের অভিযোগ তার মেয়ের স্বামী তার মেয়ে ও নাতীকে মেরে গুম করে ফেলেছে । কিন্তু খুন হওয়া সেই মা মেয়েকে কক্সবাজার পিবিআই কর্তৃক জীবিত উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে।
জানা যায় , প্রায় এক বছর পূর্বে শিশু সন্তানসহ হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলা সেতারা বেগম (২২)ও তার কন্যা শিশু নুসরাত জাহান মিতু (০৬) কে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় চট্টগ্রাম শহরের পতেঙ্গা থানাধীন স্টীল মিল বাজারের সন্নিকটে টিএসপি গেইট এলাকার তার ভাড়া বাসা থেকে পুলিশ পিবিআই, কক্সবাজার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আবদুল্লাহ-আল্-মামুন এর সার্বিক তত্ত্বাবধান ও নির্দেশনায় এসআই জিয়ার নেতৃত্বে পুলিশ বু্রাে অব ইনভেষ্টিগেশন (পিবিআই) এর একটি টিম চট্টমেট্রো অঞ্চলের সহায়তায় ০৩ দিন ধরে অভিযান পরিচালনা করে গত ০১/০৬/২০১৮ ইং তারিখ দুপুর আনুমানিক ০১:০০ টার সময় উদ্ধার করে। উদ্ধার করাকালীন সময়ে নিখোঁজ সেতারা বেগম আত্মপরিচয় গোপন রেখে টিএসপি গেইট এলাকায় জনৈক জামালের টিন শেড ভাড়া বাড়িতে তার ছয় বছর বয়সী কন্যা শিশু নুসরাত জাহান মিতুকে নিয়ে দীর্ঘ ০৮(আট)মাস ধরে ভাড়াটিয়া হিসাবে বসবাস করে আসছিল।সেখানে সে কর্ণফুলী ইপিজেড এলাকায় রপ্তানীমূখী বিদেশী মালিনাকানাধীন জিপি-বাংলা গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীতে প্রায় ০৯(নয়) মাস ধরে হেলপার হিসাবে কাজ করে আসছিল। ইতিপূর্বে সে আগ্রাবাদ চৌমুহনী এলাকায় প্রায় ০৩ (তিন) মাস ধরে রিজিয়া এ্যাপারেল্স গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীতে চাকরি করত এবং চৌমূহনী খান বাড়ী এলাকায় জনৈক রাশেদের ভাড়া বাসায় তার কন্যাকে নিয়ে বসবাস করত।
জানা যায়, কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানাধীন বড়ইতলী ইউনিয়নের ভিলেজার পাড়া গ্রামের নবী হোছন বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, কক্সবাজারে গত ০১/০৪/২০১৮ ইং তারিখ একটি অভিযোগ দায়ের করেন। মামলার বাদী অভিযোগ করেন গত ২২/০৭/২০১১ ইং তারিখ ১,০০,০০০/-(এক লক্ষ) টাকা মোহরানা ধার্য্যে কাবিননামা মূলে একই ইউনিয়নের রফিকুল ইসলামের সাথে তার কন্যার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবীতে স্বামী রফিকুল ইসলাম ও তার পরিবারের লোকজন প্রায় সময় নির্যাতন করে আসছিল। গত ০৫/০৫/২০১৭ ইং তারিখ ব্যবসার জন্য নবী হোছনের কাছ থেকে তার মেয়েকে ১,০০,০০০/-(এক লক্ষ) টাকা এনে দিতে বললে বাদীর মেয়ে সেতারা বেগম অস্বীকৃতি জানালে মামলার বিবাদী রফিকুল ইসলাম ও তার ভাইয়েরা ক্ষিপ্ত হয়ে বাদীর মেয়েকে তার শিশু কন্যাসহ হত্যা করে লাশ গুম করেছে।
বিজ্ঞ ট্রাইব্যুনাল মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশ বু্রাে অব ইনভেষ্টিগেশন (পিবিআই) কক্সবাজার জেলাকে নির্দেশ প্রদান করেন। পিবিআই মামলার ঘটনার রহস্য উদঘাটনের জন্য তদন্ত শুরু করে। তদন্তকালে বিবাদীদেরকে মিথ্যা হত্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানী করার জন্য এই মামলা করেছে মর্মে পিবিআই এর নিকট প্রতীয়মান হওয়ায় বিশ্বস্ত সোর্স ও তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার করে পিবিআই মামলার ভিকটিম সেতারা বেগম ও তার কন্যা শিশু নুসরাত জাহান মিতুকে উদ্ধারে অভিযানে নামে এবং এক পর্যায়ে তাদেরকে উদ্ধারে সমর্থ হয়।
এদিকে সেতারা বেগম বলেন তার স্বামী তাকে নির্যাতনের কারনে ঘর থেকে পালিয়ে গেছেন। সেতারা বেগম এর বাবা মামলা করেছে তা জানে কিনা জানতে চাইলে সে জানেনা বলে জানান প্রতিবেদককে । এদিকে পুলিশ বু্রাে অব ইনভেষ্টিগেশন (পিবিআই) এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মামুন জানান সেতারা বেগম এর সাথে তার বাবার নিয়মিত যোগাযোগ হতো তা মোবাইল নেটওয়ারকিং এর মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মামুন আরো বলেন আগামী কাল তাদের আদালতে প্রেরন করা হবে।
পাঠকের মতামত: