সেলিম উদ্দিন, ঈদগাঁও, কক্সবাজার প্রতিনিধি, চকরিয়া উপজেলার খুটাখালীতে সাদা দানাদার পরিপক্ষ লবণ উৎপাদন শীর্ষক দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ সম্পন হয়েছে। মঙলবার (১০ এপ্রিল) দুপুরে ডুলা-ফলিছড়ি লবণ কেন্দ্রে অনুষ্টিত প্রশিক্ষণে সভাপতিত্ব করেন তমিজিয়া ডিগ্রি মাদরাসার অধ্যক্ষ মু. ওমর হামজা। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন বিসিক এর আয়োজনে টেকনিক্যাল অ্যাসিসটেন্স টু বিসিক কম্পোনেন্ট প্রিজম প্রোগ্রাম ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আর্থিক সহযোগিতায় ও লবণ শিল্পের উন্নয়ন কার্যালয় বিসিক কক্সবাজারস্থ কর্মকর্তা মো: ইদ্রিসের পরিচালনায় শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন ডা. মীর আহমদ হেলালী।
ডুলা-ফলিছড়ি লবণ কেন্দ্র ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রনজিব বড়–য়ার স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে আমন্ত্রিত প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিসিক কক্সবাজার উপ মহাব্যবস্থাপক দিলদার আহমদ চৌধুরী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রিজম প্রোগ্রাম ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ডেপুটি ম্যানেজার সুপ্রিয় ভট্রচার্য। চাষী ও ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক সেলিম উদ্দীন।
লবণ শিল্পের উন্নয়ন কার্যালয় বিসিক কক্সবাজারস্থ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা বিশিষ্ট লবণ গবেষক মো: শামিম আলম প্রশিক্ষনে লবণ চাষী ব্যবসায়ী ও উদ্দোক্তাদের সাদা দানাদার পরিপক্ষ লবণ উৎপাদন বিষয়ে দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, বিসিক কর্তৃক উদ্ভাবিত পলিথিন পদ্ধতির লবণ উৎপাদন করতে হলে বিসিক লবণ প্রদর্শনী কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রদর্শিত পদ্ধতিতে সাদা দানাদার ও পরিপক্ষ লবণ উৎপাদন করা সম্ভব। তাহলে লবণের গুনগতমান উন্নয়নের মাধ্যমে চাষীরা আর্থিকভাবে লাভবান হবে।
বিসিক কক্সবাজার উপ মহাব্যবস্থাপক দিলদার আহমদ চৌধুরী বলেন, বিগত ২০১৬-১৭ সালের মৌসুমে লবণ উৎপাদন এলাকায় আবহওয়া অনুকুলে না থাকায় ১৮ লক্ষ মে:টন লবনের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ১৩.৬৪ লক্ষ মে:টন লবণ উৎপাদন করা হয়েছে। যার কারণে লবণের চাহিদা মেটানো সম্ভব হয়নি। চলতি ২০১৭-১৮ লবণ মৌসুমে লবণ উৎপাদনে সয়ংসম্পুর্ণতা কিভাবে অর্জন করা যায় এবং বিদেশ হতে লবণ আমদানী না করতে এ বছর নুন্যতম ৬৫ হাজার একর জমিতে ১৮ লক্ষ মে:টন লবণ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে। আবহাওয়া লবণ উৎপাদনের অনুকূলে থাকলে এ লক্ষ্যমাত্র অর্জন সম্ভব হবে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, কালো লবণ উৎপাদনে লবণ মাঠ ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। লবণের সাথে মিশ্রিত কাদা দ্বারা মিল এলাকার নদ নদী ভরাট হয়ে যাচ্ছে। যা পরিবেশের উপর বিরুপ প্রভাব ফেলছে। কালো লবণে মাটি বালি ও শামুকের কনা সহ ক্ষতিকর পদার্থ মিশ্রিত থাকায় মানসম্মত আয়োডিন যুক্ত লবণ তৈরী করা সম্ভব নয় বিধায় লবণ মিলাররা কালো লবণ ক্রয় করেনা। কাজেই পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য বিসিকের পরামর্শক্রমে বিসিক উদ্ভাবিত পলিথিন পদ্ধতিতে মানসম্মত সাদা দানাদার ও পরিপক্ষ লবণ উৎপাদনের মাধ্যমে দেশের লবণ চাহিদা পুরণ করে লবণ আমদানী বন্ধ করার জন্য লবণ চাষী, ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের তিনি আহ্বান জানান। প্রশিক্ষণে প্রায় অর্ধশতাধিক লবণ চাষী ব্যবসায়ী উদ্দোক্তাসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
পাঠকের মতামত: